আলামিন খান,টাঙ্গাইল।
টাঙ্গাইলে চলমান বন্যায় জেলায় ১৮ হাজার ১২৬ হেক্টর নিমজ্জিত জমির মধ্যে ১৩ হাজার ৮৯২ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ১ লাখ ৭ হাজার ৩৯১ কৃষকের ১৪১ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। জেলার ১২টি উপজেলা ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, মির্জাপুর, নাগরপুর, বাসাইল, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, গোপালপুর, সখীপুর, মধুপুর ও দেলদুয়ারে বন্যার প্রভাব পড়েছে। যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোয় বেশি ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি ও ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি। উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় বোনা আমন ১০ হাজার ৫৮৮ হেক্টর, বোনা আমন বীজতলা ১ হাজার ৩৫৯ হেক্টর, আউশ ১ হাজার ৮০৮ হেক্টর, সবজি ১ হাজার ৪৬৪ হেক্টর, পাট ৭৬৫ হেক্টর, তীল ১ হাজার ৬৫২ হেক্টর, আখ ৬৫ হেক্টর, কলা ৪৫ হেক্টর এবং লেবু ৩৮০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। গত ১১ জুলাই পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে ৫ হাজার ৯২৮ হেক্টর নিমজ্জিত জমির মধ্যে ৩ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতি হয় ২৭ হাজার ২৩৩ কৃষকের ৪১৫৫.০৭ লাখ টাকার। গত ১৩ আগস্ট পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২ হাজার ১৯৮ হেক্টর নিমজ্জিত জমির মধ্যে ১০ হাজার ৫১ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে ৮০ হাজার ১৫৮ কৃষকের ৯৯৭০ লাখ টাকার। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলেন, একদিকে করোনা, অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি বন্যা। দুই মিলিয়ে আমাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হতে হবে আমাদের। কর্মহীন হয়ে অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন।এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর টাঙ্গাইলের উপপরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারিভাবে আর্থিক সাহায্য করা হবে না। তবে পর্যায়ক্রমে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত ৪শ’ কৃষককে বিনামূল্যে চারা, ৪ হাজার কৃষককে মাষকলাইয়ের বীজ ও সার, ৮ হাজার কৃষককে সবজি বীজ, প্রতি উপজেলার ১৬ জন করে কৃষককে মেশিনের সাহায্যে বীজ বপন করে দেয়া হবে। সেই সঙ্গে কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।