হেফাজতে ইসলামের কাউন্সিল আগামী রবিবার হাটহাজারী মাদ্রাসায়, কোন জেলা হতে নির্বাচিত হচ্ছে আমির তা নিয়ে শুরু আলোচনা সমালোচনা
আসলাম পারভেজ, হাটহাজারীঃ
দেশের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় শীর্ষ সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সম্মেলন (কাউন্সিল) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী রবিবার। ১৫ নভেম্বর সকালে অনুষ্ঠিত হবে হাটহাজারী মাদরাসার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।
হেফাজতের কাউন্সিলকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে শীর্ষ এ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।২০১০সালে নারীনীতি মালা বিরোধ নিয়ে হেফাজতের আত্মপ্রকাশ।জন্মলগ্ন থেকেই আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)। গত ১৮ সেপ্টেম্বর আমিরের মৃত্যুর পর পদটি শূন্য হয়ে পড়ে।এতে আমিরের জন্য তোড়জোড় চলছে। কে হচ্ছে শীর্ষ এ পদে স্থলভিষিক্ত। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় হেফাজতের মুল কেন্দ্র। এ কেন্দ্রকে ঘিরে যে কোন আন্দোলনের ডাক হাটহাজারী থেকে দেওয়া হয়।কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ অংশ চাচ্ছে ঢাকায় মূল কেন্দ্র করতে এমনি দাবি নাম প্রকাশে হেফাজতের কয়েকজন নেতার।
দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতের এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। হেফাজতের প্রায় ৩’শত ৬০ জন কেন্দ্রীয় শীর্ষ মুরুব্বিরাই ঠিক করবেন কে প্রয়াত আল্লামা আহমদ শফির স্থলভিষিক্ত হবেন। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা সমালোচনা। আমিরের পদ নিয়ে তেমন বাড়াবাড়ি না থাকলেও মহাসচিব পদ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।
হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমির ও দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তারপর থেকে হেফাজতের আমিরের পদটি শূণ্য রয়েছে। মূলত এরপর থেকেই হেফাজত প্রতিষ্ঠার ৮ বছরের মাথায় এসে কাউন্সিলের আলোচনা শুরু হয়।
এদিকে আগামী রবিবার হেফাজতের কেন্দ্রীয় সম্মেলন (কাউন্সিল) উপলক্ষে সারাদেশ থেকে কওমি অঙ্গের শীর্ষ আলেমরা কাউন্সিলে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। হেফাজতের প্রায় সাড়ে ৩’শ জন কেন্দ্রীয় শীর্ষ মুরুব্বিরাই ঠিক করবেন কে প্রয়াত আল্লামা আহমদ শফির স্থলভিষিক্ত হবেন।
জানা যায়, ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি গঠিত হয়েছিল চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক কওমি আক্বীদাপন্থি অরাজনৈতিক ইসলামী সংগঠন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ। যদিওবা পরে অরাজনৈতিক এ সংগঠনটি রাজনৈতিক ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। হটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার প্রয়াত প্রধান পরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে আমির ও মাদ্রাসার তৎকালীন সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে মহাসচিব করে হেফাজতের ২২৯ সদস্যের মজলিশে শুরা কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই সময়। দেশ বরেণ্য শীর্ষ আলেম আহমদ শফি চলতি বছরের গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করার পর হেফাজতের আমিরের পদটি শূণ্য রয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতির বিরোধিতার মধ্য দিয়ে হেফাজতের আত্মপ্রকাশ হলেও সংগঠনটি দেশজুড়ে আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর অবরোধের মাধ্যমে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘আগামী ১৫ নভেম্বর হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনকে ঘিরে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে সারা দেশে।গুরুত্বপূর্ণ এ পদে যিনি আমির নির্বাচিত হবেন তাকে নিয়েই হেফাজতের পুণর্গঠন হবে। হেফাজত ফিরে পাবে পূর্বের সেই প্রাণ। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে সম্মেলনকে ঘিরে আমাদের প্রস্তুতি শেষ পযার্য়ে। সারাদেশের ৬৪টি জেলা থেকে হেফাজতের শীর্ষ নেতারা সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। সেখানে তাদের মতামতের ভিত্তিতে আমাদের আমির নির্বাচিত করা হবে।
এদিকে হেফাজতের আমির পুত্র আনাস মাদানি হেফাজতের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে থাকলেও তার কাউন্সিল নিয়ে তেমন ভুমিকা দেখা যাচ্ছেনা।কাউন্সিল নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি,ক্ষুব্ধ শফী অনুসারীরা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেফাজতের নায়েবে আমির ও যুগ্ন মহাসচিব সহ সিনিয়র দায়িত্বশীল পর্যায়ের অনেকেই দাবি করেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী হুজুরের হেফাজতকে ছিনতায় করা হচ্ছে। তার অনুসারীদের হেফাজত থেকে মাইনাস করতে চেষ্টা করছে।কিন্তু ক্ষণিকের এ মহোৎসব বেশিদিন ঠিকবেনা। হেফাজত হবে আপমর সকল তৌহিদি জনতার। কারো ব্যক্তি বা গোষ্ঠির নয়।