বাহুবলে কালা সানুর ইয়াবা সেবনের ছবি ভাইরাল, দ্রুত গ্রেফতার চায় সচেতন মহল
নিজস্ব প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার কতিথ সাংবাদিক আজিজুল হক সানুর ইয়াবা সেবনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল। রাতের আধারে একটি ঘরের কোনে বসে ইয়াবা খাওয়ার সরঞ্জামাদীসহ ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করার ঘণ্টাখানেকর মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। বাহুবলে শুরু হয় ব্যাপক তোলপাড়। শেয়ার, লাইক ও নানা ধরনের মন্তব্যসহ ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার খোরাক জোগায় ছবিটি। ছবিটি দিয়ে ভিডিও বানানো হয়েছে।
আজিজুল হক সানুর বাড়ি বাহুবল উপজেলার চলিতাতলা গ্রামে। তার মূল বাড়ী ছিল চুনারুঘাট উপজেলায়। সে দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার প্রতিনিধি বলে পরিচয় দিত। এ বিষয়ে দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার হবিগঞ্জ প্রতিনিধি এমএ মজিদ বলেন, বাহুবলে নয়াদিগন্তের কোন প্রতিনিধি নেই।
এফআর হারিছ শেখ নামের এক ব্যক্তি বুধবার বিকেল ৪টায় ফেসবুকে ছবি দিয়ে লিখেন, জীবন বিধ্বংশী মরন নেশা ইয়াবার ছোবলে দেশ। বাহুবলের খুব পরিচিত একটি মানুষ ইয়াবা সেবন করছে।কে সেই ইয়াবা সেবনকারী, কেহ চিনে থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন?
এর পরপরই শুরু হয় কমেন্ট । কমেন্টে মনসুর আহমেদ হাফি নামের এক ব্যাক্তি লিখেন অহ সিট দেখে তো মনে হচ্ছে সাংবাদিক। নাঈম আহমেদ রাজু নামের এক ব্যাক্তি লিখেন এটা বাহুবলের কালা সানু। জুবায়ের আহমেদ নামের এক ব্যাক্তি লিখেন এগিয়ে যাচ্ছে বাহুবল, এগিয়ে যাচ্ছে চিহ্নিত মাদক ও ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। ডলি আক্তার লিখেন ভূয়া সাংবাদিক।
জুবায়ের আহমদ নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেন, প্রিয় বাহুবলবাসী মহামারী করোনা ভাইরাসের সুযোগ নিয়ে বাহুবলে মরণ নেশা ইয়াবা ও গাঁজা ব্যবসায়ীরা সক্রিয়।এদের কারণে ধ্বংস হচ্ছে এলাকার যুব সমাজ। এই লোকটাকে যারা যারা চিনেন, একটু আওয়াজ তুলুন(বিস্তারিত আসছে)
আসতে থাকে কমেন্ট। মো: মাহমুদুল হাসান লিখেন সাংঘাতিক সানু মনে হয়। নাদিয়া ডেকোরেটার্স নাঈম মাঈক কমেন্ট করেন সাংবাদিক আজিজুল হক সানু মনে হয়।
সিদ্দিকুর রহমান মাসুম নামের এক ব্যক্তি তার ফেকবুক আইডিতে লিখেন, প্রকাশ্যে ইয়াবা মাদক সেবন করে রাস্তায় পড়ে থাকা লোকটিকে পুলিশ খুঁজে পায়না। অথচ লোকটি থানার আশ পাশেই মাতলামি করে,আবার নিজের ফেসবুকে পাগলের প্রলাপ দেয়। সব থানায় মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহন করা হলেও বাহুবল থানা কি এর বাইরে!
আসতে থাকে কমেন্ট।জহিরুল ইসলাম বিন নুর নামের এক ব্যক্তি কমেন্টে লিখেন, আজিজুল হক সানু। নাঈম আহমেদ রাজু নামের এক ব্যক্তি কমেন্টে লিখেন, বুঝলাম না, আপনারা সাংবাদিক মানুষ হয়ে ভয় পান কেন? এটাতো পরিস্কার চেনা যাচ্ছে কালা সানু। আজ বুঝতে পারলাম আপনার মাদকের বিরুদ্ধে লিখে নিজেই মাদক সেবন করেন? এফ আর হারিছ শেখ নামের এক ব্যক্তি কমেন্টে লিখেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূদৃষ্টি কামনা করছি। মামুনুর রশিদ নামের এক ব্যক্তি লিখেন অবশেষে বেরিয়ে এলো তলের কালো বিড়াল।
আজিজুল হক সানুর বিরুদ্ধে রয়েছে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক সেবনের অভিযোগ। সে একজন মাদক পাচারকারী। পুলিশের সাথে রয়েছে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। বছর দেড়েক আগে পুটিজুরী পুলিশ ফাড়ির এএসআই আলী হোসেন মাদকসেবন করে পাগলামী করতে গিয়ে পুলিশে থাকে সতর্ক করে দেয়। খবর পেয়ে বাহুবলের কিছু সাংবাদিকরা তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেন। সানু আর মাদক সেবন করবেও না, মাদক বিক্রিও করবে না বলে জানায়।
কিন্তু সানু মাদকের নেশা ছাড়তে পারেনি। একটি ওষুধ কোম্পানীতে চাকুরীর দোহাই দিয়ে সে ইয়াবা পাচারে ব্যবস্থ থাকত। এ অভিযোগে ওষুধ কোম্পানী থেকেও তার চাকুরী চলে যায়।
তার বিরুদ্ধে রয়েছে নারী নির্যাতন, টাকা আত্মসাৎ ও চাদাবাজীর অভিযোগ। সে ২০০০ সালে বাহুবল উপজেলা শিবিরের সেক্রেটারী ছিল। এর আগে চুনারুঘাটে শিবিরের সেক্রেটারী ছিল।
সেই ইয়াবা সেবনকারী আজিজুল হক সানু হবিগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ফেরামের সভাপতি এমদাদুল হক সোহেল কর্তৃক তাকে বাহুবল উপজেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ঘোষনা করেন। তাকে এ পদে দিতে অস্বীকৃতি করেছেন কমিটির অনেক সদস্যই। এমনকি সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ নুর উদ্দিনও কমিটি দেয়ার ফরমে স্বাক্ষর করেননি।
নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তাকে থানার ভিতর প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সে এখন হয়তো আর থানায় আসেনা।