রনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরৎ দিয়ে বহাল তবিয়তে দপ্তরি টুটুল দাস সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অদৃশ্য কারণে নির্বিকার

প্রকাশিত: ২:০৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২১

নিজস্ব প্রতিনিধি- আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি টুটুল দাস নিজের দোষ স্বীকার করে ৩ শিশু সহ এলাকার ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরৎ প্রদান করে। এ ছাড়া নিজেকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করে বলে অভিযোগ উঠে ওই দপ্তরির বিরুদ্ধে। এলাকার কতিপয় অভিবাবক জানায়, রনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোহিণী কান্ত ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় শুরু হওয়ার পর ও ছুটি হওয়ার পূর্বেই বিদ্যালয় ত্যাগ করা নিত্যদিনের ঘটনা। তাই বিদ্যালয়ের গেইট সহ আলমিরার চাবি সর্বদা দপ্তরি টুটুল দাসের নিকটই রক্ষিত থাকত। যার কারণে, ওই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অভিবাবকগণের মোবাইল নম্বর সে সংশ্লিষ্ট ফাইল থেকে সংগ্রহ করে। উপবৃত্তির টাকা মোবাইলে আসার পর দপ্তরি টুটুল দাস বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে নির্দিষ্ট অভিবাবককে নিজের কাছে নিয়ে এসে, পিন নম্বর টিপে টাকার একটি অংশ স্হানান্তরিত করত তার পিতার নামীয় গুণগুণ আই,টিতে। পর সুযোগ বোঝে ওই টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করত ওই দপ্তরি। এ ব্যাপারে একাধিকবার দৈনিক প্রতিদিনের বাণী সহ স্হানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উপবৃত্তির আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরৎ দিয়ে অদ্যাবধি বহাল তবিয়তে রয়েছে দপ্তরি টুটুল দাস। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অদৃশ্য কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
উল্লেখ্য,
সারাদেশ ব্যাপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা ” নগদ ” এর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের নিয়ম ঘোষনা করেছে সরকার এরই ধারাবাহিকতায়,
আজমিরীগঞ্জ ১ নং সদর ইউনিয়নের রনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মফিজ মিয়ার পুত্র ও রনিয়া সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ সালমান মিয়া, ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ মোরছালিন মিয়া ও ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ মফিজ মিয়ার উপবৃত্তির টাকা আসে নির্দিষ্ট করে দেয়া তাদের মোবাইলে। শিক্ষার্থীদের অভিবাবক মফিজ মিয়ার স্ত্রী তাদের নগদ একাউন্টে উপবৃত্তির কত টাকা এসেছে তা দেখাতে যায় বিদ্যালয়ের দপ্তরি টুটুল দাসের নিকট। বর্তমানে পার্সোনাল নম্বর থেকে পার্সোনাল নম্বরে সেন্ডমানি না হওয়ায়, দপ্তরি টুটুল দাস শিক্ষার্থীদের অভিবাবকের মোবাইলে আসা ৪৮০০ টাকা থেকে ( (পূর্ব থেকে জানা) গোপন পিন টিপে গুনগুন আই,টি তে ১৮০০ টাকা গোপনে ট্রান্সফার করে নেয়। পর মফিজ মিয়ার স্ত্রীকে দপ্তরি জানায় যে, তাদের মোবাইলে উপবৃত্তির ৩ হাজার টাকা এসেছে। পর মফিজের স্ত্রী আজমিরীগঞ্জ পৌরসভাধীন চরবাজারে এসে রামকৃষ্ণ মিশন রোডের মনোজ টেলিকম থেকে ৩ হাজার টাকা উত্তোলন করে। ৩ হাজার টাকার বিষয়টি নিয়ে গ্রামের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অভিবাবকদের মধ্যে আলোচনা হলে, তারা জানায় ৩ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা আরও বেশী আসার কথা। বিষয়টি যাচাই বাছাই করতে শিক্ষার্থীর অভিবাবক আজমিরীগঞ্জ টানবাজারের জহির এন্টারপ্রাইজ এ আসে। জহির এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী আবুল হোসেন যাচাই করে অভিবাবককে জানায় যে, নগদ হিসেবে উপবৃত্তির ৪৮০০ টাকা এসেছে। পরবর্তীতে একই দিন ২ টা ৫৯ মিনিটে গুনগুন আই,টি তে ১৮০০ টাকা ও বিকাল ৪ টায় ৩০০০ টাকা পৃথক দু’টি মোবাইল নম্বরে উত্তোলন করা হয়েছে। একই দিন খবর দিলে, জহির এন্টারপ্রাইজ এ এসে উপবৃত্তির ১৮০০ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করে দপ্তরি টুটুল দাস। ঘটনার পরদিন অর্থাৎ রবিবার সকালে দপ্তরি টুটুল দাস আত্মসাৎকৃত ১৮০০ টাকা ফেরৎ দিতে জহির এন্টারপ্রাইজ এ আসে।
কিন্তু অভিবাবক মফিজ মিয়া ওই টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ ব্যাপারে রনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোহিণী কান্ত ভট্টাচার্য জানায়, আমি অন্য জায়গায় আছি। এসে এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেব। সহকারী শিক্ষা অফিসার মাহফুজ মিয়া জানায়, লিখিত অভিযোগ আসলে, আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেয়া হবে। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।




error: Content is protected !!