কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
খুলনা বিভাগের অন্যতম বৃহত শ্রমিক সংগঠন কুষ্টিয়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন খুলনা-৭২ এর বার্ষিক সাধারন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সকাল ১০ টায় কুষ্টিয়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহাবুল আলম এর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন পর এই বৃহত শ্রমিক সংগঠনের নিজস্ব গতি ফিরিয়ে আনতে মাহাবুল আলম ও মোকাদ্দেস হোসেন শ্রমিকদের কাছে সরাসরি জবাবদিহিতা করতে নিয়মিত বার্ষিক সাধারন সভা করছে যা ইতিপূর্বে হয়নি। সভার শুরুতে ২০১৬ সালের মে মাস থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত আয়ের ব্যায়ের হিসাব তুলে ধরে কুষ্টিয়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সংগ্রামী সাধারন সম্পাদক শ্রমিকদের নয়নের মনি মো. মোকাদ্দেস হোসেন। সাধারন সম্পাদক মোকাদ্দেস হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, কুষ্টিয়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন এ জেলার শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সংগঠন। শ্রমিকের রক্ত ও ঘামের বিনিময়ে গড়ে এ সংগঠন এক দিনে গড়ে উঠেনি। তিলে তিলে সকল শ্রমিকদের সহযোগীতায় গড়ে উঠেছে। বর্তমান পরিষদ শ্রমিকদের স্বার্থ হাসিল করতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছে যা আপনাদের অনুমতিক্রমে পাশ করা হবে। তিনি বলেন, বর্তমান পরিষদ এর সকল নেতাদের অত্যন্ত পরিশ্রমের কারনে মাত্র ২ বছরে দুইটি বাস উপহার দেওয়া সম্ভব হয়েছে শ্রমিক সদস্যদের এছাড়াও ইউনিয়নের নামে নতুন জায়গা ক্রয়সহ বিগত সময়ে ক্রয়কৃত জমি মামলার মাধ্যমে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। শ্রমিকদের স্বার্থ হাসিল করতে অবৈধ শ্রমিকদের সংগঠন থেকে বাতিল করে সঠিক তালিকা প্রনয়ন করা হচ্ছে এটা সম্ভব হচ্ছে শুধু মাত্র আপনাদের সহযোগীতার কারনে। তিনি এই সময়ে (১,১২,৬৯,৪৯৫) এক কোটি বার লক্ষ উনসত্তর হাজার চার শত পঁচানব্বই হাজার টাকার আয় ব্যায়ের হিসাব তুলে ধরেন। সাধারন সম্পাদক এর বক্তব্য প্রদানের পর আয় ব্যয়সহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম ধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম ডাবলু, কোষাধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম। এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন, শ্রমিকদের পক্ষথেকে আব্দুল কাইউম খোকন, শাহীন, মামুদ আলী, শাজাহান, রাজু আহম্মেদ, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস, রায়হান আলী, নুরুজ্জামান, রওশোন আলী, লিয়াকত আলী,আকমল হোসেন, সাবেক সাধারন সম্পাদক শফিউদ্দিন গোপী, আফজাল হোসেন, রবিউল ইসলাম প্রমুখ। সভাপতি মাহাবুল আলম সমাপনী বক্তব্যে বলেন, কুষ্টিয়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের প্রবীন নেতাদের দেখানো পথ থেকে যে অভিজ্ঞা আমরা পেয়েছি এবয় শ্রমিকভাইদের পরামর্শে মাত্র ২ বছরে শ্রমিকদের পরিচয় দেওয়া এবং গর্ব করার মতো কাজ করতে সমর্থ হয়েছে বর্তমান পরিষদ। শ্রমিকদের স্বার্থ হাসিল করতে বিভিন্ন আন্দোলনসহ তাদের অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগীতা করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। তিনি শ্রমিকদের সর্বসম্মতিক্রমে দূর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের মৃত্যুকালীন অর্থ ড্রাইভার ও সুপার ভাইজার ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৪০ হাজার, হেলপার ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার করার ঘোষনা দেন। এছাড়াও শ্রমিকদের স্বাভাবিক মৃত্যু কালীন অর্থ প্রদান এর নিয়ন চালু করেন। যে কোন ড্রাইভার/ সুপার ভাইজার মৃত্যু বরন করলেইতার পরিবারকে ২০ হাজার এবং হেলপার এর পরিবারকে ১০ হাজার টাকা প্রদানের অনুমতি প্রদান করেন।এছাড়াও বয়স্ক ড্রাইভারদের ভাতা বৃদ্ধি করেন। তিনি বর্তমানে অত্র ইউনিয়নের সকল শ্রমিকদের ডিজিটাল কার্ড থাকা বাধ্যতামুলক করেন এবং ইউনিয়নের কোন সম্পদ বিক্রয় এর ক্ষেত্রে সাধারন সভার সিদ্ধান্ত বাধ্যতামুলক ঘোষনা করেন। সর্বশেষে বার্ষিক সাধারন সভায় সকলের অনুমতিক্রমে আয়ব্যয় এর হিসাব অনুমোদন করেন। এসময় তিনি শ্রমিকদের উদ্যেশ্যে বলেন, ইউনিয়নের সম্পদ মানে শ্রমিকদের সম্পদ এই সম্পদ ব্যবহার কোন নেতার ইশারাই হবে না এটা শ্রমিকদের সিদ্ধান্তে হবে, যা ইতিপূর্বে হয়নি। বিগত কমিটির থেকে যাত্রা শুরু করা আজকের সংগঠন কোটি টাকার মালিক। বর্তমান পরিষদ শ্রমিকদের স্বার্থ আদায়ের পরিষদ। তিনি আগামী দিনে সকলের কাছে সহযোগীতা কামনা করেন। সভার সঞ্চালনা করেন, প্রচার সম্পাদক আনিছুর রহমান আনিচ।