নড়াইলের নড়াগাতী থানার পুটিমারী গ্রামে এসকেন বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ট এলাকাবাসি
মোঃ বাবলু মল্লিক : নড়াইলের নড়াগাতী থানার পুটিমারী গ্রামের এসকেন বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ট এলাকাবাসি এমটাই অভিযোগ উঠেছে। এসকেন বাহিনী গ্রামে ১০-১৫ জন চিহ্নিত মাদক সেবনকারীদের নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে বেড়ায়।কেউ কিছু বলতে গেলে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। যার কারণে, ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না বলে জানায় এলাকাবাসি। এদিকে মাদক সেবনকারী সন্ত্রাসী এসকেনের বিরুদ্ধে নড়াগাতী থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে। মামলা থাকা সত্তেও এসকেন কেন পুলিশের ধরা ছোয়ার বাইরে থাকে এটা রয়েছে ধোঁয়াশা।সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ১৪মে সকাল ১০ টার সময় সন্ত্রাসী এসকেন বাহিনির ক্যাডার”রা নানা ধরণের দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উক্ত গ্রামের নুহু শেখ (২৭), পিং- জয়েন শেখ, ইছুব শেখ (৪০), পিং- জয়েন শেখ, রাকিব শেখ (২৩), পিং- আফছার শেখকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।এ ঘটনায় এসকেনসহ তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নড়াগাতী থানায়ভুক্তভুগী ইছুব শেখ বাদি হয়ে ১৫ মে, ২০২০ ইং তারিখে মামলা দায়ের করেন যার নম্বর ০৫।উক্ত মামলা দায়ের করায় এসকেন বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে (১৮জুন) রাতে মামলার বাদি ইছুব শেখের ভাই রজব শেখ (২৮) কে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে মারান্তক জখম করে। সে বর্তমানে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।এলাকাবাসির পক্ষে মিজান মোল্যা, পিং-মৃত রায়াহান মোল্যা এসকেন বাহিনীর অত্যাচারের বিচার চেয়ে ৩১ মে, ২০২০ ইং তারখে ডি আইজি খুলনা পুলিশ সুপার নড়াইল, র্যাব-৬ নড়াইল ও সার্কেল এস পি কালিয়া নড়াইল বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন এবংউক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫ জুন এসপি সার্কেল, কালিয়া, নড়াইল তাঁর অফিসে উভয় পক্ষকে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেন।নির্দেশনা মোতাবেক ভুক্তভোগীরা হাজির হলেও বি-বাদী এসকেন বাহিনীর কেউ হাজির হয়নি।স্থানীয় সুত্রে আরো জানা যায়, এসকেন বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে সন্ত্রাসী বাহিনি নিয়ে হামলা করে এসকেন শেখ।একাধীক বার পুলিশে অভিযোগ দেয়া সত্বেও পুলিশ কোন আইনি ব্যবস্থা নেইনি বলে জানা যায়।এ বিষয়ে মিজান মোল্যা বলেন, এসকেন বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ক্রমান্বয়ে মারাত্মকরূপ নেয়ায় গত ৩১মে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভোযোগ পেশ করেছি।তিনি আরো বলেন, খাশিয়াল গ্রামের আব্দুর রহমান নামের এক ব্যক্তি কে অপহরণ করে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে এসকেন বাহিনী।বিষয়টি সম্পর্কে প্রশাসন অবহিত হওয়ায় তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে আব্দুর রহমানকে উদ্ধার এবং বাহিনীর প্রধান এসকেন শেখকে আটক করে।কিন্তু ৬নং খাশিয়াল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, ফরিদ আহম্মেদ শিকদারের সুপারিশে পুলিশ এসকেন শেখকে ছেড়ে দেয়।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসকেন শেখ সৌদিতে প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে এসে একটি মটোরসাইকেল ক্রয় করে, এবং সেই মটোরসাইকেলে করে ইয়াবা আনা নেয়ার ব্যবসা শুরু করে।নিয়মিত পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে এসকেনের সহযোগী নয়ন শেখ এসকেনের মটোরসাইকেল সহ ১৫০ পিচ ইয়াবা নিয়ে মঙ্গলপুর গ্রামে লোহাগড়া থানা পুলিশের হাতে আটক হয়।এ বিষয়ে এসকেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,আমি এধরেন কোন কাজে লিপ্ত ছিলাম না এবং এখনো নেই।আমার নামে মিথ্যা হয়রানীমূলক মামলা করা হয়েছে।এসকেনের স্ত্রী খুকু বেগম বলেন, আমার স্বামীকে ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে ফাঁসানো হয়েছে।আমার স্বামী সৌদি ছিলেন, দেশে আসার পর থেকে সমাজ সামাজীকতা করেন।যে কোন সমস্যায় গ্রামের লোক তাকে ডাকে,এটা ওদের সহ্য হয় না।আমার স্বামী গ্রাম্য রাজনীতির স্বীকার,ওরা আমার নাবালক ছেলেকেও পায়ের রগ কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।পুলিশকে জানালে পুলিশ আমাদের অভিযোগ আমলে নেয় না। তিনি আরো বলেন, ওদের ওপর মহলে হাত আছে এজন্য আমাদের কথা কেউ শোনেন না।এ ব্যাপারে নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকসানা খাতুন বলেন, এসকেন বাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে, এসকেন সহ এসকেন বাহিনীর সদস্যদের আটকের চেষ্টা চলছে,আমাদের এ অভিযান অব্যহত থাকবে।