কলাপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজর সভাপতি নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি, সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধাদের চরম অসন্তোষ ॥

প্রকাশিত: ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০২২

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি  :   কলাপাড়ায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে
জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত দেশের একমাত্র
মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ড. এস এম
আনোয়ারা বেগমকে নিয়ে অসন্তোষ থামছেনা। সে কলেজের উন্নয়ন ও শিক্ষা মান
উন্নয়নে কোন পদক্ষেপ না নিলেও স্বপরিবারে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা এসে বিমান
ভাড়া, গাড়ী ভাড়া, আবাসিক হোটেলের বিল ও রেস্তোঁরার বিল পরিশোধে বাধ্য
করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষকে। এমনকি বিনোদন সফর শেষে ঢাকা ফেরার পথে কলেজের
অর্থে বিপুল পরিমান সামুদ্রিক মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এমনই সব অভিযোগ
নিয়ে আজ সোমবার দুপুরের দিকে কলাপাড়া প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার তৌহীদুর
রহমান সিআইপি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলাপাড়ার বীর
মুক্তিযোদ্ধারা।

মুক্তিযোদ্ধা কলাপাড়া উপজেলা কমান্ডের পক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ
হোসেন সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত
মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজে  ড. এস এম আনোয়ারা বেগম গভর্নিং বডির
বিদ্যোৎসাহী সদস্য এবং তার স্বামী ড. মাহমুদুর রহমান পাঁচ বছর সভাপতি
ছিলেন। তাঁরা পাঁচ বছরে কলেজের কোন উন্নয়ন করেনি। তাঁরা শুধু পরিবারসহ
কুয়াকাটা ভ্রমনের জন্য ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্র সংলগ্ন এ কলেজে
আসতো।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন আরো বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারী জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা স¦াক্ষরিত
মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর এক অফিস আদেশে বর্তমান সভাপতি
মো. বদিউর রহমান এর মনোনয়ন পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন
আহমদ (বীর বিক্রম) কে এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয়। কিন্তু গত ১
আগষ্ট ওই আদেশ পরিবর্তন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একই কলেজ পরিদর্শক
স¦াক্ষরিত অপর এক অফিস আদেশে দুই বছর মেয়াদে গভর্ণিং বডির সভাপতি পদে
অধ্যাপক ড. এস এম আনোয়ারা বেগমকে মনোনয়ন দেয়া হয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, কলেজ প্রতিষ্ঠা থেকে এ পর্যন্ত কলেজের সকল উন্নয়নে
মাহবুব উদ্দিন আহমদ ( বীর বিক্রম) কলেজের স্বার্থে সবসময় পাশে ছিলেন।
কলেজের স্বার্থে কলেজ খেকে মাহবুব উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম)সহ তিনজনের
নাম সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এ
তালিকায় অধ্যাপক ড. এস এম আনোয়ারা বেগমের নাম ছিলো না। কিন্তু কলেজের
নামের তালিকা বাদ দিয়ে অধ্যাপক ড. এস এম আনোয়ারা বেগমকে সভাপতি হিসেবে
মনোনয়ন দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, অধ্যাপক ড. এস এম
আনোয়ারা বেগমকে সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে  কলেজের উন্নয়নের স্বার্থে
মাহবুব উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম)কে গভর্ণিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব
না দিলে তারা কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে বৃহত্তর
আন্দোলনে যাবেন। এনিয়ে প্রয়োজনে দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও
প্রধানমন্ত্রীর সাথে তাঁরা দেখা করে সমস্যার সমাধান চাইবেন।

এনিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ মো: কালিম উল্লাহ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে অভিযোগ
করেছেন তা সত্য। কলেজের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং উন্নয়নের স্বার্থে
মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি যুক্তিসংগত।

এবিষয়ে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. এস এম আনোয়ারা বেগম
মুঠোফোনে বলেন, ১ আগষ্ট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সভাপতির দায়িত্ব
দেয়া হলেও কলেজ অধ্যক্ষ তাকে অফিসিয়ালি এখনও জানায়নি। কলেজ অধ্যক্ষ অসত্য
তথ্য পরিবেশন করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভুল বুঝিয়ে এভাবে মিথ্যা
প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে অধ্যক্ষ।




error: Content is protected !!