নবীগঞ্জের দীঘলবাকে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য রেবা রানীকে ৫০০ জুতার বারি মারার হুমকি দিলেন দুই ওয়ার্ড মেম্বার, ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের৷
স্টাফ রিপোর্টারঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের ( সংরক্ষিত) মহিলা সদস্য রেবা রানী সরকারকে ৫০০ টি জুতার বারি দিয়ে অফিস থেকে তাড়ানোর হুমকি সহ গুরুতর অভিযোগ তোলে ধরে দুই ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে প্রতিকার চেয়ে
(১ জুন) বুধবার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন হয়রানীর শিকার এই মহিলা ইউপি সদস্য৷
এনিয়ে এলাকায় নানা ধরনের আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷
অভিযোগে উল্লেখঃ নবীগঞ্জ উপজেলার ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের উল্লেখিত ওয়ার্ডের ( সংরক্ষিত) মহিলা সদস্য রেবা রানী সরকার তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন,গত ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে তিনি অংশ গ্রহন করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি শপথ গ্রহন করেন,শপথ গ্রহনের পরপরই ১৪ জানুয়ারি পরিষদের প্রথম সভায় তিনি অংশ গ্রহন করেন৷ তখনই তার সাথে ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার সোহান মিয়া ও ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার তফজ্জুল হোসেন অশালীন আচরণ ও নানা অঙ্গভঙ্গীমা প্রদর্শন করে তাকে উত্যক্ত করেন৷
তিনি তাদের এসব আচরণে পরিষদে প্রতিদিন আসা যাওয়া বন্ধ করে দেন৷
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩১ মে আবারো তিনি ইউপি পরিষদের অফিসে গেলে সেখানে উপস্থিত তার সহকর্মী ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার পাপিয়া সুলতানা ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইউছুফ আলী,৬নং ওয়ার্ড মেম্বার খালেদ হাসান দুলন, ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার মাহবুব খছরু সহ সেবা নিতে আসা জনসাধারণও সেখানে উপস্থিত ছিলেন৷
এর কিছুক্ষণ পরেই একটি মোটর সাইকেল যোগে সেখানে উপস্থিত হন অভিযুক্ত মেম্বার সোহান মিয়া ও তফজ্জুল হোসেন,
উপস্থিত সবার সামনেই হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই রেবা রাণীকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের কুরুচিপুর্ণ উস্কানিমূলক কথাবার্তা ও গালি গালাজ করে তার দিকে মারমুখী হয়ে যান মেম্বার সোহান ও তফজ্জুল হোসেন
উপস্থিত অন্যান্য মেম্বারগণ এর কারণ জানতে চাইলে তারা বলে আমরা হিন্দু মহিলাকে দেখতে পারিনা,
সে যেন আর কোনো দিন এই অফিসের পরিষদে কোনো দিন না আসে৷ তাহার কিসের জন্য অফিসে আসা প্রয়োজন?এদেরতো সীল স্বাক্ষরের কোন প্রয়োজন নেই৷ এসময় এসব আচরনের প্রতিবাদ করতে চাইলে মেম্বার তফজ্জুল তার সহযোগী সোহান মেম্বারকে হুকুম দিয়ে বলেন
রেবা রানীকে ৫০০টি জুতার বারি দিয়ে জুতা পিটা করে অফিস থেকে বের করে দাও৷ তাৎক্ষণিক মেম্বার সোহান জুতা নিয়ে ধাওয়া করলে তিনি অন্যান্য মেম্বারদের নিকট গিয়ে আশ্রয় নেন৷
অবশেষে তারা তাকে মারার জন্য রাস্তায় অবস্থান নিলে অন্যান্য মেম্বারদের সহায়তায় পরবর্তীতে তিনি উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ছালিক মিয়ার বাড়ীতে গিয়ে বিচারের আশায় অবস্থান নেন৷
এসময় চেয়ারম্যান ছালিক মিয়া উপজেলাতে একটি মিটিংয়ে ছিলেন বলেও জানান তিনি ৷ একপর্যায়ে বিকেল ৪টায় তার অন্য এক সহকর্মীর সহায়তায় তার অফিস হয়ে বাড়িতে যান,এমনকি ঘটনার বিচারপ্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান ছালিক মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় অবশেষে
সুবিচার প্রার্থী হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে,এবং সদয় অবগতির জন্য অনুলিপি প্রেরন করেছেন বিভাগীয়কমিশনার কার্যালয় সিলেট,জেলা প্রশাসক হবিগঞ্জ,উপজেলা চেয়ারম্যান নবীগঞ্জ ও অফিসার ইনচার্জ নবীগঞ্জ থানাকে ৷
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দীন এঁর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন তদন্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে৷