মোঃ ইব্রাহিম,নোয়াখালী প্রতিনিধি।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচনের অভিযোগে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ এনডিসির নির্দেশে যুগ্ম সচিব অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার উন্নয়ন মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এই তদন্ত কাজ শুরু করেন। জানা গেছে, বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব আলম গত বছরের জুন মাসের ১০ তারিখে বেগমগঞ্জের ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন। এর থেকেই তিনি নানা অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরণসহ নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ কিরন। গত ১৮ মার্চ দুপুরে উপজেলা পরিষদেও হল রুমে এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য ইউএনওর বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতিরি চিত্র তুলে ধরেন। এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ডা. এবিএম জাফর উল্যাসহ উপজেলা, চৌমুহনী পৌর আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় জানানো হয়, ইউএনও মাহবুব আলম ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ৫ জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের থেকে নানা অজুহাতে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। উপজেলার ১৯৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমানের বায়োমেট্রিক মেশিন ৭ হাজার টাকার স্থলে ১৭ হাজার টাকা নিয়ে একটি আইটি অতিরিক্ত টাকা আত্মসাৎ করেন। হাটবাজার ও জলাশয়ের ইজারার টাকা তার সিএ-এর যোগসাজশে সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে ৫ হাজার টাকা এবং এসএসসি/দাখিল, জেএসসি/জেডিসি, পিএসসি/এবতেদায়ী পরীক্ষার প্রতিটি কেন্দ্র থেকে বাধ্যতামূলক ১৫ হাজার টাকা করে উৎকোচ গ্রহণ করেন। গৃহহীনদের জন্য সরকারি অর্থে গৃহ নির্মাণে অনিয়মসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে শিগগিরই তাকে বদলি ও দুর্নীতির বিচার দাবি করা হয়। এছাড়াও ওই সময় ইউএনও মাহবুব আলমের অপসারনের দাবীতে তার বিরুদ্ধে উপজেলা চত্বরে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ইউএনও মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে এমপি মামুনুর রশিদ কিরণ ঘুষ, দূর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকান্ডের বিষয়টি জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ দেন। এর পেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তের জন্য মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয় বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ এনডিসিকে। এর পর গত ৭ জুলাই স্বাক্ষরিত এক পত্রে তিনি যুগ্ম সচিব অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার উন্নয়ন মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে তদন্তের নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে শনিবার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে এসে তদন্ত শুরু করেন। এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার উন্নয়ন মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মন্ত্রনালয়ের চিঠির আলোকে বিভাগীয় কমিশনার স্যারের নির্দেশে আমি তদন্ত করছি। গতকাল শুনানি করেছি। সহসায় তদন্ত রিপোর্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিবো।