নন্দীগ্রামে আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের পাশাপাশি চলছে নবান্ন উৎসব

প্রকাশিত: ৯:১৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
নাজমুল হুদা, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে এখন আমন কাটা-মাড়াইয়ের পাশাপাশি চলছে নবান্ন উৎসব। প্রাচীনকাল থেকেই নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা ধান উৎপাদনে পারদর্শী। যে কারণে অতি গুরুত্বের সাথে নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা ধান উৎপাদন করে থাকে। এ উপজেলার কৃষকরা বছরে ৩ বার ধানের চাষাবাদের পাশাপাশি রবিশস্যরও চাষাবাদ করে আসছে। এবারো এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
এখন আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। এর পাশাপাশি ফসলি জমিতে রবিশস্য চাষাবাদের প্রস্তুতিও চলছে। আমন ধানের চাষাবাদে তুলনামূলকভাবে ব্যয় কম হয়। সে কারণে কৃষকরা অনেকটা উপকৃত হযে থাকে। আমন মৌসুমে বৃষ্টি কম হলে বাড়তি পানি সেচ দিতে হয়। সে কারণে একটু ব্যয় বেশি হয়ে থাকে। তবুও আমন ধানের চাষাবাদ লাভজনক হিসেবে গণ্য করে কৃষকরা।
উপজেলার কৃষকরা আমন ধানের চালের ভাত বেশি পছন্দ করে। তাই সারা বছরের খোরাকির ধান-চাল রেখে বাকি সব ধান বিক্রয় করে দেয়। আমন ধান বিক্রয়ের টাকা দিয়ে রবিশস্য ও বোরো ধানের চাষাবাদ করে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক জানান, এবারের আমন মৌসুমে এ উপজেলায় ১৯ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এ উপজেলার কৃষকরা ধানসহ সবধরনের ফসল উৎপাদনে খুব পারদর্শী। কৃষকদের পাশাপাশি আমরাও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপকভাবে কাজ করেছি। তাই এবারো আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ১৫-১৬ মণ হারে আমন ধান পাওয়া যাচ্ছে। আবার কারো কারো এরচেয়ে বেশিও হচ্ছে।
এদিকে আমন ধানের বাজারমূল্য বেশ ভালো রয়েছে। এতে কৃষকরা খুশি রয়েছে। এমন খুশিতে উৎসবমুখর পরিবেশে নবান্ন উৎসব পালন করছে কৃষকরা। এ সময় গ্রামগঞ্জে নতুন চালের মৌ মৌ গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। নবান্ন উৎসব উপলক্ষে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি মাছ-মাংস রান্না এবং পিঠা, পুলি, ক্ষীর ও পায়েসসহ নানারকম খাবার তৈরির ধুম পড়েছে। যা জামাই-ঝি ও আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করে এনে খাওয়ানো হচ্ছে। এ উপজেলার কৃষকরা প্রাচীনকাল থেকে নবান্ন উৎসব পালন করে আসছে। কালের বিবর্তনে অনেক কিছুরই পরিবর্তন হলেও নবান্ন উৎসবের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মাস মানেই কৃষকদের নবান্নের মাস হিসেবে গণ্য করা হয়।
উপজেলার হাটলাল গ্রামের আদর্শ কৃষক মিনহাজুর রহমান জানান, আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ পুরোদমে চলছে। এর পাশাপাশি নবান্ন উৎসবও চলছে। বর্তমান মিনিকেট জাতের ধান ১৪১০-১৪২০ টাকা, কাটারীভোগ জাতের ধান ১৩৫০-১৩৬০ টাকা, ব্রিধান-৪৯ জাতের ধান ১১৫০-১১৬০ টাকা, ব্রিধান-৯০ জাতের ধান ১২৫০-১৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রয় হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য জাতের ধানের বাজারমূল্যও ভালো রয়েছে। বর্তমানে ধানের যে বাজারমূল্য রয়েছে এতে কৃষকরা খুশি। ধানের এই বাজারমূল্য যেনো ঠিক থাকে এ প্রত্যাশা করি। উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতারা নন্দীগ্রাম উপজেলা থেকে ধান ক্রয় করে নিয়ে যায়।



error: Content is protected !!