নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংকট। আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৪০ জন,মৃত্যু ৩৫
মোঃ ইব্রাহিম নোয়াখালী প্রতিনিধি।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।জেলায় ১৫ দিনের লকডাউনে চলছে ঢিলেঢালাভাবে।
কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের বেশিরভাগ রোগীই চিকিৎসা নিচ্ছেন ভুলু স্টেডিয়ামে স্থাপিত কোভিড-১৯ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে।রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়তে থাকলেও এ দুই হাসপাতালে দেখা দিয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার ঘাটতি।পাশাপাশি এখানে নেই কোনো কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা।বিশেষজ্ঞরা বলছেন,এ অবস্থায় যদি কোনো জটিল রোগী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন।তবে সেক্ষেত্রে অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়বে চিকিৎসা দেওয়া।
জেলার অধিকাংশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা ভুলু স্টেডিয়ামে স্থাপিত কোভিড-১৯ অস্থায়ী হাসপাতালে দেয়া হয়।কিন্তু সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকায় এখানে রোগীদের অনেক সময়েই সময় মতো সেবা দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানা যায়।ভুলু স্টেডিয়ামে স্থাপিত কোভিড-১৯ হাসপাতালে ৪২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে চলছে চিকিৎসা,যেখানে অন্তত ১৫০টি সিলিন্ডার প্রয়োজন।এখানে ৮০টি শয্যায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ৫৪জন রোগী।এ হাসপাতালে সর্বমোট ১৪০ জন রোগী ভর্তি হয়ে সুস্থ হয়েছেন ৯১জন।এছাড়া নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৩০০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রস্তুত থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৬০টি। এখানে আইসোলেশনে ২০টি শয্যায় ১৩ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।তীব্র শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।
এ ব্যাপারে ভুলু স্টেডিয়ামে স্থাপিত কোভিড-১৯ হাসপাতালের কোঅর্ডিনেটর ডা. নিরুপম দাশ বলেন,শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বা স্যাচুরেশন ৯৩ শতাংশের নিচে নেমে গেলে প্রথমে অল্প মাত্রায় অক্সিজেন দিতে হয়।এতেও পরিস্থিতি উন্নতি না হলে অক্সিজেনের মাত্রা দ্বিগুণ করা হয়।আমাদের হাসপাতালে হাই-ফ্লোও সেন্ট্রাল অক্সিজেন দরকার হলেও নেই।সিলিন্ডারের অক্সিজেনে রোগীকে ভালো রাখার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাও ঠিকমতো পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন,আমাদের হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাদের জন্য অন্তত ৬০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন রয়েছে।অক্সিজেন সংকটের কারণে রোগীদের সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. ফরিদ উদ্দিন বলেন, আামাদের কখনো অক্সিজেন সিলিন্ডার সংকট হয় নাই।এখন এ পরিস্থিতিতে কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে।৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদাপত্র দিয়েছি।আশা করি এলে সংকট কেটে যাবে।অপরদিকে জেলায় নতুন করে আরও ২৬ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৪০ জন ও করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের।রোববার(১৪ জুন) সকাল সাড়ে ১১ টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোমিনুর রহমান।তিনি বলেন,গত ১১ ও ১২ই জুন তাদের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা জন্য আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) করোনা ল্যাবে পাঠানো হয়।পরে ১৩ই জুন রাতে তাদের রিপোর্ট আসলে তাতে করোনা পজিটিভ আসে।আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩২ জনকে মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে অস্থায়ী করোনা ভাইরাস হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ৯০৯ জন নিজ নিজ বাড়ীতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৬৪ জন।