কলাপাড়ায় কাঁচা সড়কে শত শত মহিষ চড়িয়ে রাস্তার বেহাল দশা, পাঁচ গ্রামের হ্জারো মানুষের চরম দুর্ভোগ ॥
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : কলাপাড়ার বালিয়াতলী ইউনিয়নের লেমুপাড়া
প্রামের পশ্চিমকান্দায় কর্দমাক্ত রাস্তার উপর সন্ধ্যা নামতেই শত শত
গরু-মহিষের আবাসস্থল হয়ে উঠে। কাঁচা সড়কে শত শত মহিষ চড়িয়ে পাঁচ গ্রামের
হাজারো মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই
রাস্তায় পানি জমে। তখন যানবাহন তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাচল করা
অসম্ভব হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, রাস্তাটি পাকা করার জন্য
দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি করছেন। কোনো কাজ হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, লেমুপাড়া পশ্চিমকান্দা বড় স্লুইজ থেকে ডোস হয়ে
বাবলাতলা বাজার যেতে রাস্তাটি বেহাল দশা। সামান্য বৃষ্টি হলেই গরু,মহিষের
বৃষ্ঠা ও পানি জমে কাদা মটিতে একাকার হয়ে যায়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এই
রাস্তা দিয়ে গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। ঝুঁকি নিয়ে এই সড়ক দিয়ে স্থানীয়
জনসাধারণ চলাচল করছে। শুধু তাইই নয়, ওই এলাকার স্কুল-কলেজগামী
ছাত্র-ছাত্রীরাও এ সড়কের ওপর নির্ভরশীল। এলাকার কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত
পণ্য বাজারজাত করতে এ রাস্তা ব্যবহার করেন। গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ
রোগীদের এই রাস্তায় চিকিৎসার্থে হাসপাতালে নেওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই কাঁচা রাস্তা একটু বৃিষ্ট
হলেই হাটু পর্যন্ত কাদায় আটকে যায়। এলাকার প্রভাশালী ব্যক্তিরা রাস্তা
দখল করে তাদের পালিত মহিষ, গরু বেধে রাখে। মহিষ গরু চলাচলের কারনে
মানুষসহ যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গত বছর সব এলাকাবাসি একযোগে
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবার অভিযোগ করেছিলো। সেই সময় মাত্র একদিন
গরু-মহিষ রাস্তার ওপর বাঁধা বন্ধ ছিলো। এরপর আবার গরু মহিষ রাস্তার উপরই
বেঁধে রাখছে। ভোটের সময় অনেক জনপ্রতিনিধি এলাকার দু:খ-দুর্দশা লাঘবে এই
রাস্তা পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন। তাদের কাছে একাধিকার বলা স্বত্বেও
রাস্তার উপর গরু-মহিষ রাখা বন্ধ ও রাস্তাটি পাকা করনের কোন পদক্ষেপ
নেয়নি।
এনিয়ে মহিষের মালিক মিন্টু তালুকদার, রাস্তার উপর মহিষ রাখার কথা স্বীকার
করে বলেন, অতি বৃষ্টির ফলে, পানি জমার কারনে বাধ্য হয়ে রাস্তার উপরে
গরু-মহিষ বাঁধতে হচ্ছে, বর্ষা মৌসুম তো প্রায় শেষ, এরপর মানুষ চলাচলে
তেমন আর কোন সমস্যা হবেনা।
আরেকজন শাহজাহান তালুকদার বলেন গোয়াল ঘর না থাকায় ওয়াপদা রাস্তার উপর
মহিষ বেধে রাখতাম। এখন আর রাখিনা।
স্থানীয় হুন্ডা চালক বশির উদ্দিন বলেন, প্রায়শই হুন্ডায় নারী যাত্রি নিয়ে
এই সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় যাত্রী নিয়ে কাঁদার মধ্যে পড়ে পরে যাই। গরু-মহিষ
কাচা রাস্তাটির উপর রাখা ও বর্ষার কারনে রাস্তাটি আরো খারাপ হয়ে যায়।
রাস্তাটি পাকা করা হলে দুর্ঘটনা কমে যাবে, আমাদের আয় রোজগার বেড়ে যাবে।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম হমায়ুন কবির বলেন, পশ্চিমকান্দা
এলাকার কয়েকটি পরিবারকে রাস্তার উপর গরু-মহিষ না রাখতে বারবার নিষেধ করা
সত্যেও কোন কর্নপাত করছে না। চৌককিদার পাঠিয়ে বিষষটি দেখছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৌদ্য বলেন, বিষয়টি
সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনলাম। দ্রুত এ বিষয়ে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী
ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।