মো: সাগর আলী, নীলফামারী ঃ ভারত সরকারের সাথে তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় নীলফামারীর কয়েক লক্ষ মানুষ সুফল থেকে বঞ্চিত হলো। তিস্তার ভোগান্তি থেকে আর রক্ষা হলো না নীলফামারীর মানুষের। অনেক বুক ভরা আশা বেঁধেছিল তিস্তা চুক্তি হলে তিস্তা পারের মানুষের জীবন মান,সেচ, অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যেত। কিন্তু সেই আশা সব ধুলিসাৎ হয়ে গেলো।
তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় অপরিকল্পিত পানি ব্যবস্থাপনার ফাঁদে থাকা মানুষগুলো আজ বড় অসহায়। তিস্তা চুক্তি হলে বন্যা,খরা,সেচ ব্যবস্থা সব দিক থেকে নিয়মের মধ্যে পরিকল্পিত পানি নিস্কাশন হতো। কিন্তু ঘুরে ফিরে সেই বর্ষার সময় বন্যায় ক্ষতির মুখে পরবেন কয়েক হাজার মানুষ। আর শুকনো মৌসুমে সেচ প্রকল্পের পানি ঠিক মতো সরবরাহ না হওয়ায় কৃষকেরা অনেক লোকসানের মুখে পরে যায়। তিস্তার পানি সঠিক না থাকায় কৃষকদের অতিরিক্ত খরচ করে বিকল্প ব্যবস্থায় সেচ দিয়ে জমির ফসল ঘড়ে তুলতে হয়। আর বর্ষার সময় হঠাৎ তিস্তার পানি বৃদ্ধি এবং হঠাৎ বন্যায় মানুষের ঘরবাড়ী তলিয়ে গিয়ে ক্ষতির সম্মুক্ষিন হতে হয়। তাই তিস্তা চুক্তি জরুরী প্রয়োজন ছিল নীলফামারীর তিস্তা পারের মানুষ ও তিস্তার সেচ প্রকল্পের কৃষকদের। তাই নীলফামারীর মানুষের দাবী তিস্তা চুক্তি হলে তাদের জীবন মান পাল্টে যাবে। তিস্তার সেচ প্রকল্পনির্ভর কৃষকরা স্বল্প খরচে সেচ সুবিধা পাওয়ায় বাম্পার ফলনেরও আশা করেন কৃষকরা। কিন্তু তিস্তা চুক্তি না হলে কৃষকের এসব আশা থেকেই যাবে, বাস্তবায়ন আর হবে না।
সরেজমিনে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টির অভাবে মাটি ফেটে চৌচির তখন তিস্তা সেচ প্রকল্পনির্ভর কৃষকরা থাকেন ফুরফুরে আনন্দে,কারন তারা তিস্তার সেচ সুবিধায় বাম্পার ফলনের আশা করেন প্রকল্পভুক্ত কৃষকরা। কিন্তু সেই তিস্তার পানি তাদের নিয়ম মাফিক পান না। তখন কৃষকদের হাসি আর আনন্দর পরিবর্তে তাদের বুকভরা কান্না নেমে আসে। তাই তিস্তা চুক্তি হলে এসব সব কষ্টের অবসান কাটিয়ে ফিরে পেতো নীলফামারীর মানুষ নতুন উপহার।
ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানি ইউনিয়নের আলমগীর হোসেন,সিরাজ মিয়া,মরিয়ম বেগম বলেন,তিস্তা চুক্তি না হওয়ার কারনে আমরা অনেক সমস্যায় আছি। তিস্তার পানি অপরিকল্পিত ভাবে আসে আমরা বর্ষার সময় বন্যায় হাবুডুবু খাই। আর শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে সেচ দিতে পারি না সঠিক ভাবে। তাই আমাদের তিস্তার পানি অনিয়মের মধ্যে আসায় আমরা বিপাকের মধ্যে থেকে বিভিন্ন সময় ভোগান্তি স্বীকার হতে হয়। তাই আমাদের দাবী তিস্তা চুক্তি হতেই হবে। তিস্তা চুক্তি হলে আমরা নতুন উদ্যোমে সব সাজিয়ে গুছিয়ে জীবন মান পাল্টাতে পারবো।
জানতে চাইলে নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদ্দৌলা বলেন, বৃহত্তর তিস্তার পানি চুক্তি হলে ১লাখ চার হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পেত কৃষক। তারপরেও আমরা কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী সাধ্যমত সেচ চাহিদা পুরন করার চেষ্টা করে থাকি।