কলাপাড়ায় ১৩ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বছর পেরুলেও চালু না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ ॥
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : কলাপাড়ায় ১৩ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত
মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বছর পেরুলেও চালু না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের
ক্ষোভ। মৎস্য ব্যবসায়ীরা চাহিদা অনুযায়ী জায়গা না থাকা এবং মৎস্য উন্নয়ন
করপোরেশনের সমন্বয়হীনতাকে দ্বায়ী করেছেন। অপরদিকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা
কয়েকজন প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়ীর স্বার্থহানি ও সিন্ডিকেট বানিজ্যকে
দায়ী করছেন।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে
খাপড়ানদীর দক্ষিনপাশে লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে আলীপুর মৎস্য
অবতরন কেন্দ্র নামে একটি ও ওই নদীর উত্তর পাশে মহিপুর বাজারে মহিপুর
মৎস্য অবতরন কেন্দ্র নামে অপর একটি মৎস্য অবতরন কেন্দ্র উদ্বোধন করেন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এর মধ্যে গত বছরের ২৬
অক্টোবর আলীপুর মৎস্য অবতরন কেন্দ্রটির কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হয়।
বর্তমানে ক্রেতা, বিক্রেতা ও পাইকারদের হাকডাকে ও মানুষের আনাগোনায়
মুখরিত থাকে এ মৎস্য অবতরন কেন্দ্রটি। কিন্তু এর পুরো উল্টো চিত্র মহিপুর
মৎস্য অবতরন কেন্দ্রে। সামনের গেটে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে এ অবতরন
কেন্দ্রটি। বন্ধ রয়েছে বরফ কল। দেখলে মনে হয় যেন শুনশান নিরবতা।
বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মহিপুর মৎস্য বন্দরে ৮৫জন তালিকাভূক্ত
আড়তদার ছাড়াও তালিকাবার্হিভূত রয়েছে আরো অর্ধশতাধিক আড়ৎদার, আড়াই’শ
পাইকারী ও ৫ হাজার খুরচা ব্যবসায়ী, ২৫ হাজার বিভিন্ন শ্রেনীর পরিচ্ছন্ন
কর্মী, ১৫ হাজার শ্রমিক, ২ হাজার ট্রলার মালিকসহ প্রায় ৬০ হাজার জেলে।
মৎস্য শিল্পের উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে আহরিত মৎস্য আহরন, সংরক্ষন,
প্রক্রিয়া ও বাজারজাতকরনের জন্য মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন ২০১৬ সালে ১৩
কোটি টাকা ব্যয়ে এ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি নির্মাণ কাজ শুরু করে। নির্মান
করা হয় জেলে ট্রলার থেকে মাছ নামানোর জন্য পন্টুন ও গ্যাংওয়ে, ১ হাজার
বর্গফুটের অকশন এলাকা, প্যাকেজিং সেট, আড়তদার রুম, বরফকল, জেনারেটর রুম,
স্যানিটেশন, মহাসড়ক থেকে মার্কেট পর্যন্ত রাস্তা প্রসস্থ ও সম্প্রসারন,
পয়োনিষ্কাশনসহ সাত হাজার বর্গফুটের একটি ট্রাকস্ট্যান্ড।
মাহাতাব ফিসের স্বত্তাধিকারী আবদুস ছত্তার হাওলাদার জানান, আমার যারা ছোট
পরিসরে আড়ৎদার ব্যবসা করছি তারা ওখানে যেতে চাই। কিন্তু এখানে যে আড়ৎ
ব্যবসায়ী আছে তার থেকে ওখানে কক্ষ সংকট রয়েছি। তবে বিশের ভাগ মহিপুরের
হাওলাদার মার্কেট ও গাজী মার্কেটের গরমসির কারনেই দীর্ঘ দিন যাবৎ মৎস্য
অবতরন কেন্দ্রটি চালু হচ্ছেনা। মৎস্য আড়ৎ সৌরভ এন্টার প্রাইজের
স্বত্তাধিকারী শাহরিয়ার সমুন জানান, আমাদের ওই কেন্দ্রে যেতে কোন সমস্যা
নেই। আমরা ওখানে যেতে চাই। কিন্তু গাজী মার্কেটের মালিক মজনু গাজী,
মহিপুর মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক রাজা মিয়া ও তার লোকজন
ওখানে যেতে চায়না। এছাড়া এখানে আড়ৎদারদের তুলনায় অর্ধেক রুমও নাই। এবং
মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের লোকজন তেমন তৎপর না। যার কারনে আলীপুরের মতো এ
অবতরন কেন্দ্রটি চালু হচ্ছেনা।
মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য অবতরন কেন্দ্রের ম্যানেজার মো. শাকিল জানান, মৎস্য
আড়ৎদারদের সঙ্গে আমরা সমন্বয় করার চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করছি ডিসেম্বর
মাসের মধ্যে এটার পুরোপুরি কার্যক্রম চালু হবে।