কলাপাড়ায় ভূমি অফিসের জন-গুরুত্বপূর্ন ৩০০ নথিপত্র উলিপোকার পেটে চলে গেছে,অজানা আতংক,শংকা ও দৃশ্যমান দুর্নীতির গন্ধ॥

প্রকাশিত: ১১:৩৬ অপরাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২০

রাসেল কবির মুরাদ,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি; কলাপাড়ায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সার্ভেয়ার শাখার প্রায় তিন শতাধিক জন-গুরুত্বপূর্ন
নথিপত্র উলিপোকায় কেটে নষ্ট করে ফেলেছে। এরফলে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথাযথ দায়িত্বœ পালন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিনষ্ট হয়ে যাওয়া নথিপত্রের মধ্যে ভূমিহীন হিসেবে সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত
পাওয়া জমির কেস নথি ছিল। ঔসব নথিতে অনেক দরিদ্র ভূমিহীন পরিবার সরকারের দেয়া জমি ভোগদখলে থাকলেও তাদের নামে কবুলিয়ত রেজিষ্ট্রীসহ নতুন খতিয়ান সৃজন না হওয়ায় বন্দোবস্ত পাওয়া জমির মালিকানা নিয়ে অজানা এক আতংক ও শংকা দেখা দিয়েছে।

নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্রে জানা যায়, কলাপাড়াকে দেশের দক্ষিনাঞ্চলের উন্নয়নের রোলমডেল এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পায়রা সমুদ্র বন্দর,একাধিক কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কুয়াকাটা পর্যটন এলাকা, বানৌজা
শের-ই-বাংলা নৌ ঘাঁটি স্থাপন, সাবমেরিন ল্যান্ডিং ষ্টেশন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মানের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলায় এখানকার জমি জমার দাম হু হু করে বেড়ে গেছে বহুগুন। সরকারী খাস জমিতে দখল প্রবনতা বেড়েছে প্রভাবশালীদের। এক শ্রেনীর অসৎ ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে কুয়াকাটা পর্যটন, পায়রা সমুদ্র বন্দর সহ উন্নয়ন কাজ চলমান এলাকার মৌজা সমূহের জমির আর এস, এসএ খতিয়ান সমূহের বেশ কিছু তথ্য, মূল বালাম বই থেকে উধাও হয়ে গেছে। পৃষ্ঠা ছেড়া ও কাটাকাটি করে লেখা দৃশ্যমান হয়। এছাড়া ১৯৬৫ ও ১৯৭০ এর প্রলয়ংকারী বন্যায় ভূমি অফিসের গুরুত্বপূর্ন কাগজ, বালাম,রেজিষ্ট্রার, নথিপত্র খোয়া যাওয়ার সুযোগে স্থানীয় ভূমি অফিস কানেকশনে
সৃষ্টি করা হয়েছে জমির জাল-জালিয়াতী কাগজপত্র। এনিয়ে মামলা মোকদ্দমা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত পাওয়া অনেক দরিদ্র
পরিবারের জমিতে প্রভাবশালী ভূমি দস্যুদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ায় অনেক মৌজার সরকারী জমি নিয়ে ঝগড়া, ফ্যাসাদ, মামলা চলমান আছে। এরকম সময় সরকারী
বন্দোবস্ত পাওয়া জমির তিন শতাধিক কেস নথি উই পোকা কেটে নষ্ট করে ফেলায় হতদরিদ্র ভূমিহীন পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে অজানা এক আতংক ও শংকা।

দরিদ্র মানুষের বন্দোবস্ত পাওয়া ৩০০ কেস-নথি উলিপোকায় কেটে বিনষ্ট করেছে না কি পরিকল্পিত ভাবে অযতœ, অবহেলায় ইচ্ছাকৃত ভাবে সংরক্ষন না করে ওইসব জন-গুরুত্বপূর্ন কাগজ, দলিল-দস্তাবেজ নষ্ট করা হয়েছে, এমন হাজারো প্রশ্ন নিয়ে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার দাবী স্থানীয়দের, যাতে ওইসব বন্দোবস্তের
বিপরীতে নতুন কাগজ সৃষ্টি করে দরিদ্রদের পাওয়া শেষ আশ্রয়টুকুও হাতছাড়া না হয়।

কলাপাড়া ভূমি অফিস সার্ভেয়ার মো: হুমায়ুন কবির বলেন, আমার যোগদানের পূর্বের ঘটনা এটি। আমি যোগদানের পর ব্যবহার অনুপযোগী টিনশেড কক্ষের এসব নষ্ট হওয়া জন-গুরুত্বপূন কাগজপত্র দেখে এসিল্যান্ড স্যারকে সার্ভেয়ার শাখাটি স্থানান্তরের জন্য বহুবার অনুরোধ করেছি, শত বলার পরও টিনশেড
ব্যবহার অনুপযোগী ঘরেই সার্ভেয়ার শাখা আছে।

কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষদের জানানো হয়েছে। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এছাড়া ব্যবহার অনুপযোগী টিনশেড কক্ষ থেকে সার্ভেয়ার শাখা অন্যত্র স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।




error: Content is protected !!