এক বিলিয়ন ইউরো PPE’র (পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট) জন্য খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়ারল্যান্ডের স্বাস্হ্য অধিদপ্তর

প্রকাশিত: ৯:০৮ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২০

আব্দুল হান্নান জুন্নুন, আশারল্যান্ডঃ
HSE’র এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পল রেইড বলেন, ICU তে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে এবং আশা করা হচ্ছে এই বৎসর প্রায় ১ বিলিয়ন ইউরোর মত খরচ করা হবে পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্টের জন্য যা স্বাস্থ্য খাতে ব্যবহৃত হবে।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিন কোরিয়া থেকে প্রায় ১২০ মিলিয়ন মাস্ক আয়ারল্যান্ডে আসবে।
HSE’র সাপ্তাহিক কোভিড-১৯ সারসংক্ষেপ প্রদানকলে মিঃ রেইড বলেন, করোনা টেস্টিং এবং এর ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধেও উল্লেখযোগ্য ব্যয় হবে। এখনই যদি, টেষ্টিং এবং প্রতিরোধে যথেষ্ট পরিমানে খরচ করা না হয় তাহলে দীর্ঘমেয়াদে খরচের পরিমান অনেক বেশি হবে। তিনি আরো বলেন, আগামী তিন/চার মাস পরে খরচ বাড়বে না কমবে তা বলা অসম্ভব তবে আমাদের অনুমান বাৎসরিক ব্যয় এক বিলিয়নেরও বেশি হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রতি সপ্তাহে আয়ারল্যান্ডে ৯ মিলিয়ন মাস্কের প্রয়োজন হচ্ছে। যদি এই মাস্কগুলোকে এক সাথে লাগানো হয় তাহলে তা ১১ টি লিবার্টি হল (প্রায় ৫৯ মিটার/১৯৫ ফিট) ভবনের উচ্চতার সমতুল্য হবে। গত সপ্তাহে ৬০ টি ফ্লাইটে করে ১২ হাজার আইটেমের PPE (পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট) আয়ারল্যান্ডে পৌঁছেছে। PPE আইটেমগুলোর মধ্যে মাস্ক এবং গাউন খুব কম পাওয়া যাচ্ছে কারণ পৃথিবীব্যাপি মাস্ক এবং গাউনের চাহিদা অনুপাতে যোগান অনেক কম।
রেইড বলেন, তিনি আগামী সপ্তাহে একটি কমিটি গঠন করবেন। এই কমিটির কাজ হবে করোনা পরীক্ষার জন্য একটি মজবুত রূপরেখা প্রনয়ন এবং ১৮ই মে থেকে নিষেধাজ্ঞা উত্তোলনের পর করোনা ভাইরাস এর বিস্তর রোধে করণীয়গুলো নির্ধারণ করা। উল্লেখ্য, আয়ারল্যান্ডে আগামী ১৮ই মে থেকে ৫টি ধাপে নিষেধাজ্ঞা উত্তোলন করা হবে।
HSE আশা করছে এই মাসের শেষেই তারা করোনা প্রতিরোধে গুগুল প্লে ষ্টোর এবং এ্যাপেলের আ্যাপ ষ্টোরের জন্য একটি আ্যাপ সাধারণ জনগনের জন্য উন্মুক্ত করতে পারবে। এই আ্যাপটি পুশ নটিফিকেশনের মাধ্যমে তথ্য প্রেরণ করে করোনার বিস্তর প্রতিরোধে সহায়তা করবে।
মিস্টার রেইড বলেন, ইতিমধ্যে আয়ারল্যান্ডের ৫৭৭ টি নার্সিং হোমের ৩০,০০০ কর্মী এবং ২৮,০০০ বাসিন্দাদের করোনা টেষ্ট সম্পন্ন হয়েছে।
আয়ারল্যান্ডে প্রায় ১,৭০০ শরনার্থী রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই রুম শেয়ার করে থাকছেন এবং একই পরিবারের নয় এমন সদস্যদের সাথে তারা রুম শেয়ার করছেন। প্রধান মেডিকেল নির্বাহী কর্মকর্তা ডাঃ টনি হলোহান বলেছেন যে, শরনার্থীরা যে পরিস্থিতিতে বসবাস করছে, তাদের পক্ষে সামাজিক দুরত্ব/শারীরিকভাবে দুরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়। যদিও স্বাস্থ্য বিভাগ শরনার্থীদের নিরাপত্ত্বার স্বার্থে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এর সাথে ঘনিষ্টভাবে কাজ করছে এবং প্রয়োজনার্থে যদি কোন শরনার্থীর সম্পূর্ণ আলাদা থাকার প্রয়োজন হয় তার ব্যবস্থা করছে।
HSE’র এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পল রেইড বলেন, আয়ারল্যান্ডে করোনা টেষ্টিং ঠিকভাবেই চলছে এবং আগামী সপ্তাহ থেকে প্রতি সপ্তাহে ১০০,০০০ করোনা টেষ্ট করা সম্ভব হবে। এই মুহুর্তে ল্যাবগুলোতে প্রত্যেকদিন ১৫,০০০ করোনা টেষ্ট করার ধারণক্ষমতা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আয়ারল্যান্ডের স্বাস্থ্য সেবা এখন এমন অবস্থানে রয়েছে যে, করোনায় আক্রান্তদের সেবা প্রদানের পাশাপাশি অন্যান্য রোগীদের জন্য সেবা শুরু করতে পারবে নিরাপত্ত্বা বজায় রেখে। ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং হার্ট এর রোগী (বিশেষ করে যাদের ট্রান্সপ্লান্ট প্রয়োজন) এমন রোগীদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যদিও ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং হার্ট এর রোগীদের এই সেবা প্রদান করার কাজটি সহজ হবে না কারণ প্রতিটি হাসপাতলে করোনায় আক্রান্তদের পরিমান ৮০ ভাগের নিচে থাকতে হবে অন্যথায় হাসপাতালগুলোকে অনেক বেগ পেতে হবে।




error: Content is protected !!