আলী আজীম,মোংলা থেকেঃ
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তরমুজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান ও জরিমান হলেও একেবারে ভিন্ন চিত্র মোংলা বন্দরের। প্রশাসনের এমন উদাসীনতায় এখানকার তরমুজ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের পোয়া বারো। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার জানান খুব শিগগিরই তরমুজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবেন তিনি।
এদিকে তরমুজের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। পাইকারি ব্যবসায়ী মোঃ বাবুল বলেন, পটুয়াখালীর গলাচিপা এবং খুলনার বাজুয়া থেকে তারা ১৬০ টাকা পিচ দরে তরমুজ ক্রয় করেন। এরপর মোংলা বন্দরের খুচরা ব্যাবসায়ীদের কাছে তা ১৮০ টাকা পিচ দরে বিক্রি করেন। এইভাবে তিনি এই মৌসুমে এ পর্যন্ত ১৬ টাকার তরমুজ বিক্রি করেন বলেও জানান তিনি।
তবে পাইকারি ব্যবসায়ী বাবুল মিথ্যা বলেছেন দাবি করে তরমুজের খুচরা ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, ‘ আমরা ১২০০ টাকা দরে একমন তরমুজ কিনে তা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। একইরমক বক্তব্য দেন অন্য দুই খুচরা ব্যবসায়ী শুশান্তশীল ও শাহাবুদ্দিন। তারা বলেন ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরেও মন কিনতে হয় তরমুজের। এই পাইকারি ব্যবসায়ীরা একটা বড় সিন্ডিকেট। এই দলে আছেন বাবুল, বাচ্চু, মোয়াজ্জেম, মাসুম, শামিম, মোশারেফ, ইব্রাহিম, শাহ আলম ও সিরাজ।
এরাই মূলত বন্দর শহরের যে কোন মৌসুমী ফল সিন্ডিকেট করে বিক্রি করেন বলেও অভিযোগ তাদের।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে তারা বলেন, সিন্ডিকেট নয় একসাথে মিলেমিশে ব্যবসা করেন তারা।
সাধারণ ক্রেতা শাজাহান সিদ্দিকি, তৌহিদুল ইসলাম বলেন সারাদিন রোজা রেখে ইফতারিতে একটু তরমুজ না হলে হয়না। তাই প্রতিদিনই তাদের বেশি দামে তরমুজ কিনে খেতে হচ্ছে উপায় নাই। প্রশাসন এ ক্ষেত্রে একটু ব্যবস্থা নিলে তারা সঠিক দামে তরমুজ কিনতে পারত তারা।
মোংলা উপজেলা বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক নুর আলম শেখ বলেন, ‘কৃষি বিপনন ২০১৮ আইন অনুযায়ী তরমুজ কেজিতে সর্বোচ্চ তিন থেকে পাঁচ টাকা লাভ করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এখানে সেটা হচ্ছেনা, পিচ হিসেবে তরমুজ কিনে ক্রেতাদের কাছে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। এটা সুস্পষ্ট প্রতারণা। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় প্রতিনিয়তই সাধারণ ক্রেতারা এই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন’।
বাজার মনিটরিং এর সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, তরমুজ ব্যবসায়ীদের আজ (শুক্রবার) বিকেলে ডেকেছি, সেখানে তাদের নিয়মনীতি বলে দেয়া হবে। এই নীতি না মানলে তারপর থেকে কঠোর অভিযান চালানো হবে।