নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলাকে শস্যভান্ডার হিসেবে গণ্য করা হয। এই নন্দীগ্রামে হলুদ সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে বিভিন্ন মাঠ। অপরূপ রূপে সেজেছে নন্দীগ্রামের গ্রামীণ জনপদের বিভিন্ন মাঠ। সকাল-বিকালের মিষ্টি সোনা রোদে আরও চকচক করছে হলুদের বিস্তর ক্ষেত। সরিষা ক্ষেতের এক ফুল থেকে আরেক ফুলে উড়ে উড়ে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছির দল।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী নন্দীগ্রামের ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৯ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। উপজেলা জুড়ে উচ্চফলনশীল বারি ১৪, ১৫, ১৭, ১৮, ২০, বিনা ৯ ও ১১সহ বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে সরিষা চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কিছুদিন আগের বৃষ্টিতে কোনো কোনো সরিষা ক্ষেতের উপকার হয়েছে। আবার কোনো কোনো সরিষা ক্ষেতের ক্ষতিও হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ খুব কম। যে আবাদ পরে ও নিচু জমিতে করা হয়েছে তাদের ক্ষেতে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এবার সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
নন্দীগ্রাম উপজেলার নন্দীগ্রাম ইউনিয়নের হাটুয়া গ্রামের কৃষক সুশান্ত কুমার সরকার শান্ত বলেন, সরিষা চাষ লাভজনক। সরিষা ক্ষেতে তেমন কোনো রোগবালাই হয় না। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘায় ৭ থেকে ৮ মণ সরিষা হয়। সার-ঔষধ আনুসাঙ্গিক খরচ মিলে প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর এক বিঘা জমি থেকে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকার সরিষা পাওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, আমি ৭৫ বিঘা জমিতে বারি ১৪ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। প্রতি বছর ৭০ থেকে ৮০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করে আসছি।
নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের দোহার গ্রামের কৃষক কৃষ্ণ চন্দ্র বলেন, সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে সরিষা বুনেছি। আমার সরিষা আগে লাগানো হয়েছে। এখন সরিষা গাছের ফুল ঝড়ে ফলে পরিণত হয়েছে। এবারো সরিষার আবাদ ভালোই হয়েছে। আর সরিষার জমিতে বোরো ধান লাগালে সার কম লাগে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক জানান, চলতি রবি মৌসুমে নন্দীগ্রাম উপজেলার ৫১৫০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকার রবিশস্যের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। রবিশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সবধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করি রবিশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি হবে। এতে কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে।