কাকাইলছেওয়ের রাহেলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ নিহত ১ আহত অর্ধ-শতাধিক, বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাংচুর আটক ৩৪
নিজস্ব প্রতিনিধি- আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেওয়ের রাহেলা গ্রামে আজ মঙ্গলবার সকাল অনুমানিক ৯ টায়, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে অর্থাৎ কাটা ধানের মুরি রাখাকে কেন্দ্র করে প্রায় ১ ঘন্টা ব্যাপি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঘটনাস্হলেই ফিকলের আঘাতে কামাল মিয়া (৩৫) নামে এক যুবক নিহত ও অর্ধ-শতাধিক আহত হয়েছে। নিহত কামাল মিয়া একই গ্রামের ইয়াকূব আলীর পুত্র। সংঘর্ষে দু’পক্ষের কমপক্ষে দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়। এদিকে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এদিকে সংঘর্ষের পর বাড়িঘরে লুটতরাজ ও ভাংচুর চালায় লোকজন। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়,
আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেওয়ের রাহেলা গ্রামের বাসিন্দা আনু মিয়া ও বর্তমান ইউ পি সদস্য শের আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে গত সোমবার বিকালে কাকাইলছেও বাজারে ভুঁইয়া মার্কেট এলাকায় ইউপি সদস্য শের আলী এবং কামাল মিয়ার মধ্যে বাক বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘঠনা ঘটে। নিহত কামাল মিয়ার পিতা ইয়াকূব আলী জানায়, এরই জের ধরে পরদিন অর্থাৎ আজ মঙ্গলবার সকাল অনুমানিক ৯ টায় তার পুত্র মোঃ কামাল মিয়া (৩৫) পার্শ্ববর্তী হাওরের কৃষিজমি থেকে ধান কেটে মুরিগুলো একটি স্হানে স্তুপ করে রাখতে গেলে একই গ্রামের বাসিন্দা ও বর্তমান ইউ,পি সদস্য মোঃ শের আলী সহ তার
স্বজনরা বাঁধা প্রদান করে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ডা বাঁধে। কিছুক্ষণ পর উভয়পক্ষের লোকজন বাক-বিতন্ডায় অংশ নেয়। এরই এক পর্যায়ে দু’পক্ষের লোকজন রামদা, ফিকল, লাঠি সহ নানা ধরণের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে মোঃ কামাল মিয়া (৩৫) নামে এক যুবক ফিকলের আঘাতে ঘটনাস্হলেই নিহত হয়। সে একই গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইয়াকূব আলীর পুত্র। অনুমানিক প্রায় ১ ঘন্টব্যাপি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আরও প্রায় অর্ধ-শতাধিক লোক আহত হয়। সংঘর্ষে কমপক্ষে দেড় শতাধিক নারী পুরুষ অংশ নেয়। খবর পেয়ে আজমিরীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্হলে উপস্হিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পর পুলিশ নিহত কামাল মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে আজমিরীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে। এদিকে, গুরুতর আহতদের আশংখাজনক অবস্হায় আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। এরা হল, নিহত যুবক মোঃ কামাল মিয়ার পুত্র শিবলু মিয়া (১৮) পিতা মোঃ ইয়াকূব আলী (৬৫) আনোয়ার হোসেনের পুত্র আতর আলী (৩২)মৃত- ময়না মিয়ার পুত্র আল আমিন মিয়া (২৮) মুজিবুর রহমানের পুত্র ফয়েজ মিয়া (২২) এ ছাড়া, উসমান মিয়া (৬০), মোখলেছ মিয়া (৩৫), আলফাত (৩০), জহির (৩৫), ইয়াহিয়া (৪০), কাজল মিয়া (৪০) কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
আহত অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে, সংঘর্ষের পর বাড়িঘরে লুটতরাজ ও ভাংচুর চালায় লোকজন। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন- লাশের সুরত হাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে পাটানো হয়েছে।
সংঘর্ষে জড়িত ৩৪ জনকে আটক করা হয়েছে৷ এরা হল, মৃত- ইসমাঈল মিয়ার পুত্র বজলুর রহমান (৫৬) মৃত- হাসিন মিয়ার পুত্র আশন মিয়া (৪৫) মৃত- শামসুল হকের পুত্র মুসা মিয়া মৃত- আব্দুল বাতেনের পুত্র সাদ্দাম হোসেন (৩২) এলাছ মিয়া (২২) রজব আলীর পুত্র ডালিম (৩০) মৃত- নুর মিয়ার পুত্র দিলোয়ার হোসেন (৩৫) নবী হোসেনের পুত্র সালাউদ্দিন (২৫) প্রমূখ।
এ ব্যপারে এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।