কলাপাড়াসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষ আজও ভুলেনি ভয়াবহ সিডরের সেই তান্ডব॥

প্রকাশিত: ৯:৫৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০২০

রাসেল কবির মুরাদ,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি; কলাপাড়াসহ উপকূলীয় এলাকায় ২০০৭ সালের এই দিনে ঘূর্ণিঝড় সিডরে লন্ডভন্ড করে দেয় সমগ্র উপকুল। দক্ষিণের মানুষ আজও ভুলেনি ১৫ নভেম্বরেরসেই প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় সিডরের তান্ডবের ভয়াবহতা। বিধ্বস্ত বাঁধ নির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনে সরকারি বেসরকারিভাবে। কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও ভোগান্তি কমেনি উপকূলবাসীর। অমাবস্যা-পূর্ণিমায় বিধ্বস্ত বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে এখনো গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে থাকে। তবে আকাশে মেঘ দেখলেই সমুদ্র পাড়ের মানুষের বেড়ে চলে ছোটাছুটি। এ সব ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা ৪ হাজার ৪ শত ৪০টি পরিবারকে পাকা ও আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ভয়াবহ সুপার সাইক্লোন ‘সিডর’ লন্ডভন্ড করে দেয় বিস্তীর্ণ জনপদ। ওই সময় ক্ষতিগ্রস্থ হয় এসব এলাকার বেড়িবাঁধসহ অসংখ্য স্থাপনা, কৃষকের ক্ষেত ও মৎস্য সম্পদ। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সড়ক, বিদ্যুৎ সহ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝড় ও ঝড়ের পরবর্তী সময়ে রোগ বালাইয়ে মারা গেছে বহু গবাদি পশু। সিডরে এ উপজেলায় ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে এক হাজার ৭৮ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ৮ জেলে। স্বজন হারাদের কাছে তাদের খোঁজখবর নিতে গেলে তারা বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা জীবনে এই দিনটির কথা ভুলতে পারছেনা।

লালুয়ার চারিপাড়ার বাসিন্দারা জানান, রাবনাবাদ পাড়ের এসব জেলে পরিবারের জোয়ার নিত্যদিনের জলোচ্ছ্বাসে পরিণত হয়েছে। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকছেন। এরা বেড়িবাঁধের বাইরে ঝুপড়ি তুলে পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।

সিডর অধ্যুষিত এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, এখনও বেড়িবাঁধের বাইরে কমপক্ষে ৭ হাজার পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেল নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালি উজ্জামান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক সাংবাদিকদের জানান, গৃহহীন, হতদরিদ্র মানুষকে গৃহপুনর্বাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩০ পরিবারকে গৃহপুনর্বাসন করা হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে কলাপাড়ায় আরও ৪৫০ হতদরিদ্র পরিবারকে গৃহপুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে এবং আবাসন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মধ্য দিয়েও মানুষকে আবাসন পুনর্বাসন করা হচ্ছে।




error: Content is protected !!