কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়া কুমারখালীতে দেশী মদের দোকানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উক্ত মদের দোকানে নিত্যপণ্যের মতো ভোর থেকে শুরু করে রাত অবধি বিক্রি হচ্ছে। সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ঘটিকা পর্যন্ত মদের দোকান খোলা রাখার নিয়ম থাকা সত্ত্বেও উক্ত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মদ এর ডিলার সুরঞ্জিত কুমার রায় ক্রেতাদের কাছে ভোর থেকে শুরু করে রাত অবধি লাইন ধরে দেশীয় মদ বিক্রি করে যাচ্ছেন।
দোকান খোলার নিয়ম সকাল দশটা থাকলেও উক্ত নিয়মকে অগ্রাহ্য করে ভোর থেকেই মদ বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেন। ক্রেতাদের লাইন দেখলে মনে হয় এ যেন সাধারণ কোন পণ্য কেনার দোকান। কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যে লাইনে দাঁড়াচ্ছে তাকেই চাহিদা মত মদ দেওয়া হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাই নেশাখোর। নেশা করতেই তারা মদ কেনেন। স্থানীয় একটি সূত্র জানায় ভোর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এমন কারবার চলছে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কাপুড়হাট ঘেঁষা পান বাজারে সরকার অনুমোদিত সুরঞ্জিত কুমার রায়ের কুমারখালী দেশী মদের দোকানে (লাইসেন্স নম্বর-২) লাইনে দাঁড়িয়ে মদ কেনা দুই জনের সাথে কথা হলে তারা বলেন, প্রতি গ্লাস মদ ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। লিটার প্রতি ৪শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় বিক্রি করা হয়। কোয়াটার নিলে ছোট আড়াইশ গ্রাম কোমল পানীয় বোতলে দেয়া হয়। হাফ লিটার বা এক দুই লিটার সবই কোমল পানীয়র বোতলে দেওয়া হয়। তবে তাদের অভিযোগ দেশী মদের ভেতর পানি মিশিয়ে বিক্রি করেন সুরঞ্জিত কুমার রায়।
এদিকে কোনো মুসলমান ব্যক্তির কাছে দেশী মদ খাবার লাইসেন্স নেই। কিন্তু কুমারখালী দেশী মদের দোকানে প্রতিদিন শতাধিক মুসলমান মদ কেনেন। তাদের কোনো লাইসেন্স নেই। কোনরকম বাধা বিঘ্ন ছাড়াই তারা মদ কেনেন এবং তা দিয়ে নেশা করে মাতলামি করেন। যাদের লাইসেন্স আছে তাদের কাছে প্রতি লাইসেন্স’র অনুকূলে মাসে ৭ লিটার দেশী মদ বরাদ্দ দেয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সুরঞ্জিত কুমার রায় এর বাইরেও অবৈধ পন্থায় বিপুল পরিমাণ দেশী মদ জোগাড় করেন। লাইসেন্সধারী মানুষের কাছে ছাড়া এই মদ বিক্রি করা নিষেধ থাকলেও কুমারখালী দেশি মদের দোকানে লাইসেন্সধারী ছাড়াই নেশাখোরদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে মদ।
এতে এলাকার কিশোর থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ মাদকের নেশায় আসক্ত হচ্ছে। মদ্যপান করে এলাকার উঠতি বয়সের তরুণ ও যুবকেরা বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয়দের দাবি, অতি দ্রুত লাইসেন্স’র আড়ালে এই অবৈধ কারবার বন্ধ না করলে দিন দিন মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে কুমারখালী এলাকার যুব সমাজ। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মদের কারবার করে সুরঞ্জিত কুমার রায়ের ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে এবং কুমারখালী শহরে তার রয়েছে আলিশান বাড়ি ও গাড়ি।
এ বিষয়ে গতকাল বেলা ৩টায় সুরঞ্জিত কুমার রায়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়। দেশি মদের দোকান তার কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমি মালিক না। এরপর বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনো জবাব না দিয়ে মোবাইলের লাইন কেটে দেন। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমানের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত মাদকমুক্ত ঘোষণা করেছেন। কুমারখালী দেশী মদের দোকানে যদি নিয়মের বাইরে কিছু হয় তবে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনিয়ম পাওয়া গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করে তার মদের লাইসেন্স বাতিলের কোন প্রক্রিয়া থাকলে তাও করা হবে।