কলাপাড়ার আক্কাস খন্দকার জীবন যুদ্ধে বাঁচার প্রানপন চেষ্টা ॥

প্রকাশিত: ৫:৩৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০২১

রাসেল কবির মুরাদ , পটুয়াখালী প্রতিনিধি ঃ কলাপাডার আক্কাস আলী
খন্দকার ছোট বালিযাতলী গ্রামের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। কোনরকম
খেয়ে-পড়ে চলছিল তাদের সংসার। দিনমজুর পিতা আবদুর রাজ্জাক খন্দকার বরিশালে
দিনমজুরের কাজ করতে গিয়ে কারেন্ট এক্সিডেন্ট হলে তার ডান হাতের অর্ধেকটা
কেটে ফেলতে হয। একমাত্র উপার্জনক্ষম পিতা পঙ্গু হয়ে পড়লে সংসারের দায়িত্ব
কিছুটা হলেও আক্কাসের উপর পড়ে। যে কারণে বেশিদূর লেখাপড়া করতে পারেনি
সে। ঢাকার মিরপুরে আযম মিস্ত্রি’র অধীনে ড্রেজারে কাজ করতে যান তিনি।
২০১৮ সালে বালুর ড্রেজার থেকে পড়ে মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে যায আক্কাসের।
এরপর ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স’র চিকিৎসক বদরুল ইসলামের অধীনে
অপারেশন হয় তার।

মাসখানেক পর ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি বলেন, স্পাইনাল কড ফ্যাক্সার
হয়েছে। আবার ২ মাস পরে গেলে বলেন, ৬ মাস পরে ঠিক হয়ে যাবে। উপযুক্ত
চিকিৎসা না করাতে পেরে আক্কাস বর্তমানে বিছানা থেকে উঠতে পারেনা। তার পা
দুটো ধীরে ধীরে চিকন হয়ে যাচ্ছে। শরীরের সকল অঙ্গ অবশ হয়ে যাচ্ছে।
সারাক্ষণ শুয়ে থাকতে হয তাকে। প্রাকৃতিক বেগ পর্যন্ত সে বলতে পারে না।
সারাক্ষণ ক্যাথেটর পড়িয়ে রাখা হয়েছে তাকে। মাসের পর মাস হাসপাতালে থেকে
সহায-সম্বল যা ছিল সব হারিয়ে এখন নি:স্ব প্রায তার পরিবার। ইতিমধ্যেই
ডাক্তার, কবিরাজ, ফকির মিলিয়ে সাত লক্ষাধিক টাকা খরচ করেছেন তার
চিকিৎসায়।

স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গাজী মো: জামাল জানান, ছেলেটির
আহাজারি দেখে চোখের পানি ধরে রাখা যায়না। তিনি আরও বলেন, ব্যংক একাউন্ট
এবং মোবাইলে বিকাশ করে দিয়েছি। সকলের কাছে অনুরোধ ছেলেটিকে যথাসম্ভব
সাহায্য করবেন।

আক্কাস খন্দকারের পিতা রাজ্জাক খন্দকার বলেন, চোখের সামনে আমার ছেলে বিনা
চিকিৎসায় মারা যাবে মানতে কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, আমিও পঙ্গু মানুষ কাজ
করতে কষ্ট হয়। দুনিয়ায় এমন কোন মানুষ নেই, যে আমার ছেলেটির চিকিৎসার
ব্যাবস্থা করে দিবে।

অসুস্থ আক্কাস আলী খন্দকার বলেন, আমার খুব বাঁচাতে ইচ্ছে করছে। ডা:
বলেছেন পুনরায় স্পিন অপারেশন করতে পারলে আবার আমি হাটতে পারব। কিন্তু এর
জন্য প্রায় নয় লক্ষ টাকার প্রয়োজন যা জোগাড় করা আমার পক্ষে অসম্ভব। তিনি
বিত্তবানসহ সব শ্রেণীর মানুষের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। তিনি আরও
বলেন, এলাকার কিছু মানুষ আমার সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। তারা জনতা ব্যাংক,
কলাপাড়া শাখায় একাউন্ট খুলে দিয়েছেন। যার হিসাব নম্বর ০১০০২২২৪৮৫২৩৬ এবং
বিকাশ নম্বর ০১৭৮৯৮০৭৭৩৬।

কলাপাড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আবু হাসানাত মো: শহিদুল হক বলেন,
আক্কাসের অসুস্থতার কথা শুনেছি। তার চিকিৎসায় উপজেলা প্রশাসন যথাসম্ভব
সাহায্য করেছে। তিনি মানবিক কারণে আক্কাসের পাশে থাকার জন্য সকলকে অনুরোধ
করেন।




error: Content is protected !!