বারি লাউয়ের বাম্পার ফলন লবণাক্ত এলাকায়

প্রকাশিত: ১১:২১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২০

আলী আজীম,মোংলাঃ

বাঙ্গালির খাদ্য তালিকায় লাউয়ের কদর কম নয়। কত কিছু দিয়েই তো লাউ রান্না করা যায়। কচি লাউ-চিংড়িতে অরুচি আছে—এমন বাঙ্গালি পাওয়া ভার। খনার বচনে আছে লাউয়ের বন্দনা, ‘উঠান ভরা লাউ-শসা, ঘরে তার লক্ষ্মীর দশা’। লাউ নিয়ে গাইতে বাংলার বাউলদের ভালোবাসার প্রকাশ প্রায় সবারই জানা। এবার জানা গেলো বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত একটু বেশি থাকে যার কারণে কৃষি প্রেমীদের জন্য চাষাবাদ খুব কষ্টকর তারপরও থেমে যায়নি কৃষি প্রেমিক শামীম আহসান,তিনি বিভিন্ন শাক সবজির পাশাপাশি লাউ চাষ শুরু করে দিলেন

যশোরে একটি ইন্সটিউটে বারি লাউ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ বিশেষ জাতের লাউকে চাষিদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে যশোরের একটি সংস্থা।
প্রথম পরিচয়েই বারি লাউয়ের প্রতি মুগ্ধ হয়েছেন চাষি শামিম আহসান। বাগেরহাট জেলার মোংলা পোর্ট পৌরসভার পিকনিক কর্নারে মোংলা
বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পার্শ্বে মাত্র ৫কাঠা জমিতে এর চাষ করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে পাঁচ কাঠা জমিতে বারি লাউ চাষ করে ত্রিশ হাজার টাকার লাউ এবং শাক বিক্রি করেছেন।আরো ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে এমন আশাবাদি তিনি।যার সর্বপরি খরচ হয়েছে চার হাজার টাকা মাত্র।

শামিম আহসান বলেন, ‘আমি এ লাউ নিয়ে আশাবাদী। এটি চাষ করে আমি লাভবান হয়েছি। সারা বছর চাষযোগ্য এ লাউয়ে রোগবালাইয়ের উপদ্রব কম। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কীটনাশক ব্যবহার করিনি। তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবার পরও কোন চাকরির দিকে না গিয়ে কৃষি পেশার সাথে জড়াই। আমি দীর্ঘদিন ধরে কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। বাণিজ্যিকভাবে লাউ চাষ করে ভালো লাভ করা যায়,এ কথা আগে জানলেও কিন্ত এই লবণাক্ত এলাকায় কিভাবে লাউয়ের চাষ করবেন,যেহেতু আমাদের এই দক্ষিণ অঞ্চলে উপকূলীয় এলাকা লবনাক্ত উপকূলীয় এলাকা এই নিয়ে চিন্তায় ছিলেন।

মোংলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিমেষ বালার এ লাউ চাষের পরামর্শ শুনে তিনি লাভবান হয়েছেন।
বারি লাউ নিয়ে মোংলা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা বলেন,দক্ষিণাঞ্চল যেহেতু লবণাক্ত ও উপকূলীয় এলাকা আর এই উপকূলীয় এলাকায় কিভাবে লাউয়ের চাষ করা যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি।

কোন কৃষক যদি এই লাউয়ের চাষ করতে চান তাহলে তাকেও পরামর্শ দেওয়া হবে, সাধারণ জাতের লাউয়ের সঙ্গে এর বড় পার্থক্য হচ্ছে,এ লাউয়ে কৃত্রিম পরাগায়নের প্রয়োজন পড়ে না।কিন্তু সাধারণ লাউয়ের তুলনায় বারি লাউয়ের ফলন দ্বিগুণের মতো। একেকটির ওজনেও অধিক হয়। রং গাঢ় সবুজ ও আকর্ষণীয়,স্বাদও ভালো, মোলায়েম। বিচি কম ও খাদ্যাংশ পুরু। কচি লাউ ছিলকাসহ খাওয়া যায়।মাচাতে ফলন আরও ভালো হয়। বাণিজ্যিক ভিত্তিতেও এ লাউ চাষ করা যায় তাই লাভজনক। ফলে চাষিদের লাউ চাষে এবং অন্যান্য কৃষি চাষে নানান কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক চাষিদের কৃষি কাজে সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে

মোংলা পৌর শহরের চাষি শামীম আহসান জানান আমি আমার মেধা এবং প্রাকটিকাল শিক্ষা থেকে আমি লাউয়ের চাষের ইচ্ছা পোষণ করি এবং এই চাষে আমি লাভবান হই।মোংলা উপজেলার সকল কৃষি প্রেমীদের জন্য বারি লাউ সঠিক পদ্ধতিতে বীজ রোপন উৎপাদন সবকিছু মিলিয়ে সকল কৃষকরা লাভবান হতে পারবে,আমার এই কৃষি কাজে যারা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।




error: Content is protected !!