কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত দিয়ে। পাকিস্থান আমলে অসচেতন বাঙালী, ঘুমন্ত জাতিকে জাগ্রত, অধিকার আদায়, এই জাতিকে সচেতন করার জন্য সেই সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে নিয়ে এসেছিলেন ছাত্র সমাজকে। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সঠিক সিদ্ধান্ত নিতেন, এই ঘুমন্ত জাতিকে জাগ্রত করতে আমাদের সমাজের সব চেয়ে সচেতন, সব চেয়ে জাগ্রত যে সমাজ, সেই ছাত্র সমাজকে দিয়েই কাজে লাগাতে হবে এবং সেদিনই এই ছাত্র সমাজকে নিয়ে গঠন করলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগকে হতে হবে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক ও শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড। গতকাল সোমবার ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক মঞ্চে এক আলোচনা সভায় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে যতগুলো সংগঠন আছে রাজনৈতিক সংগঠন তার মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবচেয়ে দীর্ঘপেয়ী সংগঠন। এই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন থেকে শুরু করে, বাংলাদেশে পাকিস্থান শাসক থেকে শুরু করে আমাদের মাতৃভাষার জন্য যে আন্দোলন হয়েছিলো সবই ছাত্রলীগ সংগঠনের জন্য হয়েছিলো। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো যে মুক্তিযুদ্ধে হাজার হাজার আমাদের যে তরুন সমাজ আছে তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে তাদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলো, সেখানেও ভুমিকা রেখেছিলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই ছাত্রলীগ বাংলাদেশে একটি ঐতিয্যবাহী সংগঠন। ছাত্রলীগ দেশে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভবিষ্যত প্রজন্ম। আমাদের পরে যেটাই কিন্তু আসবে সেটা ছাত্রলীগ সংগঠন থেকেই আসবে, তারাই দেশ শাসন করবে, এখান থেকেই হবে রাজনৈতিক নেতা, এখান থেকেই হবে জনপ্রতিনিধি, এমপি, মন্ত্রী সবই হবে ছাত্র রাজনীতি থেকে। সে কারনে ছাত্রলীগকে জানতে হবে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ছাত্রলীগের ইতিহাস, বাঙালী জাতির ইতিহাস, আওয়ামীলীগের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে। যদি ইতিহাস না জেনে শুধু শ্লোগান দিয়ে ছাত্রলীগ করলে নেতৃত্ব তৈরী হবে না এবং সে নেতাও হওয়া যাবে না। ছাত্র সমাজের ধর্য্য নেই, নেতা হতে হলে ধর্য্যশীল হতে হবে, রাজনৈতি অনুষ্ঠানে বক্তব্য শুনতে হবে। মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগকে নতুনধাতে গড়তে হবে, শুধু ধারায় ছাত্রলীগ হলে সংগঠন চলবে না। ছাত্রলীগকে হতে হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সৈনিক। মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার কারামুক্তির দাবীতে রাজপথে নিজের জীবন বাজি রেখে মিছিল সংগ্রাম করেছে, সেই ছাত্রলীগ হয়ে কুষ্টিয়া ছাত্রলীগকে সততার সাথে কাজ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ যে আমাদের অহংকার সেটা জানতে হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীরা স্বাধীনতাকে বিকৃত করছে, সমাজে বিতরক তৈরী করে, বিভংশ কথা বলে, এই কথা বলার দৃষ্টতা, ৭১এর পরাজিত শক্তি এই সুযোগটা পাচ্ছে কারন আমাদের ছাত্রসমাজ, আমাদের ছাত্রলীগ, আমাদের যুবলীগ, তারা স্বাধীনতার ইতিহাসটা সঠিকভাবে এখন পর্যন্ত পড়ে নাই, বঙ্গবন্ধুর জীবনী পড়ে নাই, মুক্তিযুদ্ধের যে ইতিহাস সেটা তারা সঠিকভাবে ধারন করতে পারে নাই বলে, স্বাধীনতা বিরোধীরা এই দু:স্বাহস পায়। বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রলীগ তোমরা স্বাধীনতা দেখো নাই, তোমাদেরকে ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে। সে সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কি কি ভুমিকা রেখেছিলো। মাতৃভাষার জন্য আমাদের যুদ্ধ করতে হয়েছে, মায়ের ভাষার জন্য আমাদের লড়াই করতে হয়েছে, জীবন দিতে হয়েছে, অনেক মা-বোনের ইজ্জ্বতের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিলো। আজ আমরা স্বাধীন ভাবে বেঁচে আছি একটি মানুষের জন্য তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আলোচনা সভায় সভায় সভাপতিত্ব করেন, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিঠির সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক, সার্বিক ভাবে পরিচালনা করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া পৌর মেয়র আনোয়ার আলী, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী, কুষ্টিয়া-১ আসনের সাংসদ আঃ কাঃ মঃ সরোয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাংসদ ব্যারিষ্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শেখ হাসান মেহেদী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাযহারুল আলম সুমন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী মুর্তজা খসরু, ইয়াছির আরাফাত তুষার। অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ সদর উদ্দিন খাঁন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ রবিউল ইসলাম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক স্বপন কুমার ঘোষ, প্রকৌশলী ফারুকউজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন রাজু, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আতাউর রহমান আতা সহ দলীয় অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটির নেতাকর্মী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আতিকুর রহমান অনিক ও শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ এর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতাকর্মী সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায়। বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তলন শেষে কোরআন তেলোআত সহ গীতা পাঠ করা হয়। পরে বিগত কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সকল সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে মঞ্চে ডেকে সম্মাননা প্রদান করেন। এছাড়া শান্তির প্রতিক পায়রা উড়িয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে কেক কেটে ছাত্রলীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেন।