হবিগঞ্জে দীর্ঘ এক যুগ পর হচ্ছে জেলা যুবলীগের কমিটি। 

প্রকাশিত: ১২:০১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২২

রাকিব উদ্দিন লস্কর  ঃ
হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগে শীর্ষ পদ পেতে মরিয়া।

প্রায় ১ যুগ পর হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১১ অক্টোবর হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রধান কার্যালয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নানা পদে প্রত্যাশীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সর্বশেষ শিক্ষা সনদের ফটোকপিসহ জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) জমা নেয়া হয়েছে।

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে নেতৃবৃন্দদের মাঝে দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। গ্রাম-শহরের রাস্তা-ঘাট কিংবা চায়ের দোকানসহ সব জায়গায় এখন একটাই আলোচনা কে হচ্ছেন জেলা যুবলীগের কান্ডারী।

শুধু আলোচনা-সমালোচনাই নয়, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিতে অনেকেই শুরু করেছেন জোর লবিং ও তদবীর।

হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলনকে সফল করতে হবিগঞ্জ আসছেন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিল, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এড. জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ আরও অনেকে।

এদিকে, জেলা যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদ প্রত্যাশী হয়ে জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) জমা দিয়েছেন অনেক ই।

জানা গেছে, আগামী ১১ অক্টোবর জেলা যুবলীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন সদ্য বিদায়ী জেলা ছাত্রলীগের দুই নেতা সাইদুর রহমান ও মহিবুর রহমান মাহি।

একই পদে প্রার্থী হয়ে আছেন জেলা যুবলীগের বর্তমান কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মঈন চৌধুরী সুমন ও হবিগঞ্জ পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক ইশতিয়াক চৌধুরী রাজ এবং সভাপতি প্রার্থী হবিগঞ্জ পৌর যুবলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান হিরাজ।

হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান জেলা যুবলীগের সাধারণ

মঈন উদ্দিন চৌধুরী সুমন, হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের বর্তমান কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। প্রচার আছে, জেলা আওয়ামী লীগের কোন এক শীর্ষ নেতার গ্রীন সিগনালে আগামী সম্মেলনে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী করে সিভি জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক হবিগঞ্জের এক প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা জানান, বিতর্কিতদের কোন পদ-পদবীতে না আসাই ভাল, কারণ তারা পদে আসলে সাধারণ মানুষদের শুধু শুধু হয়রানি করবে। তবে শুধু বিতর্কিতরাই নয়, সাধারণ সম্পাদক পদে প্রর্থী হয়ে সক্রিয় আছেন ক্লিন ইমেজ খ্যাত তাজ উদ্দিন তাজসহ আরও কয়েকজন যুবলীগ নেতা।

সভাপতি পদে যারা প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন তারা হলেন, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাশেম চৌধুরী, বিপ্লব রায় চৌধুরী।

হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম জানান, হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলনকে ঘিরে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষের দিকে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের স্বাগত জানাতে যুবলীগের নেতাকর্মীরা অধীর আগ্রহে রয়েছে।

তিনি আরও জানান, এবারের সম্মেলনে প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীর সমাগম হবে স্টেডিয়ামে। জেলার ১০টি ইউনিটের ৩৫১ জন ভোটার রয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে আগামীর জেলা যুবলীগের নেতৃত্ব।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন আতাউর রহমান সেলিম। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন বোরহান উদ্দিন চৌধুরী।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৩ বছর পর পর কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিধান থাকলেও নানা কারণে পার হয়ে যায় প্রায় ১ যুগ। এর মধ্যে করোনাও কেড়ে নেয় প্রায় দুইটি বছর।

অবশেষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। যা নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি নেই নেতাকর্মীদের মধ্যে।

সূত্র জানায়, এবারের সম্মেলনে কেন্দ্রে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী। তবে নানা বিতর্কের পরও দীর্ঘদিন পর হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন হওয়ায় উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি নেই নেতাকর্মীদের মাঝে।

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের স্বাগত জানাতে শহরের পৌদ্দার বাড়ি থেকে শুরু করে সম্মেলনস্থল হবিগঞ্জ জালাল স্টেডিয়াম পর্যন্ত ছেয়ে গেছে ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে।

কেন্দ্রীয় নেতা ও প্রার্থীর ছবিসহ ব্যানার ফেস্টুন টানানো হয়েছে রাস্তার দু’পাশে। দেখলে মনে হয় সম্মেলনকে ঘিরে যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হচ্ছে হবিগঞ্জ শহর।




error: Content is protected !!