সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::
মানবতার আরেক নাম বাংলাদেশ কৃষকলীগ ১নং শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক শেখ মোস্তফা।
পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে দলের বিভিন্ন প্রোগ্রাম মিছিলে ব্যয় করেছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
দুর্যোগময় সময়ে সকল বাঁধা পেরিয়ে হতদরিদ্র কৃষক ও শ্রমজীবীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। দেশের দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন এলাকায় নিঃস্বার্থভাবে নিজস্ব অর্থায়নে লক্ষ লক্ষ টাকার খাদ্যসামগ্রী, বস্ত্রসহ বিভিন্ন পন্য সামগ্রী বিতরণ করেন দরিদ্রদের মাঝে। করোনা ও বন্যার সময় মানুষ যখন গৃহবন্দী হয়ে খাবার সংকটে ছিলো তখনো তিনি ঘরে বসে থাকেননি। ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ করেছেন নিজস্ব অর্থায়নে। বন্যার সময়ে নিজের গোলাভরা ধান কুড়িয়ে নিয়ে বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করেছেন।
তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত সদস্য শাহজাহান কবির জানান, যখন আমার এলাকায় আমরা আওয়ামী লীগের গুটি কয়েক লোক ছিলাম তখন থেকেই শেখ মোস্তফা সব সময় মাঠ পর্যায়ে আমাদের সাথে নিবেদিত ভাবে দলের জন্য কাজ করে আসছে। ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগে দলের জন্য তার অবদান ভুলার মতো নয়। দলীয় যে কোন প্রোগ্রামে তার অগ্রনী ভূমিকা রয়েছে । দলীয় একজন কর্মী হিসেবে আমি সব সময় এই নিবেদিত প্রাণ কর্মীর সফলতা কামনা করি ।
১নং শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১নং ওয়ার্ড সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, যদিও আমি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কিন্তু রাজনীতিতে শেখ মোস্তফা অনেক সিনিয়র। আওয়ামী লীগের জন্য উনার ত্যাগ ও অবদান অনস্বীকার্য । ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি দলীয় যে কোন প্রোগ্রামে তিনি অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন। দলের জন্য নিজের টাকা খরচ করতে করতে তিনি আজ নিঃস্ব প্রায়।
১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহিদুল হায়দার লিটন জানান, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসার পর প্রথম যে মানুষটিকে দলের জন্য নিবেদিত দেখতে পেয়েছি তিনি হলেন শেখ মোস্তফা। যিনি সব সময় আমাদেরকে উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে সামনের সারিতে এগিয়ে দিয়েছেন। উনার উৎসাহেই ১৯৯৭ সালে প্রথম আমরা শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের কমিটি গঠন করি। যে কমিটিতে উনার উৎসাহেই আমি সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্বভার গ্রহন করি যে কমিটিতে শেখ মোস্তফা ছিলেন সহ-সভাপতি। তখন থেকেই একসাথে আমাদের পথচলা। ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রান আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে যাদের নাম আসে তার মধ্যে শেখ মোস্তফাও একজন।
একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার জানান, আমার ওয়ার্ডে দলের জন্য নিবেদিত বলেন আর নির্যাতিত বলেন যাই বলেননা কেনো প্রথম যে নামটি আসে সে হলো শেখ মোস্তফা ।
শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি আতিকুর রহমান বলেন, আমি একজন আওয়ামী পরিবারের সন্তান। বুঝতে শেখার পর থেকেই আমিও আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ভোটার হবার পর থেকেই আমার ভোটকেন্দ্রে আমি আওয়ামী লীগের প্রধান এজেন্ট হিসেবেও দ্বায়িত্ব পালন করে আসছি । কিশোরকাল থেকেই দেখে আসছি উনি আওয়ামীলীগের সাথে সম্পৃক্ত। আমরা যেখানেই কোন প্রোগ্রাম বা মিছিলে গেছি উনাকে সেখানেই দেখতে পেয়েছি ।যে কোনো বিপদ-আপদেও উনাকে পাশে পেয়েছি।উনার মতো আওয়ামী প্রেমির কোন তুলনা হয়না। আমরা বিগত দিনে দেখেছি করোনা মোকাবেলায় উনি নিজের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে সাধারণ মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন, বন্যার সময়ে দেখেছি ঋণ করে সুদে টাকা এনে খাদ্যসামগ্রীসহ বস্ত্র বিতরণ করেছেন। শুধু তাই নয় দলকে টিকিয়ে রাখতে দলের নেতাকর্মীদেরও বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তা করেছেন। তাঁর এমন উদ্যোগ কোন স্বার্থে নয়, দল ও দলের মানুষকে ভালোবেসেই করে আসছেন। উনার মতো ত্যাগী নেতা আমি আর দেখিনি, এক কথায় মানবতার ফেরিওয়ালা।
শুধু আতিকুর রহমান নয় এমন শত-শত নেতাকর্মী শেখ মোস্তফার মহৎকর্মের বর্ননা দিয়েছেন। এলাকাবাসীদের কাছ থেকে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।
১৯৭৫ সালের ২রা মার্চ এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর বাবার নাম হাবিবুর রহমান। একমাত্র কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল ছিলো তাঁর পরিবার। অভাবের তাড়নায় পড়াশোনাও তেমন করতে পারেননি। কোন রকম প্রাইমারি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন তিনি।পরে পড়াশোনা বাদ দিয়ে বাবার সাথে যোগদান করেন কৃষি কাজে। এভাবে কেটে গেলো তাঁর কৈশোর জীবন। এরপর যৌবন কালে ধীরে ধীরে রাজনীতির দিকে পা বাড়াতে থাকেন তিনি।তখন তাঁর বয়স ছিলো ১৪ বছর। অতি আগ্রহ ও বুকভরা সপ্ন নিয়ে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন মিছিল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে থাকেন । দলের জন্য কিশোর বয়সেও অনেক ত্যাগ স্বীকার করেন তিনি। শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন’র ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগে কিশোর বয়সেও অনেক অবদান ছিলো তাঁর।ওই সময় কৃষিকাজ ও হাওরে মৎস্য আহরণ করে যা উপার্জন করতেন তার সবকটি টাকাই ব্যয় করেছেন বঙ্গবন্ধুর দলের পেছনে। ১৯৯৬ সাল তাঁর বয়স ২১ বছর, তখন প্রথম ভোটার হন তিনি। জীবনের প্রথম ভোট দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কায় দিয়ে শুরু হয় তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। এরপর ১৯৯৭ সালে শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ ১নং ওয়ার্ডের সহসভাপতি পদে নিযুক্ত হন। টানা ৩ বছর ওই পদে বহাল থাকেন তিনি। এরপর ২০০০ সালে যুবলীগে যোগদান করেন তিনি। শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন’র ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি পদে নিযুক্ত হন। ২০০০-২০১৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছর ওই পদে বহাল ছিলেন তিনি। এরপর ২০১৭ সালে বাংলাদেশ কৃষকলীগ শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক পদে নিযুক্ত হন। আজ-অবধি বাংলাদেশ কৃষকলীগ শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক পদে বহাল আছেন।