দেশি ফল চাষের পাশাপাশি ড্রাগন ফল চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কালীগন্জের চাষীরা।
মোঃ শাহ আলম কালীগন্জ( ঝিনাইদহ)
ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চাষীরা দেশী ফল চাষের পাশাপাশি ড্রাগন ফল চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। এর মধ্যে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাঁচড়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রায় ৭০-৮০ বিঘা জমিতে পেয়ারা, লিচু, আম, বরই সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের সাথে বিদেশী ফল ড্রাগনের চাষ হচ্ছে।
কালীগন্জ উপজেেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন চাষী ড্রাগন চাষের সাথে যুক্ত আছেন।
চাষী সুরোত আলী জানান, তিনি প্রথমে ১২ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেন। ফলন ভালো হওয়ায় ১২ বিঘা থেকে বাড়িয়ে ১৭ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। দেড় বছরে গাছে ফল আসতে শুরু করে। জুলাই-আগস্টের মধ্যে ফল পাকতে শুরু করে। সাধারণত ফুল আসার ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মাথায় ফল পেকে যায়। একটি পরিপুষ্ট পাকা ফলের ওজন প্রায় তিন শ’ থেকে চার শ’ গ্রাম হয়। বছরে একাধারে প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস ফল সংগ্রহ করা যায়। ড্রাগন গাছ একবার লাগালে ওই গাছ কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ বছর ফল দেয়। সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা কেজি দরে ফল বিক্রি হয়।
চাষী শের আলী আমদের জানান, ড্রাগন বিক্রির বড় বাজার হচ্ছে ঢাকা। এছাড়া খুলনা, যশোর, ঝিনাইদহসহ স্থানীয় বাজারে তারা ড্রাগন ফল বিক্রি করে থাকেন। তিনি বলেন, বর্তমানে জেলার বিভিন্ন স্থানে চাষীরা ড্রাগন চাষে ঝুঁকছেন।
তার প্রায় ৯ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান রয়েছে। এবছর তার বাগান হতে উৎপাদিত ফলের বেশির ভাগ যাবে ঢাকার বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। তবে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ভাল দাম না পাওয়ার শঙ্কা কাজ করছে বলে জানান তিনি, এছাড়া এই ফলের চারা প্রতি পিছ ৫০ টাকা করে বিক্রি করেন বলে জানান। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ নিয়মিত তার বাগান দেখতে আসেন এবং চারা নিয়ে যান।
চাষাবাদ সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন চারা লাগানোর প্রথম দুই বছর চারার পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। নিয়মিত সার ও কিট নাষক প্রয়োগ করা লাগে। সাধারণত এক বিঘা জমিতে সার, লেবার, সিমেন্টের খুটি,টায়ার ইত্যাদি দিয়ে ৩ লাখ টাকার মত খরচ হয়। এবং দুবছর পর থেকে ফলন ভাল হলে ৪থেকে ৫ লাখ টাকার মত ফল বিক্রয় করা সম্ভব। এবং পরবর্তী বছরগুলো তে খরচ এর পরিমান আরও কমে আসে এবং লাভ বেশি হয়। যার ফলে যুবকেরা এই ফল চাষের প্রতি বেশি ঝুকছেন।