মাসুদ আলম চয়ন
মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১০নং নাজিরাবাদ ইউনিয়নের হাজি মিছকিন গ্রামের (হাজী বাড়ী) এক উদ্যমী কিশোর তপু আহমদ একজন সফল গরু খামারী। তিনি একজন নিয়মিত বিদ্যালয়ের ছাত্র হলেও ব্যক্তি উদ্যাগে নিজ বাড়ীতেই করেছেন গরুর খামার। খামারে সরেজমিন দেখা যায়,লেখাপড়ার পাশাপাশি তার ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে গরুকে গোসল করানো, ঘাস কাটা, খাবার দেয়া, দুধ দহনসহ সব কাজ তিনি নিজেই করেন।দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যান্সারে আক্রান্ত বাবা রাজা মিয়া‘র চিকিৎসার খরচসহ পরিবারের অন্যান্য প্রয়োজন শেষে আয় করছেন লাখ টাকা।তার এ কাজে উৎসাহী হয়ে আত্মকর্মী হয়ে কাজ করতে আশপাশের তরুণ যুবকরা আগ্রহ দেখিয়েছেন। কাশিনাথ আলাউদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্র উদ্যমী কিশোর তপু জানায়, ২ ভাই এর মধ্যে সে বড়।পরিবারের আয় রোজগার করার মত কোন লোক না থাকায় পরিবারে আর্থিক অভাব নিত্য সঙ্গী। তখন সে ৭ম শ্রেনীতে পড়ে। উপার্জন নেই।হতাশা জেঁকে বসে মনে।সেই সময় থেকে নিজ উদ্যাগে একটা কিছু করার প্রচন্ড আগ্রহ জাগে। প্রথমে একটি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন তিনি। ধীরে ধীরে পরিধি বাড়তে থাকে।লাভবান হওয়ায় আরো বেশি উদ্যমী হয়ে উঠে সে।বর্তমানে খামারে ছোট-বড় ৭টি গরু রয়েছে। খামার থেকে দুধ উৎপাদন করে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করে স্থানীয় পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে এই দুধ চাহিদা পূরণ করতে পারছে। তিনি আরো জানান- সরকারী-বেসরকারী ঋণ সহায়তা পেলে নেপালি ফ্রিজিয়ান,জার্সি, শাহিওয়াল ও ব্রাহামা জাতের গরুর খামার করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। এজন্য আরো অধিক জনবল,পর্যাপ্ত ঋণ সহায়তা ও উপযুক্ত জায়গার প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি।তার খামারের গরুর চিকিৎসা সেবার জন্য তিনি জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ করেন।তারাও পরামর্শসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন।আগামীতে সরকারি কিংবা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গরুর খামারটি ব্যাাপকভাবে প্রসারিত করে জেলায় শ্রেষ্ঠ খামার মালিক হওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি। সচেতন লোকজন মনে করেন- পরিশ্রম করলে কোনো কিছুই যে বাধা হতে পারে না তার জ্বলন্ত উদাহরণ তপু।তাকে অনুসরন করে শিক্ষিত যুবকরা যদি বসে না থেকে মূলধন দিয়ে খামার করে সঠিক ভাবে পরিচর্যা করে তাহলে তারাও যেমন লাভবান হবে দেশও উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।