মোঃ রাসেল মোল্লা, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার জনগুরুত্বপুর্ণ রাস্তা সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানে স্থানে সৃষ্ট গর্তে পড়ে প্রায় বিকল হচ্ছে যানবাহন। লুনা পলিমার ইন্ড্রাষ্টিজ লিমিটেড এ সড়কের পাড়াগাঁও এলাকায় বাঁধ দিয়ে পানি নিস্কাশনের পাইপ লাইন বন্ধ করে দেয়। তাতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এখানে প্রতিনিয়তই হাঁটু সমান পানি জমে থাকে। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। পাানির নিচে সেই সকল গর্তে উল্টে পড়ছে যানবাহন। ঘটছে দুর্ঘটনা। ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সড়কটি দ্রুত পূনরায় সংস্কার করার জন্য দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জের ভুলতা ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়নে অর্ধশত গ্রামের মানুষ নিত্য প্রয়োজনে বেহাল দশার এ সড়ক দিয়ে অতিকষ্টে উপজেলা কমপ্লেক্স, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রূপগঞ্জ থানা, রূপগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিস, উপজেলা ভূমি অফিস, সরকারি মুড়াপাড়া কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ অফিসে আসা যাওয়া করে থাকেন। চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়েই তারা বাধ্য হয়ে এ সড়কে চলাচল করছেন। বর্তমানে সড়কের অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। কার্পেটিং ওঠে যাওয়া অংশে ইটের সলিং করে জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকম সড়কটি চালু রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার করা হয়নি। সড়কের স্থানে স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতেই সেই গর্তে পানি জমে থাকে। যানবাহন চলাচলের সময় গর্তের পানি ছিটে যাচ্ছে পথচারী ও দোকানের ক্রেতা-বিক্রেতাদের গায়ে। এছাড়া বেহাল এই সড়কে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা । চরম দুর্ভোগে শিকার হচ্ছেন পরিবহনের চালক ও যাত্রীরা।
পাড়াগাঁও গ্রামের ইকবাল হোসেন বলেন, ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কের পিচ উঠে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জনজীবনে বেড়েছে চরম দুর্ভোগ। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি খানা খন্দে পরিণত হয়েছে।
আড়াইহাজার উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের লিলি বেগম মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন রূপগঞ্জের বাড়ৈইপাড় গ্রামে। সেই সূত্রে তিনি এই সড়কে প্রায়ই আসা যাওয়া করেন। পাড়াগাঁও এলাকায় এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় তাঁর । তখন তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজারের উন্নয়ন হয়েছে ব্যাপক। কিন্তু ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কের বেহাল দশায় সরকারের এখানকার সকল উন্নয়ন ভেস্তে যেতে বসেছে।
লুনা পলিমার ইন্ড্রাষ্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল হোসেন তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সড়কের পানি নিষ্কাশন বন্ধে কোনো বাঁধ দেয়া হয়নি। তবে কেউ বাঁধ দিয়ে থাকলে তা দ্রুত সরিয়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কের সংস্কার কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শিগগিরই সড়কের সংস্কার কাজ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সামিউল কাদের খান বলেন, ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কটি কিছু দিন পরপর সংস্কার কাজ করা হলেও সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় তা বিনষ্ট হয়েছে যাচ্ছে। সড়কের আশপাশের শিল্প প্রতিষ্ঠান ও লোকজন সড়কের পানি নিস্কাশনের ড্রেন বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় জটিলতা বাড়ছে। তবে আগামী দুই/তিন মাসের মধ্যে ভুলতা থেকে মুড়াপাড়ার মঙ্গলখালী পর্যন্ত চার কিলোমিটার তিন’শ ফুট দৈর্ঘের এ সড়ক আরসিসি করে পুনরায় নির্মাণ করা হবে। সড়কের বাকি অংশ পরবর্তীতে নির্মাণ করা হবে।