সনদের দাবীতে চলছে বার কাউন্সিল কার্যালয়ে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের অনশন

প্রকাশিত: ৩:৫৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২০

অপরাধ ডেক্স রিপোর্টঃ-

সনদের দাবীতে চলছে বার কাউন্সিল কার্যালয়ে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের অনশন। বাংলা‌দেশ শিক্ষান‌বিশ আইনজীবী সমন্বয় সংগ্রাম প‌রিষ‌দের ডা‌কে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা অনশন করেছে। আজ(৭ জুলাই) মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় এ অনশন কর্মসূচী শুরু হয়। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের সামনে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য এ অনশন কর্মসূচী পালন করছে।

জানা যায়, শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের আইন পেশায় তালিকাভূক্তির দীর্ঘ পরীক্ষা জট ও বর্তমান উদ্ভুত করোনা ভাইরাস জনিত কারনে তাঁদের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বার কাউন্সিলের নিয়ম অনুসারে বছরে দুইটি আইনজীবী তালিকাভূক্তির কথা থাকলেও তা সঠিকভাবে পালন হচ্ছে না। এমনকি মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে প্রতি ক্যালেন্ডার ইয়ারে একটা পরীক্ষা সমাপ্তের কথা থাকলেও সেটাও সঠিকভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে না। ফলে এ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের নেমে এসেছে দূর্ভোগ। ফলে প্রিলি পাশকৃত শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের রিটেন ভাইভা মওকুফ করে গেজেটের মাধ্যমে আইনজীবী অন্তর্ভূক্তির জন্য আচটজকের এ অনশন কর্মসূচী পালন করছে তাঁরা।

শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের দাবী- যেহেতু বর্তমান করোনা পরিস্থিতে ২০১৭ ও ২০২০ সালের এমসিকিউ উত্তীর্নদের রিটেন ভাইভা পরিক্ষা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেটা কেউ জানে না। তাই প্রিলি পাশকৃত২০১৭ এবং ২০২০ সালের শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের গেজেটের মাধ্যমে সনদ দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে ঢাকার শিক্ষানবিশ আইনজীবী আইনুল ইসলাম বিশাল বলেন, The Bangladesh Legal Practitioners and Bar Council Order, 1972 এর Article 40(1) এবং 40(2)(m) অনুযায়ী গেজেট বা প্রজ্ঞাপন দ্বারা ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উর্ত্তীর্ণদের সনদ প্রদান করতে কোনো বাধা নাই। উপরোক্ত দুইটি অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উর্ত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে পারেন।

শিক্ষানবিশ আইনজীবী সুমনা আক্তার লিলি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আইনের ছাত্র ছিলেন, তিনি সারাজীবন মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। কিন্তু আজ আমরা জাতির পিতার বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, তিন বছর একটি পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছি।

তিনি আরও বলেন, বার কাউন্সিলের বর্তমান কমিটি যেহেতু এখন পর্যন্ত কোনো এনরোলমেন্ট পরীক্ষা পুরোপুরি সম্পন্ন করতে পারেনি এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনিশ্চিত সেহেতু ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণদের লিখিত ও ভাইভা মওকুফ করে গেজেট প্রকাশ করে ২০২০ সালেই সনদ প্রদান করা হোক। মুজিব শতবর্ষ থেকেই আপিল বিভাগের রায় কার্যকর করা হোক।

এ বিষয় খুলনার শিক্ষানবিশ আইনজীবী মোঃ রায়হান আলী জানান- উন্নত বিশ্বে অর্থনীতি চাঙ্গা সহ জনগনের জীবন,মান উন্নয়নে কত কিছু শীথিল হচ্ছে তথাপীয় আমাদের দেশেও হচ্ছে। অবহেলীত শিক্ষিত বেকার শিক্ষানবিশ আইনজীবী (প্রিলি পাশকৃত ২০১৭ও ২০২০) এদেশের উন্নয়নে অংশ নিতে চায়। এদেশ করোনার হাত থেকে কবে মুক্তি পাবে তার নিশ্চয়তা নেই। ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বার কাউন্সিলের সম্মানিত সদস্যদের করোনা কালীন একটু মানবিক দৃষ্টি দিয়ে প্রিলি পাশকৃতদের রিটেন,ভাইভা মওকুফ করতঃ গেজেটের মাধ্যমে সনদ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে আমরা সহযোগীতা চাচ্ছি।

উল্লেখ্য,এই শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সারা দেশে গেজেটের মাধ্যমে সনদের দাবীতে একযোগে গত ৯জুনে দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে ছিলেন। এছাড়া একই দাবীতে গত ৩০ জুন ঢাকা প্রেসক্লাবে প্রেস কনফারেন্স করেন ও সারাদেশে জেলা ভিত্তিক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছিলেন।




error: Content is protected !!