কুষ্টিয়া পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলীর অবৈধ অর্থ-বাণিজ্য নিয়ে চলছে প্রতিবাদের ঝড়
কে এম শামীম যশোর কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কুষ্টিয়া পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী পীযূষ কৃষ্ণ কুন্ডুর অবৈধ অর্থ-বাণিজ্য নিয়ে চলছে প্রতিবাদের ঝড়। স্বজন প্রীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উৎকোচ নিয়ে হাতেগোনা তার নিজস্ব কয়েকজন ঠিকাদারকে কাজ প্রদান করাকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া জেলা জুড়ে তাকে নিয়ে এখন ‘টক অফ দ্যা টাউন’ এ পরিণত হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার বিষয়ে গত ২৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক নির্দেশনা দেন।
ঐদিন সভা শেষে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব মো. আসাদুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আমাদের অনেক প্রকল্প, বিশেষ করে নির্মাণ প্রকল্পে দেরি হয়ে যায়। এই দেরির একটা কারণ হলো একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনেকগুলো কাজ পেয়ে থাকে। মুষ্টিমেয় প্রতিষ্ঠান কাজ করে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কে কতগুলো কাজ পেয়েছে, কাজ সময়মতো শেষ করেছে কি না, কোন সময় শেষ করেছে, এসবের একটি তালিকা সব মন্ত্রণালয় তৈরি করবে এবং তা প্রকাশ করতে হবে। (চলমান) কাজ শেষ করলে পরের কাজ পাবে। কাজ শেষ না হলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের পরবর্তী কাজ পাবে না।
অথচ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলমান কাজ থাকা সত্বেও কোটি কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নামেমাত্র কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একের পর এক কাজ দিয়ে যাচ্ছেন । এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু সাথে বার বার আলাপ করেও কোন সুরাহা হয়নি।
শনিবার সকালে কুষ্টিয়ার পুনাক রেষ্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রিয়াজ মালিথা পীযূষ কৃষ্ণ কুন্ডু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, কাজ চলমান থাকা সত্বেও সালেহ আহমেদ ২টি, লিয়াকত আলীর নামে ৪টি, নাসির উদ্দিন মোল্লার নামে ৩টি, সৈকত এন্টারপ্রাইজের নামে ২টি, ন্যাচারাল ২টি, ন্যাশোন টেক ৩টি তাজোওয়ার ট্রেড সিস্টেম লিঃ ২টি ১০%২০% কাজ সম্পন্ন হয়নি, তার পরেও নতুন করে ন্যাচারাল সালে আহমেদ ও ন্যাচারাল লিয়াকত আলীকে আবারো কাজ দিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী পীযূষ কৃষ্ণ কুন্ডু । এতেই প্রমাণিত হয় যে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী তাদের সাথে আঁতাত করে পুনরায় তাদেরকে শত শব্দ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। সেই সাথে কুষ্টিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। অন্যদিকে বাকি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো কাজ না পেয়ে হতাশার মধ্যে রয়েছেন ।
সুত্র ১! প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের স্মারক নং – ০৩০৭৩০৪৬২১০০০০১২০১৮ ২৫৯ তারিখ ৩রা, অক্টোবর ২০১৯ খৃস্টাব্দ। কিন্তু কুষ্টিয়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে বৃদ্ধা আঙ্গুগুলী দেখিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু । ঠিকাদার রিয়াজ মালিথা ঐ দিন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আমরা তার সাথে আঁতাত না করার কারনে কাজ পায়নি। এতে দিন দিন আমরা মারাত্মক আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। অন্যদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী পীযূষ কৃষ্ণ কুন্ডু টাকার পাহাড় জমাচ্ছেন এবং অপরদিকে তার নিজস্ব কিছু ঠিকাদার পূর্বের কাজ অসমাপ্ত রেখেই অর্থ দিয়ে তার কাছ থেকে কাজ নিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর ঘুষ বানিজ্য যদি ঠেকানো না যায়, তাহলে বাকি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলো চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে । নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডুর ঘুষ বানিজ্য বন্ধ করতে ভুক্তভোগীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট উর্ধবতন কর্মকর্তাদেরকে জরুরী ভিত্তিতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে তিনি সংবাদ সম্মেলেনের মাধ্যমে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।