বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে করোনার নতুন উপসর্গ

প্রকাশিত: ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২০

বিশ্বজুড়ে হু হু করে বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। দিসেম্বরে শুরু হওয়া এই মহামারির এখন পর্যন্ত অসংখ্য উপসর্গ দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি দেখা গিয়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের নয়া উপসর্গ। মার্কিন সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এই উপসর্গ উদ্ভাবন করেছেন। লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- মাথাব্যথা, যখন-তখন শীতের অনুভূতি, প্রবল শীত বোধ থেকে দেহে কাঁপুনি ধরা এবং দেহের বিভিন্ন মাংসপেশিতে ব্যথা।
মার্কিন মুলুকে তো বটেই ইংল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই লক্ষণগুলো নানা বয়সের করোনা আক্রান্তদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে বলে নিজেদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে সিডিসি। এদিকে, এই একই ধরণের লক্ষণ দেখা গেছে দিল্লির সরকারি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এইমসের বেশ কয়েকজন রোগীর মধ্যেও, যারা করোনার ‘আদর্শ’ লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে আসেননি। পরে তাদের দেহে সংক্রমণ মিলেছে। ওই হাসপাতালের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক নাজনিন নাহার বেগম নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, ‘এখানে এমন অনেক রোগী দেখা গেছে, যাদের মধ্যে করোনার কপি বুক লক্ষণ ছিল না। তাদের মধ্যে অনেকেই জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন না। তার বদলে তারা মাথা ব্যথা, শীত বোধ করা এবং সারা গায়ের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাথার কথা বলেন। এই ধরনের রোগের উপসর্গ নিয়ে সাধারণত কোনো ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় না। এখানেও করা হয়নি। কিন্তু অনেকের দেহে এমন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, এটা লক্ষ্য করার পরেই প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখন দেখা যায় তারা করোনা পজিটিভ।’ পুরো বিষয়টি যে যথেষ্ট চিন্তার, তা স্পষ্টই জানিয়েছেন বাঙালি চিকিৎসক নাজনিন। তিনি আরও জানান, ‘এই রোগটা সম্পর্কে গোটা বিশ্বই খুব কম জানে। আর আমরা বোধহয় আরও কম। স্বভাবতই কোনো নির্দিষ্ট মডিউল মেনে এই রোগের চিকিৎসা করতে গেলে বারেবারে সমস্যায় পড়তে হতে পারে আমাদের। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, পুরো বিষয়টিতে একটু নমনীয় থাকা ভালো। হটস্পট থেকে আসা কোনো লক্ষণহীন ব্যক্তির অবশ্যই আগে করোনা পরীক্ষা করা দরকার। একজন আগন্তুকের দেহে কোনো রোগের উপসর্গ দেখে সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে গেলে পরীক্ষা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পন্থা নেই আমাদের কাছে। তাই কপি বুক লক্ষণের বাইরে সিডিসির পরামর্শ অনুযায়ী উপসর্গ সম্পন্ন কোনো ব্যক্তি চোখে পড়লেই তার করোনা পরীক্ষা করা উচিত। এর ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, উল্টো যদি তার করোনা হয়ে থাকে, তাহলে যত দ্রুত ধরা পড়বে, ততই ভালো।’ দিল্লি এইমস হাসপাতালে কর্মরত আরেক চিকিৎসক সায়ন নাথও জানান, তিনি ‘কপি বুক’ করোনা লক্ষণের বাইরে মাংসপেশিতে ব্যথা, মাথা ব্যথা, শীত বোধ করা, প্রবল শীত বোধ থেকে দেহে কাঁপুনি ধরার উপসর্গ সম্পন্ন রোগী দেখেছেন এইমসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হাসপাতালের অপর এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমার মনে হয়, যত দিন যাবে, ততই নতুন নতুন লক্ষণ যুক্ত হবে করোনার লক্ষণ তালিকায়। যতদিন না এই ভাইরাসের সব রহস্যভেদ হবে, ততদিন এই সন্দেহভাজন লক্ষণের তালিকা বাড়তেই থাকলে আমি অবাক হব না।’




error: Content is protected !!