ধ্বংসের পথে কুষ্টিয়া মোহিনী মিলের ৩৬ একর জমির অর্ধেক বেদখলে

প্রকাশিত: ১১:১৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২৪

কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ॥
কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী মোহিনী মিলের অর্ধেক জমি এখন বেদখলে। অবহেলা আর অযত্নে মিলের বিভিন্ন স্থাপনা এখন ধ্বংসের পথে। ১৯৮২ সালে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকে কারখানার জমি বেদখল হয়ে গেছে। কারখানার মুল অংশসহ বাইরের কিছু জায়গা মিলে প্রায় সাড়ে ১৬ একর জমি এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে। মিলের ভবনের দেয়াল ও ছাদের পলেস্তার খসে পড়েছে। বটগাছসহ নানা লতাপাতায় ঢেকে গেছে যন্ত্রাংশ। চারদিকে গজিয়েছে নানা গাছপালা। পুরো কারখানা চত্বর পরিনত হয়েছে জঙ্গলে। মিলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এই কারখানাটি বিক্রির জন্য লিকুইডেশন সেল বা বিলুপ্তির দরপত্র ১৯৮১ সালের জুনে গঠন করে দেয় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়। তবে ৪২ বছরেও এটি বিক্রি করতে পারেনি তারা। এখন লিকুইডেশন সেলের ১৫ জনের বেশি কর্মচারী কারখানাটি দেখভাল করেন। এরপও প্রতিনিয়ত মিলের জায়গাজমির বেহাত হওয়া ঠেকানো যায়নি। শুধু এই কারখানা নয়, আরও ৩টি কারখানা বিক্রি করতে পারেনি এই সেল। ফলে এ সেলে কর্মরত ব্যক্তিদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন-ভাতা কার্যালয় ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ দিতে হচ্ছে সরকারকে। অন্যদিকে বন্ধ থাকায় কারখানার যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়াসহ সম্পদের অপচয় হচ্ছে। বেদখল হচ্ছে জায়গাজমি।
শুরুর দিকে মোহিনী মিলসহ ৪টি কারখানা বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয় লিকুইডেশন সেলকে। বাকি ৩টি আদর্শ কটন স্পিপিং এ্যান্ড উইভিং মিলস লিমিটেড, ঢাকেশ্বরী কটন মিলস লিমিটেড-১ ও ঢাকেশ্বরী কটন মিলস-২ বিক্রি করতে পেরেছে তারা। পরে ২০০৩ ও ২০০৪ সালে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, চিশতী টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, মসলিন কটন মিলস লিমিটেড ও ওরিয়েন্ট টেক্সটাইলস মিলস লিমিটেড নামে আরও ৪টি কারখানা বিক্রির জন্য এই সেলকে দায়িত্ব দেয় মন্ত্রনালয়। এগুলোর মধ্যে শুধু বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড বিক্রি হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন পর্যন্ত এই লিকুইডেশন সেলে ৩৫ জন কাজ করছেন।
বার্ষিক প্রতিবেদনে জানা যায় যে, গাজীপুরের মসলিম কটন মিলস ১৩৫ কোটি টাকায়, কুমিল্লার চিশতী টেক্সটাইল ৩৫ কোটি টাকায় এবং কুষ্টিয়ার মিলপাড়ার ২৯ দশমিক ৩৬ একর জমির মোহিনী মিল ২০ কোটি টাকায় তিনটি কারখানা যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে বিক্রি করা হয়েছিল বলে কর্মকর্তারা জানান। যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে বিক্রি না করায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে মোহিনী মিলস ও চিশতী টেক্সটাইল সরকার ফেরত এনেছে। তবে মসলিন কটন মিলস সরকার ফেরত আনতে পারেনি। সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই সেলের মতো প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রতি সরকারের মনোযোগ নেই। এগুলো অর্থনীতির দুষ্টুচক্র সৃষ্ঠি করছে, যা সবদিক থেকেই লোকসান।




error: Content is protected !!