কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে বন্দিদের মাঝে সার্টিফিকেট ও সেলাই মেশিন বিতরণ

প্রকাশিত: ১২:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২২

কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।

কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে বন্দিদের মাঝে সার্টিফিকেট ও সেলাই মেশিন বিতরণ করলেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাশক সাইদুল ইসলাম। গত বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক পরিদর্শনে এসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন প্রকল্পের সহায়তায় কারাবন্দীদের প্রশিক্ষণের জন্য মহিলা কয়েদিদের মাঝে সেলাই মেশিন প্রদান করেন। অপরদিকে ইলেকট্রনিক্স ও হাউজ ওয়ারিং শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপ্ত হাওয়াই পুরুষ কয়েদিদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. নাসরিন বানু ও কুষ্টিয়া জেল সুপার তায়েফ উদ্দিন মিয়া।

উক্ত অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহা. তায়েফ উদ্দিন মিয়া বলেন, কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে প্রশিক্ষণ চলমান ছিল। করোনার কারণে বেশ কিছুদিন প্রশিক্ষণ সীমিত আকারে ছিল। এখন আমরা আবার স্বাভাবিক প্রশিক্ষণ চালাচ্ছি। আমাদের মূল লক্ষ্য কারাবন্দিদের সংশোধন ও পুনর্বাসন করা। এই লক্ষ্যে বেশ কিছু কমর্সূচি আমরা হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইলেকট্রিক, ইলেকট্রনিক ও হাউজ ওয়্যারিং প্রশিক্ষণ। এ ক্ষেত্রে আমরা যাদের প্রশিক্ষণ দেব তারা যাতে বাইরে গিয়ে এই প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে পেশা গড়তে পারে। তারা রাষ্ট্রের বোঝো নয়, তারা হবে রাষ্ট্রের সম্পদ এটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।

বন্দিরা যাতে সাজা ভোগের পর মুক্তি পেয়ে সংশোধন ও পুনর্বাসিত হতে পারেন, নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন এবং উদ্যোক্তা হয়ে উঠেন সেই লক্ষ্যে সরকার দেশের প্রতিটি জেলা কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেই পরিকল্পনায় বন্দিদের বিভিন্ন রকম কর্মমুখী কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে মুক্তির পর তাদের পুনর্বাসন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে দেশের যে সব কারাগারে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতে সক্ষমতা রয়েছে সেই সকল কারাগারে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা। সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন কারাগারে নারী ও পুরুষ বন্দিদের জন্য নানা রকম কর্মমুখী কারিগরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে কারাগার কর্তৃপক্ষ।

তিনি আরো বলেন, কারাগার থেকে যে সব কারাবন্দি ৬ মাস অথবা ১ বছর পর মুক্তি পাবেন তাদের বিভিন্ন কর্মমুখী কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিয়ে সনদও প্রদান করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে বন্দিদের অনুরোধ ও আগ্রহের কথা বিবেচনা করে কারাগার থেকে যারা ৩ থেকে ৪ বছর পর মুক্তি পাবেন যেসব বন্দিদেরও এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি যারা মুক্তি পাবে তাদের এই প্রশিক্ষণের জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রশিক্ষণ নেওয়া বন্দিদের সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে প্রাথমিক মূলধন ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেওয়া হয়। তবে সীমাবদ্ধতার কারণে সবাইকে সহযোগিতা করা সম্ভব হয় না। কারাগার থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া মুক্তিপ্রাপ্ত ১০ শতাংশ বন্দিকে বর্তমানে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষকদের সহযোগিতায় পুরুষদের দেওয়া হচ্ছে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন ও মৎস চাষ পদ্ধতির প্রশিক্ষণ। জেলা মহিলা অধিদপ্তরের প্রশিক্ষকদের সহযোগিতায় নারী বন্দিদের দেওয়া হচ্ছে বিউটিফিকেশন (বিউটিপার্লার) এবং সেলাই মেশিনের মাধ্যমে পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ। এছাড়াও জেলা কারাগারের নিজস্ব প্রশিক্ষকের মাধ্যমে পুরুষ বন্দিদের দেওয়া হচ্ছে ইলেকট্রিক, ইলেকট্রনিক ও হাউজ ওয়্যারিংয়ের প্রশিক্ষণ।




error: Content is protected !!