বিএনপি-জামাত পরিবার থেকে কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ

প্রকাশিত: ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২০

কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।

সাদ আহমেদ পিতা মাওলা মন্ডল ৮ নং পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সাদ আহমেদ বর্তমান কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাদ আহমেদের বড় ভাই ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ ৮ নং পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এর আমির হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। তিনি বর্তমানে আলমডাঙ্গার একটি মাদ্রাসায় কর্মরত ।
সাদ আহমেদের চাচাতো ভাই আব্দুর রহমান ২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত জামাত ইসলাম করলেও ২০১২/২০১৩ সালে অনানুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
সাদ আহমেদের ছোট চাচা সাবেক মেম্বর খোদাবক্স মন্ডল সেও পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক এক নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন ।পরবর্তীকালে প্রতিটা ইউনিয়নের ওয়ার্ড পূর্ণ বিন্যাসের কারণে দুই নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি দালীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০২/২০০৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্বরত ছিলেন। সাদের বাবা মাওলা মন্ডলকে এলাকায় জামাত ইসলামের একজন কর্মী বা সদস্য হিসেবেই লোকে চিনে ।
সাদের বড় ভাই বর্তমান ৮ নম্বর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মন্ডল। তিনি ২০০২/২০০৩ সাল পর্যন্ত ওয়ার্ড বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। মোজাম মন্ডল ২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগাঠনিক পদে অভিষিক্ত হন ।
সাদ আহাম্মেদ ২০০৬ সালে হালসা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে হালসা মহাবিদ্যালয় (বর্তমান হাফসা ডিগ্রি কলেজ) ভর্তি হন। কিন্তু দুই দুইবার এইচএসসি পরীক্ষা দিলেও কৃতকার্য হতে ব্যর্থ হন। দুই দুইবার এইচ এস সি ফেল করার পরে সাদ আহামেদ রীতিমতো একজন কৃষক বনে যান। যে কিনা কৃষি কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন।পাওয়ার ট্রেলার মেশিন দিয়ে নিজের এবং টাকার বিনিময়ে অন্যদের জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সাধের বাল্যকালের বন্ধু হওয়ার কারণে ২০০৩ সালে অছাত্র থাকা অবস্থায় সাদ কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হন ।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পরে সাদ কে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পরবর্তীকালে তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার সাদ আহমেদ রাতারাতি হিরো বনে যান এবং তার ফ্যামিলি মেম্বারদের কে তিনি তার ক্ষমতা বলে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত করেন। সাদ আহমেদ তার ফ্যামিলির জামায়াত ও বিএনপির সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি উপেক্ষা করে, দলীয় বিভিন্ন নেতাকর্মীকে ম্যানেজ করে পাটিকাবাড়ি 2 নম্বর ওয়ার্ডের প্রতিটা কমিটিকে নিজের পারিবারিক কমিটিতে রুপ দান করেন ।
সাদ আহমেদ এর নিজের বা পারিবারিক কোন ব্যবসা না থাকলেও তাকে প্রায়ই তাকে ৩০ লক্ষ টাকার গাড়িতে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। কুষ্টিয়া শহর সহ আশেপাশের মাদক স্পটে তার হরহামেশাই দেখা মেলে। ছাদের এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় তিনি নাকি নেশাগ্রস্থ, সেই কারণেই তাকে বিভিন্ন মাদক সেবন স্পটে দেখা মেলে।
কুষ্টিয়া শহর হতে সাদ আহমেদের গ্রামের বাড়ি ১৩ থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে হলেও তিনি কুষ্টিয়াতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকেন। যার কুষ্টিয়া শহরে কোন ব্যবসা বা চাকরি নাই সে কিভাবে ফ্লাট ভাড়া করে থাকেন কুষ্টিয়াতে। এ বিষয় নিয়ে সাদা আমাদের নিজ গ্রামের মানুষের কৌতুহলের সীমা নেই।
যেখানে স্বয়ং দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেছেন পারিবারিক খোঁজখবর নিতে । সেখানে সাদ আহমেদ এর মত জামায়াতে ইসলামী এবং বিএনপি পরিবার থেকে উঠে আসা একজন অছাত্র কিভাবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত আছেন।




error: Content is protected !!