নবীগঞ্জে গ্রাম্য মাতব্বরদের রোষাণলে অসহায়পরিবার,হামলায় যুবক আহত৷

প্রকাশিত: ৩:৫০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টারঃ

নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি গ্রামে একটি পরিবারকে পাচেঁর বাদ (একঘর) করে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এই খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা প্রত্যাহার হয়। কিন্তু প্রভাবশালীদের অত্যাচার বন্ধ হয়নি। এরই জের ধরে গত বৃহস্পতিবার বিকালে কুর্শি গ্রামের আব্দুল আলীর পুত্র দুরুদ মিয়া’কে একদল লোক পথরোধ করে মারপিট করে টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে আহত দুরুদ মিয়াকে আশংকাজনক অবস্থায় নবীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে।
ফলে আতংক ও উৎকন্ঠার মাঝে দিনপাত করছে ওই পরিবার। সুত্রে জানাযায়, প্রায় ৪/৫ বছর আগে কুর্শি গ্রামের আব্দুল আলীর ছেলে লিটন মিয়ার শাশুড়ী সাফারুন বিবির মালিকানাধিন দখলীয় প্রায় ৩২ শতক আমন রকম ভুমি একই গ্রামের মৃত মইনুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে সুচতুর ইকরামুল ইসলাম চৌধুরী ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকায় এনার্জি কোম্পানী তৈরীর জন্য খরিদ করেন। বিনিময়ে ৯ লাখ টাকার চেক এবং ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা বদলে স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গিকারনামা প্রদান করেন দাতার জামাতা লিটন মিয়ার নামে। ফলে বিশ্বাস করে ভুমি দাতা বাকীতে চেক ও স্ট্যাম্পের বিনিময়ে ৩২ শতক আমন রকম ভুমি রেজিষ্ট্রি করে দেন। ভুমি রেজিষ্ট্রারী ও দখল বুঝিয়ে দেয়ার পর চেক নিয়ে ব্যাংকে গেলে ব্যাংকে পর্যাপ্ত পরিমান বেলেন্স (টাকা) না থাকায় ৯ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার করেন। প্রতারনার শিকার লিটন মিয়া বাধ্য হয়ে হবিগঞ্জ আদালতে সিআর মামলা নং-২৪/২০১৮ইং দায়ের করেন। এক পর্যায়ে মামলাটি বিচারের জন্য বিজ্ঞ যুগ্ম দায়রা জজ, ২য় আদালত, হবিগঞ্জ এ স্থানান্তর করা হয়। যা দায়রা মামলা নং ৬০৪/২০১৮ইং। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বিগত ৫ই অক্টোবর উক্ত মামলায় বিচারকালীন সময়ে আচরন ও চেকে বর্নিত টাকার পরিমান ও সার্বিক বিবেচনায় চেক ডিজনার এ্যাক্ট ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারায় দোষী সাব্যস্থক্রমে ১ (এক) বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং চেকে উল্লেখিত টাকার সমপরিমান অর্থাৎ ৯ লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত রায় প্রদান করেন। উক্ত রায়ের পর থেকেই সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইকরামুল ইসলাম চৌধুরী পলাতক থেকে তার লোকজন দিয়ে এবং একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্র ছায়ায় মামলা তোলে নেয়ার জন্য বাদী লিটন মিয়াকে প্রাণনাশের হুমকীসহ তার জানমালের ক্ষতি সাধনের হুমকী দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অসহায় লিটন মিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামী ও তার পরিবারের লোকজনের অগণিত হুমকীতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। আতংকে সময় অতিবাহিত করছেন তার পরিবার। পাওনা টাকা আদায়ে মামলা করে চরম বিপাকে লিটন মিয়ার পরিবার। ভিক্ষা চাইনা, কুত্তা সামলাও এমন অবস্থা এখন লিটন মিয়ার। এরই জের ধরে লিটন মিয়ার ভাই দুরুদ মিয়া বৃহস্পতিবার বিকালে বাজার থেকে বাড়ি যাবার পথে কুর্শি গ্রামের প্রভাবশালী মিয়া, আশরাফুল বেগ, আকাব উদ্দিনগংরা তার পথরোধ করে মারপিট করে প্রায় দেড় লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন লিটন মিয়ার পরিবার। ঘটনার পর আহত অবস্থায় দুরুদ মিয়াকে নবীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লিটন মিয়া বলেন, বিশ্বাস করে নগদ টাকার বদলে চেক ও স্ট্যাম্পে লিখিতের বিনিময়ে ভুমি রেজিষ্ট্রারী করে দিলাম। অথচ ইকরামুল ইসলাম চৌধুরী তার সাথে প্রতারনা করেছেন। ফলে টাকা উদ্ধার করতে না পেরে আইনের আশ্রয় নিয়েও জীবনের চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। যে কোন মুহুর্তে ইকরামুল ইসলাম ও তার লোকজন তার বা তার পরিবারের লোকজনের উপর হামলাসহ জানমালের ক্ষতি করতে পারে। তারা মামলা তুলে নিতে এসব হুমকী দিচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। লিটন মিয়া আরও বলেন, তার ভাই দুরুদ মিয়াকে মারপিট করে টাকা লুট করে নিয়েছে প্রভাবশালী দিলকাছ গংরা,এমনক বাড়িঘরে হামলার পরিকল্পনা করেছে তারা। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।




error: Content is protected !!