অপরাধ ডেস্কঃ আজমিরীগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে চলছে সাইনবোর্ডবিহীন কোচিং বাণিজ্য। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে। ব্যাঙ্গের ছাতার মত গড়ে উঠা কোচিং সেন্টারগুলো অচিরেই বন্ধ করা সহ জড়িত শিক্ষকদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সচেতন অভিবাবকমহল।
জানা যায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কণ্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলে মেয়েরা যেন সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রকৃত সোনারবাংলা গড়ে তোলতে পারে। এ জন্য শিক্ষাকে সাধারণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু কিছু সংখ্যক লোভী ও অসাধুচক্র কারণে শিক্ষার মত একটি পবিত্র বিষয়কে বাণিজ্যে পরিণত করে, নিজেদের আখের গোছাতে সর্বদা ব্যস্ত রয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায়,
প্রাণঘাতী করোনা মহামারীর কারণে যখন সারাদেশের মত স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ বন্ধ ঠিক তখনই একদল লোভী ও অসাধু শিক্ষক মেতে উঠেছেন কোচিং বাণিজ্যে। ওই অসাধুচক্রের শিক্ষকরা আজমিরীগঞ্জ পৌর সদরের বেশ’কটি স্হানে গড়ে তুলেছেন, সাইনবোর্ডবিহীন কোচিং বাণিজ্য সেন্টার। স্বাস্থ্য বিধি, সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব এ ছাড়া সরকারী নীতি- নিয়ম অমান্য করে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ব্যাচ আকারে চালিয়ে যাচ্ছেন ওই বাণিজ্য। প্রতিটি ব্যাচে রয়েছে ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী। বেতন নেওয়া হচ্ছে জনপ্রতি মাসিক ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা বা তারও বেশি।
ওই শিক্ষকদের নিকট প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতায় নম্বর কম দেয়া হয় বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের রোল নম্বর পিছিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আজমিরীগঞ্জ মেডিল্যাব হাসপাতালের পিছনে, পুকুর পাড় গ্রামে, বাজারের একটি কাপড়ের দোকানের পেছনে, এ ছাড়াও কয়েকটি স্হানে রয়েছে বাণিজ্যিক কোচিং সেন্টার।
কোচিং বাণিজ্য করে সুকৌশলে বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন জড়িত শিক্ষকরা । করোনাকালীন সময়ে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ৮টা, দুপুর ২ টা থেকে বিকাল ৩ টা ও সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ব্যাচ আকারে চলছে ওই প্রাইভেট বাণিজ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা প্রাইভেট না পড়লে আমাদের রোল নম্বর অনেক পেছনে চলে যাবে। তবে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে কেউ-ই রাজি নয়।
উল্লেখ্য কোচিং বা প্রাইভেট বাণিজ্য বন্ধে সরকারী নীতিমালা রয়েছে।
এতে বলা আছে, শিক্ষকরা নিজ বাসভবনে বা কোন বাণিজ্যিক কোচিং সেন্টারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না। এমনকি তারা ক্লাসরুম বা অতিরিক্ত ক্লাসের বাইরে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং বা প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। তবে অন্য প্রতিষ্ঠানের অনধিক দশজনকে কোচিং করাতে পারবেন।শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কোচিং এ ভর্তি হতে উৎসাহিত করতে পারবেন না। নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করালে তার এমপিও বাতিলসহ বিভাগীয় অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে। ওই নীতিমালা জারি করার পর কিছুদিন যাবৎ অসাধু শিক্ষকরা এ থেকে বিরত ছিল। পর কিছু দিনের মাঝেই গড়ে তোলেন সেন্টার ও শুরু করেন কোচিং বাণিজ্য। তারা সরকারি নীতিমালা প্রতিপালন না করে, এমনকি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চালিয়ে যাচ্ছেন এ কোচিং বাণিজ্য। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নির্বিকার। অচিরেই ব্যাঙ্গের ছাতার মত গড়ে উঠা কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ করে জড়িত শিক্ষকদের আইনের আওতায় আনার দাবি অভিবাবকমহলের।