উখিয়া হলদিয়া পালং এর চেয়ারম্যান শাহ আলমের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হলদিয়া পালংবাসীর মানববন্ধন

প্রকাশিত: ১০:২২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২০

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়া উপজেলায় এনজিওর ২৫% অর্থ ব্যয় প্রকল্পে উপজেলায় বিভিন্নভাবে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসতেছে এনজিওগুলো।
এর মধ্যে টয়লেট, নলকূপ, গ্যাস সিলিন্ডার ও রাস্তা মেরামত উল্যেখযোগ্য।

বিশেষত কক্সবাজার উখিয়া উপজেলার ৩নং হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ এসব ত্রাণ সহায়তায় উপকার ভোগী নিম্নবিত্ত গরীবরা বিভিন্নভাবে বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে।

প্রঙ্গত ৩নং হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ মদদে এনজিওগুলো স্বচ্ছভাবে কাজ করতে পারতেছে না বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

মূলত যারা উপকার ভোগী নিম্নবিত্ত গরীব রয়েছে তাদেরকে লিস্ট থেকে ছটাই করে বিত্তশালী চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকজনকে গরীব মানুষের হক লুটেপুটে খাচ্ছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য গত এক বছর যাবত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা উখিয়া উপজেলা তথা হলদিয়া পালং এর জনসাধারণকে গ্যাস সিলেন্ডারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করে আসছিল বিভিন্ন বেসরকারী সেবা সংস্থা ও এনজিও। বৃহত্তর জনস্বার্থে ও সকলের যাতায়াত সুবিধার কথা বিবেচনা করে গ্যাস বিতরণের কেন্দ্র হিসেবে ৩নং হলদিয়া পালং ইউনিয়নের প্রাণ কেন্দ্র মরিচ্যা বাজার কেন্দ্রিক মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়কে সিলেক্ট পূর্বক গ্যাস সিলেন্ডার বিতরণ করে আসছিল। এতে গ্যাস নিতে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের জনগণের যাতায়তসহ নানাবিধ সুবিধা ছিল, যেহেতু হলদিয়া পালং ইউনিয়নের জনগণ মরিচ্যা বাজার মুখি এবং বাজারের পাশে হওয়াতে গাড়ির সমস্যা হয় না।

তবে এনজিওর সংস্থাগুলো জানায় শাহ আলম চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রটি বাতিল করে চেয়াম্যানের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান শহীদ এটিএম জাফর আলম উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এতে করে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ড এর মধ্যে শুধুমাত্র দু’টো ওয়ার্ডের জনগণ সুবিধা ভোগ করবে কিন্তু বাকী ৭ ওয়ার্ড এর জনগণের গ্যাস আনতে গিয়ে নানাবিধ কষ্টের সম্মুক্ষীণ হবে। চেয়ারম্যানের মনোনীত গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণ কেন্দ্রটি জনশূন্য গ্রামাঞ্চলে হওয়াতে ৩০ কেজি সমপরিমাণ সিলিন্ডারটি অনেক বয়োবৃদ্ধ মা-বোনরা গাড়ি চলাচলের রাস্তা পর্যন্ত পৌছাতে একজন বহনকারী কূলির প্রয়োজন। যা নুন আনতে গিয়ে পান্তা ফুরানোর কথা। যা বিধবা অসহায়দের সাধ্যের বাইরে। যার দরুন সিলিন্ডারটি বাড়ি পৌছাতে ২শ থেকে আড়াইশ টাকা খরচ হবে।

গ্যাস সংগ্রহ করতে গিয়ে রীতিমত হয়রানীর স্বীকার হবে। অনেক গরীব অসহায় পরিবার গাড়ি ভাড়ার কারণে গ্যাস সংগ্রহ করতে যেতেও পারবেন না।

আমি মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সম্মানিত সভাপতি জনাব আমিনুল হক আমিন এবং প্রধান শিক্ষক জনাব নজরুল ইসলাম সাহেবের সাথে কথা বললে ওনারা জানান উক্ত গ্যাস সিলেন্ডার বিতরণে স্কুল কতৃপক্ষের কোন বিধিনিষেধ আরোপ করেন নাই এবং গ্যাস সিলেন্ডার বিতরণে সবসময় স্কুল কতৃপক্ষের সহযোগিতা অব্যাহত আছে বলে জানান।

হলদিয়া বাসীর সুবিধার্থে আমি আজকে উখিয়া উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় আমি মাননীয় ইউএনও মহোদয় ও উপজেলা পরিষদের মান্যবর চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য প্রদান করি। গরীব দুঃখী মানুষের বৃহৎ স্বার্থ চিন্তা করে আমি ওই গ্যাস সিলিন্ডারগুলো মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয় মাঠেই বিতরনের আহবান জানাই।

কিন্তু সভা শেষ করার পর আসার পথে উপজেলা পরিষদের নিচে হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। উপস্থিত সকলের সামনে আমি উক্ত বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে গেলে শাহ আলম আমার দিকে হামলার জন্য তেড়ে আসে। উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ আমাদেরকে শান্ত করে।

তৎক্ষনাৎ উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের বিপ্লবী সভাপতি উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হলে, তিনি তার তীব্র নিন্দা জানান। কার সাহসে এ জনবিচ্ছিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান একজন সিনিয়র মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ওপর শ্লীলতাহানির দুঃসাহস দেখায়, তার খুটির জোর কোথায়? তিনিও উক্ত ঘটনার তদন্ত পূর্বক অভিযুক্ত শাহ আলম চেয়ারম্যানকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী করেন।

উক্ত ঘটনা আমার এলাকায় জানাজানি হলে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করার জন্য আমি দ্রুত মরিচ্যা বাজারে মানববন্ধনের আয়োজন করি। উক্ত মানববন্ধনে আমি আমার উপর সংগঠিত ঘটনার তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমার ওপর শ্লীলতা হানির যে, নির্লজ্য দুঃসাহস চেয়াময়ান শাহআলম দেখিয়েছেন তার জন্য বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আহবান জানান। উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে এ নির্লজ্য চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
যে, চেয়ারম্যান একজন তার সিনিয়র উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে জনসম্মুখে শ্লীলতা হানির দুঃসাহস দেখায় তার খুটির জোর কোথায়? উখিয়া উপজেলাবাসী জানতে চাই। যিনি মায়ের জাতিকে সম্মান দিতে পারে না এবং এলাবাসীর স্বার্থ রক্ষা করতে পারে না তিনি কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে জনগনের প্রতিনিধি দাবী করেন? আমার বুঝে আসে না।

আমি কেটে খাওয়া গরীব, এতীম অনাথ ও উপকারভোগী হলদিয়া পালং ইউনিয়ন বাসীর পক্ষে কথা বলতে গিয়ে উক্ত চরিত্রহীন চেয়ারম্যানের শ্লীলতা হানীর শিকার হয়েছি, তাই আমি নির্লজ্য শাহ আলম চেয়ারম্যানের বহিষ্কার চাই।
ইনশাআল্লাহ অতিশীঘ্রই দূর্নীতিবাজ এ শাহ আলম চেয়ারম্যানের ন্যাক্কারজনক সব ঘটনার মুখোশ হলদিয়া বাসী উন্মোচন করবে।

আজকের মানববন্ধনে যারা উপস্থিত ছিল, বিশেষ করে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ ও অন্যান্য দলীয় নেতৃবৃন্দ, হলদিয়ার আপমার সাধারণ জনগণ, নারী, পুরুষ সহ সকলের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব। হলদিয়া বাসীর স্বার্থ রক্ষার্থে আমি নিজের জীবন বাজি রাখব সবসময়। ইনশাল্লাহ।

বিনীত
কামরুন্নেছা বেবি,
ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা)
উখিয়া উপজেলা পরিষদ
উখিয়া, কক্সবাজার।




error: Content is protected !!