শাহ আলম,কালীগঞ্জ ঝিনাইদহ;
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্ববালিয়াডাঙ্গা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের অভিযোগে ৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে।
শুক্রবার ভিকটিম ওই গৃহবধু নিজেই বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সাঈদি হোসেনকে এক নম্বর আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। তবে, এখনো পর্যন্ত গণধর্ষণের সাথে জড়িতদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।
গত ৯ জুলাই কালীগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ, ব্লাকমেইল করে টাকা দাবি শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর স্থানীয় প্রশাসনের বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়।
আলাপকালে গত ৯ জুলাই ভিকটিম ওই নারী জানান, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের শাহাজান আলীর পুত্র সাঈদ হোসেন, আব্দুল লতিফের পুত্র আলী হোসেন, আব্দুর রহিমের পুত্র জুয়েল, আল আমিন সহ ৫/৭ জন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। দীর্ঘদিন ধরে আমাকে বিভিন্ন ভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল এবং বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিতো।
ভিকটিম জানায়,স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর তিন মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। গত ৫/৬ মাস সাঈদ হোসেন নামে একজন আমাকে মোবাইলে ফোন দিতো। বিভিন্ন সময় ফোনে উত্ত্যক্ত করতো এবং ফোন দেওয়ার বিষয়ে কারও কাছে বললে আমাকে ও আমার সন্তানদের মেরে ফেলার হুমকি দিতো। আমি ভয়ে কাউকে কিছু বলিনি। বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে কুপ্রস্তাব দিতো। এরপর ৩০ জুন মঙ্গলবার ঘটনার দিন রাতে সাঈদ ফোন দিয়ে আমাকে ঘরের বাইরে আসতে বলে। না খুললে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকবে।
মানসম্মানের ভয়ে তিনি ঘরের দরজা খুলতেই তারা ৩/৪ জন আমকে বাড়ির পিছনের একটি আমাবাগানে নিয়ে যায়। এরপর আমাকে তারা জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং মোবাইলে সেই দৃশ্য ধারণ করে। এরপর তিনি বেহুশ হয়ে মাঠের মধ্যে পড়ে থাকেন। ২/৩ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরে আসলে তিনি বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে আছেন দেখতে পান। এরপর তিনি আস্তে আস্তে উঠে বাড়ির দিকে চলে আসেন।
তিনি আরো জানান, ঘটনার পরদিন সকালে আমি কাউকে কোন কিছু জানানোর আগেই তারা আমাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে শুরু। যেন আমি কাউকে কিছু না বলি। কাউকে কিছু বললে তারা আমার সন্তানের অনেক ক্ষতি করবে ও ধর্ষণ করা ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেব। আমি এই ভয়ে চুপ থাকি। এরপর তারা আমাকে ফোন দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। নাহলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। আমি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের কাছে থাকা ওই ভিডিও কয়েকজন কে দেখালে পরে বিষয়টি লোক জানাজানি হয়।
ভিকটিম ওই গৃহবধু এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে বলতে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন আর যারা আমাকে যারা এই কাজ করেছে তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি। আমার মতো কোন মা যেন এমন ঘটনার স্বীকার না হয়।
সর্বশেষ এ ব্যাপারে শনিবার সন্ধ্যায় গণধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মতলেবুর রহমান মুঠোফোনে জানান, শুক্রবার (১০ জুলাই) ভিকটিম ও নারী নিজেই বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।