মাদককারবার ও ভূমি দখলের প্রতিবাদ করায় মোংলায় এক যুবককে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম

আলী আজীম,মোংলাঃ
ভূমিদস্যু ও মাদককারবারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়ায় মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের এক যুবককে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে স্থানীয় চিহ্নিত মাদককারবারী চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় থানা অভিযোগও দায়ের হয়েছে। অভিযোগ ও আহত ব্যক্তি এবং স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নে দিগরাজ এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তির ভূমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে একই এলাকার ইসলাম শিকারী গং। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক কারবারের অভিযোগও। তাদের নিকট আত্মীয় মোংলার মাদক সম্রাট মুকুল শিকারীকে কয়েকদিন আগে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগ এখনো চলছে শিকারী গংদের মাদক বেচাকেনার কারবার।
মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের দিগরাজ এলাকার বাসিন্ধা মোঃ সফিকুল ইসলাম জানান, মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধওে মাদক বেচাকেনার সাথে জড়ির মান্নান শিকারী, মাহফুজ শিকারী, মারুফ শিকারী, মহসিন শিকারী ও মাহবুব শিকারী। আর তাদের মাদক পরিবহণের কাজ করে থাকেন মিজান সরদার। শিকারী গংদের দীর্ঘদিনের মাদক বেচাকেনার কারণে এলাকার যুব সমাজ ধবংসের পথে চলে যাচ্ছে। আর ওই যুব সমাজকে রক্ষায় ওই মাদককারবরীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে র্যাব-০৬ এর খুলনা কাযার্লয়ে সম্প্রতি একটি লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার তাকে সংঘবদ্ধ ওই ভূমিদস্যু ও মাদককারবারী চক্রের সদস্যরা বেদম মারপিট করে রক্তাক্ত অবস্থান রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
একই এলাকার বাসিন্দা কপিল মজুমদার (৫৫) বলেন, এক বছর আগে তাদের মালিকানা ২ একর ২৩ শতক ভূমি জোর পূর্বক দখল করে নেয় ইসলাম শিকারীর ছেলে মারুফ শিকারী। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মাহমুদ শেখ (৫০) জানান, একটি জাল দলিল তৈরী করে ইসলাম শিকারী পাচ বছর আগে তাদের ৬১ শতক ভূমি দখল করে নিয়েছেন। আর পাশ্ববর্তী বাসিন্দা ইমান আলী খন্দকার (৭৪) জানান, তাদের খরিদ সূত্রে মালিকানা ৮৯ শতক ভূমি জাল দলিল করে জোরপূর্বক দখল নিতে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে শিকারী গং। স্থানীয় এসব বাসিন্দারা জানান, শিকারী গংরা প্রতিনিয়ত সুন্দরবন ইউনিয়নের বিভিন্ন মানুষকে হয়রানী করে তাদের সম্পদ লুটে নিচ্ছেন। একই সাথে তারা মাদককারবার চালিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে। তাদের ওইসব অপকর্ম বন্ধের জন্য তারা দুই শতাধিক এলাকাবাসী স্বাক্ষর করে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাদের একজন মুকুল শিকারীকে মাদকসহ আটক করেছে থানা পুলিশ।
এ দিকে মান্নান শিকারী, মারুফ শিকারী ও মাহফুজ শিকারী গংদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সঠিক নয় দাবী করে তারা বলেন, কারো কারো সাথে তাদের জমিজমা বিরোধ রয়েছে। তবে মাদকের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবী করেন। তবে কিছুদিন আগে তাদের আত্মীয় মুকুল শিকারীকে মাদকসহ আটক করেছে পুলিশ বলে স্বাীকারও করেছেন।
এ বিষয়ে সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কবির হোসেন বলেন, স্থানীয় বাসিন্দা কপিল মজুমদার ও গোড়া মাইজেসহ আরো অনেকের সম্পত্তি শিকারী গংরা জোরপূর্বক জবর দখল করে নেয়ার অভিযোগ তার কাছে এসেছে। একই সাথে মাদকের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে অনেকেই করেছেন। বিষয়টিতে প্রশাসনের দৃষ্টি দেয়ার আহবাণ জানান তিনি।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পাওয়া পর বিষয়টির তদন্তের দায়িত্ব এসআই অমিতকে দেয়া হয়েছে। তদন্তে সতত্যা পাওয়া গেলে অবশ্যই এ ঘটনায় মামলা নেয়া হবে।