ঝিনাইদহে স্বামীর অধিকারের দাবিতে সন্তানকে নিয়ে স্ত্রীর অবস্থান

প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৯, ২০২০

মোঃ শহিদুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি

ঝিনাইদহ সদর উপজলার উত্তর নারায়নপুর গ্রামের ডা. খাদেমুল হকের ছেলে মেহেদী হাসান বাবুর বাড়ীতে স্ত্রীর স্বীকৃিতির দাবীতে রোকছানা খাতুন ও তার মেয়ে মারিয়া (৯) নিয়ে শুক্রবার থেকে অবস্থান করছে। রোকছানার দাবী তাদের প্রথম বিয়ে ২০০৯ সালের পরই তার পেটে বাচ্ছা থাকা অবস্থায় বাবু তাকে ডিভোর্স দিতে চাপ দেয়।

একপর্যায় চাপের মুখে অসুস্থ অবস্থায় ডিভোর্স পেপারে স্বাক্ষর করে নেয়। এর পর বাচ্ছা হবার পর আবারও প্রেমের সম্পর্ক হলে ২৫শ ডিসম্বর ২০১১ সাল বিবাহ হয়। এরপর শুরু হয় নতুন কাহিনী। এই কাহিনীর মূল রয়েছে ইউপি সদস্য সাগরি খাতুন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাবুর বাড়িতে বাহিরের গেটে ও বাড়ির ভিতরের গেটে তালা দেওয়া। সেখানে তাদেরকে ডাকাডাকি করলে বাড়ির ভাড়াটিয়া পপি এগিয় আসে। তার কাছ রোকছানার কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমরা এই বাড়িত ভাড়া থাকি। গতকাল শুক্রবার এই মহিলা তার সন্তান নিয়ে এই বাড়িতে এসছে। আর বাড়িতে তালা মারার কথা বলেন, এই বাড়ির মালিক ও মহিলা মেম্বর ঘরের গেট ও বাইরে তালা মেরে রেখে গেছে।

এব্যাপারে রোকছানার কাছ জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আমাদর প্রথম প্রেমের সম্পর্ক ছিল।কিন্তূ বাবা মা আমাকে জোরকরে বাড়ি থেকে অন্য জায়গায় বিবাহ দেয়। তারপরও বাবু আমাকে বিভিন্ন ভয়ভিতি দেখিয়ে বলে এই স্বামীকে বাদদিয়ে বাবুকে বিবাহ করত হবে।

এক পর্যায়ে আমি তাকে ডিভোর্স দিয়ে বাবুকে বিবাহ করি। তখন আমার ও তার বাড়ি থেকে কেউ মেনে নেয়না। এরপর সে আমাকে বাড়িতে না নিয়ে
ঝিনাইদহ শহরে ভাড়া বাড়িতে রাখে।

আমি বাড়ি যাবার কথা বললে সে বলে, আমার বাবা মারা যাবার পর আমার মা আবার বিবাহ করেছে তার আলাদা সংসার আছ। আমি যদি তোমাকে এখন বাড়িতে নিয়ে যাই তাহলে আমার মা বাড়ির জমি জায়গা সব আমার বোনদের ও আমার মায়ের নামে নিয়ে নিবে। এই সমস্যা দেখিয়ে সে আমাকে তখন বাড়িতে নেয়নি।

এরপর আমার পেটে যখন বাচ্ছা আসল তার সাথে নতুন করে বিবাদ শুরু হয়। তখন ওর বাড়ির লোক আমি অসুস্থ থাকা অবস্থায় আমাকে দিয়ে ডিভোর্স পেপারে সই করিয়ে নেয়। তখন আমার পরিবার তাদের বিরুদ্ধ মামলা করে। সে মামলায় সে জেলও খেটেছে। এরপর আমার বাচ্ছা হয়।

আমার বাচ্ছা হবার পর সে আবার আমাকে ফোনদিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করে এবং বলে আমি আমার মায়ের কারনে তোমাকে ভুল বুঝছি। মায়ের কারনে আমি জেলও খেটেছি। আমাকে মাফ কর দাও। এরপর আবার ২৫শে ডিসম্বর ২০১১ সাল বিবাহ করি। এরপর থেকে আমাদেরকে ঝিনাইদহ শহর বাসা ভাড়া করে রাখে এবং মাঝে আমার বড় আপাদর বাড়িতও থাকি।

এর মধ্যে সমস্ত নাটের গুরু ওই মহিলা মেম্বর সাগরি।সে চায় না আমরা সুখ শান্তিতে সংসার করি। সে সবসময় আমার বিরুদ্ধ কুটুকথা বলে বেড়ায়। আমি আমার স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে চাই এবং আমার সন্তান তার বাবাকে ফিরে পেতে চায়। আপনারা আমাকে দয়া করুন।

রোকছানার বড় বোন জানান, রোকছানার সাথে বাবুর বিবাহ হবার পর তার পেটে বাচ্ছা আসে। কিছুদিন পর জানিনা কি কারনে কৌশলে ওর কাছ থেকে ডিভোর্স নিয়ে নেয়। এর পর কোর্টে মামলা করে আমার ভাইয়ারা।

তারপর এই সন্তান হলে বাবু আবার তার সাথে যোগাযোগ করে রোকছানাকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে যায় তখন আমি গ্রামের লোকজনের ফোন দিলে তারা যায়, সবাই থেকে বাবুর সাথ আবার ২০১১সাল বিয়ে হয়। আর এখন বাবু আমার বোন ও তার সন্তানকে অস্বীকার করছে। এর একটা সুষ্ঠ বিচার চাই।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য সাগরি খাতুনের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, এই মেয়েটা বাবুকে স্বামী দাবী করছে।কিন্তূ তখন আমরা বলি তাহলে তোমার কাবিন নামা দেখাও তখন সে কাবিন নামা দেখাতে পারিনি। তবে সে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বাবুর চাচা মতিয়ার রহমান জানান, আমার ভাতিজার সাথে এই মেয়ের একবার বিবাহ হয়। তখন তাকে ডিভোর্স দিয় দেয় এবং ৩লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মিমাংসা করা হয়। গতকাল শুক্রবার এই মেয়ে তার সন্তান নিয়ে এসে দাবি করছে বাবু তার স্বামী এবং এই বাচ্ছাটি বাবুর। আসলে আমরা এই কিছুই জানিনা। এখন সে ২০১১ সালর বিবাহর কাবিন নামা দেখাচ্ছে ।

এ নিয়ে কোর্টে মামলা চলমান আছে,যার প্রমাণ রয়েছে,তবে কাগজ পত্র দেখানোর কথা বলে সেগুলো সে আর দেখাতে পারিনি।
এদিকে এলাকাবাসী এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, তাদের দাবী এই শিশু সন্তানের দিকে তাকিয়ে এর একটা সুরাহা হোক।




error: Content is protected !!