প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন. কুষ্টিয়া কাঞ্চনপুর ইউপি নির্বাচনে ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নৌকার ক্যাম্পে অগ্নি সংযোগ
কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নে
দীর্ঘ ২০বছর পর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে বাড়ছে সহিংসতা এমনকি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কাও করা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে প্রতিদিনই কোন না কোন অঘটন ঘটাচ্ছে বিদ্রোহী প্রার্থী তৎকালীন পিচ কমিটির সেক্রেটারি এদবার রহমান বিশ্বাসের ছেলে ও বিএনপি নেতা আনিসুর রহমান ঝন্টুর সমর্থকরা। শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার সময় রাতুল পাড়ার নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয় বিদ্রোহী প্রার্থী ঝন্টুর সমর্থকরা।
এবারের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি একরামুল হক নৌকার টিকিট হাতে পেয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন। আগামী ২নভেম্বর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিদিনই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা পথসভা করে যাচ্ছেন।
এরই মাঝে গত কয়েকদিন আগে জোতপাড়ার কয়েকটি পরিবারকে প্রাণ নাসের হুমকিও দিয়েছেন ঝন্টু সমর্থিত ব্যক্তিবর্গরা। তারপর শুক্রবার ভোর রাতে নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ ঘটায়।
আগে জানতে হবে এই আনিসুর রহমান ঝন্টুর উথ্যান হলো কিভাবে? জামাত-বিএনপির মদন দাতা পৃষ্ঠপোষক ও পিচ কমিটির সেক্রেটারি ছেলে ও হাইব্রিড নেতা আনিসুর রহমান ঝন্টু। কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের একাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মুখ থেকে জানা যায়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই আনিসুর রহমান ঝন্টুর পিতা মরহুম একবার রহমান বিশ্বাস (সাবেক চেয়ারম্যান) এর রাতুল পাড়া গ্রামের তার নিজ বাড়িতে গঠিত হয়েছিল পিচ কমিটি। উক্ত কমিটিতে তার পিতা রহমান ছিলেন সেক্রেটারি। তার বাড়িতে বসে পিচ কমিটির সকল কার্যক্রম চলতো।
আজ তারই ছেলে জামাত-বিএনপির মদদ দাতা পৃষ্ঠপোষক ও পিস কমিটির সেক্রেটারির ছেলে হাইব্রিড নেতা আনিসুর রহমান ঝন্টু কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সাংগঠনিক পদ হাঁকিয়ে নিয়ে দলীয় প্রতীকের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে নৌকা প্রতীক প্রদান না করায় তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে দাঁড়িয়েছেন।
৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পিচ কমিটির সেক্রেটারির ছেলে রাজাকার কমান্ডার মরহুম বকুল সওদাগর, রাজাকার কমান্ডার আজিবর উকিল, সাবেক এমপি চন্টুর খালাতো ভাই এই ঝন্টু। জামাত-বিএনপির মদদাতা ও হাইব্রিড নেতা ২০১৫ সালের দিকে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার সাথে আতাত করে আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চেপে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের প্রতিটা গ্রাম তছনছ করে ফেলে। দলাদলি, মারামারি, খুন খারাবি, হামলা, মামলা থেকে শুরু করে নেক্বার জনক ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন যা প্রশাসনের নজরদারিতে এখনো আছেন তিনি। তার এই হামলা মামলার শিকার হয় বালিয়াপাড়া গ্রামের একাধিক মানুষ। এমনকি নিজেই বোমা ফাটিয়ে নিজের শরীরে আঘাতে চিহ্ন দেখিয়ে মামলা করেন বালিয়াপাড়া গ্রামবাসীর নিরীহ মানুষদের উপর। এমনকি তার হামলায় প্রাণ চলে যায় সাবেক চেয়ারম্যান শওকত আকবর চেয়ারম্যানের।
আজ তিনি নৌকা প্রতীক বঞ্চিত এক বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়ে ভোটের আগেই হুমকি ধামকি অগ্নিসংযোগ দিয়ে চলেছেন। গোপন সূত্রে জানা গেছে, তিনি যেভাবেই হোক চেয়ারম্যান পদ নেবেই। অগ্নিসংযোগের বিষয়টি নতুন কিছু নয় তার কাছে, এটা তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে করেই আসছেন।
অগ্নিসংযোগের বিষয়ে নৌকার পদপ্রার্থী একরামুল হকের কাছে কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শুক্রবার রাতুল পাড়ায় গ্রামে আমাদের নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্পে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পথসভায় কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা বক্তব্য রাখেন। পরবর্তীতে বালিয়াপাড়া গ্রামেও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই রাত্রেই বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মীরা রাতুল পাড়ায় অবস্থিত নির্বাচনী ক্যাম্পে অগ্নি সংযোগ ঘটায়। এ বিষয়ে তিনি কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানান।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ তরিকুল নামের একজন ব্যক্তি জানান, সুবিধাবাদী নেতা আনিসুর রহমান ঝন্টু ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে আইনের আওতায় আনা হোক। এরা গোটা জাতিকে কলঙ্কিত করছে। নৌকার অফিস পোড়ানোর অপরাধে।
রকি আহমেদ নামের একজন সচেতন নাগরিক বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আর আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থীর অফিস ভাঙা ও অগ্নিসংযোগের মত দুঃসাহস কোথায় পেল? পিস কমিটির সভাপতি ছেলে আনিসুর রহমান ঝন্টু সহ সকল সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানাচ্ছি এবং আমাদের প্রিয় নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি দ্রুত এসব হাইব্রিড আওয়ামীলীগদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।
নিপলু ফকির, নাজিমউদ্দিন মোজাম মন্ডল সহ এলাকার সুধিজনেরা অগ্নি সংযোগের বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, আওয়ামীলীগের বহিষ্কৃত ও বিদ্রোহী প্রার্থী হাইব্রিড নেতা রাজাকার পুত্র আনিসুর রহমান ঝন্টু সহ তার দোসরদের গ্রেফতারের জোর দাবি জানিয়ে বলেন, তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে কঠোর বিচার করা হোক। যেন আর কখনো নৌকার অফিস ভাঙ্গা তো দূরের কথা নৌকা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার সাহস না পায়।