কুয়াকাটায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মানে ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়ম ॥
রাসেল কবির মুরাদ,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি; কুয়াকাটায় লতাচাপলী
ইউনিয়নের আজিমপুরে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের সীমানা দেয়াল
নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছে এলাবাসী। নি¤œমানের নির্মাণ
সামগ্রী দিয়ে সীমানা দেয়াল নির্মাণ কাজ শেষ হবার আগেই পলেস্তার খসে পড়ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সীমানা দেয়াল নির্মাণে কোন
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছে না ঠিকাদার ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের খেয়ালখুশি মতো কেনরকম কাজ করে যাচ্ছে। অনিয়মের কথা
স্বীকার করে পটুয়াখালী জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী
প্রকৌশলী মো: নাজমুল হক বলেন, বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা
গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন।
পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলায়
৩টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের ১ হাজর ৬শ’ ফুট
সীমানা দেয়াল নির্মানের কাজ দেয়া হয় ঝালকাঠির ঠিকাদার রেজা মিয়াকে। ২৮
লাখ টাকা প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে একটি
কুয়াকাটার আজিমপুরে এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চার পাশে ৬ফুট উচ্চতার সাড়ে
৪শ’ ফুট সীমানা দেয়াল নির্মাণ কাজ নিয়েব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেন
স্থানীয়রা। প্রায় ৮লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সীমানা দেয়াল
নির্মাণ কাজে নি¤œমানের ইট শুরকী, রড ও লোকাল বালু ব্যবহার করছে এমন
অভিযোগ। এ সীমানা দেয়াল নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। নি¤œমানের সামগ্রী
ব্যবহার ও অনিয়মের বিষয়ে নির্মাণ কাজের তদারকীর দ্বায়িত্বে থাকা জেলা
স্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী শোভন শাহরিয়ার এর কাছে অভিযোগ
করেও কোন প্রতিকার পায়নি স্থাণীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা বৃদ্ধ আ: রশিদ মৃধা জানান, বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজে
সিলেটের লাল বালু এবং মোটা সাদা বালু সমান হারে দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া
হয়নি। লোকাল বালুর সাথে মোটা সাদা বালু মিশিয়ে সীমানা দেয়ালের নির্মাণ
কাজ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ৬বস্তা লাল বালু এনে নমুনা স্বরুপ রেখে
দেয়া হয়েছে। যা অদৌও ব্যবহার করা হয়নি। একই অভিযোগ করে স্থানীয় ফারুক
হোসেন বলেন, কাজে নি¤œমানের ইট শুরকী ও লোকাল বালু ব্যবহারের কারনে
নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সীসানা দেয়ালের আস্তরণ খসে পড়ছে। একটি
পিলারের সাথে অন্য পিলারের দূরত্ব নকশা অনুযায়ী করা হয়নি। এমনকি
সঠিকভাবে রডের ব্যবহারও করা হয়নি, যেমন খুশি তেমনভাবে কাজ করা হয়েছে।
এসব অনিয়মের কথা স্বীকার করে এ কাজের সাব ঠিকাদার মো: হাসান বলেন, প্রথম
দিকে ১গাড়ী মানহীন বালু দিয়ে কাজ করা হয়েছে যার কারণে কোথাও কোথাও কাজ
একটু খারাপ হয়েছে। পরবর্তীতে এসব বালু দিয়ে আর কাজ করা হয়নি। তিনি আরও
বলেন, ইঞ্জিনিয়ার প্রতিনিয়ত এ কাজের তদারকি করছেন। কাজের মান খারাপ হলে
কর্তব্যরত প্রকৌশলীর দেখার বিষয়। তবে এ বিষয়ে মূল ঠিকাদারের সাথে
একাধিকবার মূঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে লতাচাপলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের জমিদাতা
আবু সাঈদ বলেন, বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। ঠিকাদাররা
তাদের ইচ্ছামত কাজ করছে। প্রকল্প প্রকৌশলীকে বারবার বলা হলেও তিনি
রহস্যজনক কারণে এড়িয়ে যাচ্ছে।
কাজে অনিয়ম হচ্ছে স্বীকার করে তদারকি কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী শোভন
শাহরিয়ার বলেন, ওয়ার্ক এ্যাসিস্টান্ট অনিয়মের বিষয়ে তাকে অবহিত করেছেন
এবং নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহারের ভিডিও ধারণ করে নিয়ে এসেছে। নির্বাহী
প্রকৌশলীকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: নাজমুল হক
জানান, কাজে অনিয়ম হচ্ছে এমন অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে
গিয়ে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।