কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
মহামারী করোনার ভয়াল থাবায় একটানা দুই বছর কুষ্টিয়া ছেঁউড়িয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের আখড়াবাড়িতে লালন স্মরণোৎসব ও লালন তিরোধান দিবসের সকল উৎসব বন্ধ ছিল। মহামারির সংকট কাটিয়ে এবার দোলপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে লালন স্মরণোৎসব শুরু হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় তিন দিনের লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করেছেন লালন একাডেমি।
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের এই আধ্যাত্মিক বাণীর স্লোগানে ১৫ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ তিন দিন চলবে এ উৎসব। বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালার প্রথম দিনে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার এনডিসি ইসমাইল হোসেন। তিনি ১৫ তারিখ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লালন স্মরণোৎসবের উদ্ধোধন করেন।
উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ও সাবেক উপ-উপাচার্য ড. শাহিনুর রহমান। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক এ্যাডভোকেট লালিম হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন, বিপিএম (বার), কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম, স্থানীয় সরকার কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক (উপসচিব) মৃনাল কান্তি দে, কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ জিপি এ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান মাসুদ, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম মহসিন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কুষ্টিয়া জেলা ইউনিট কমান্ড সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আলহাজ্ব রফিকুল আলম (টুকু), কুষ্টিয়া বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা: এ. এফ. এম আমিনুল হক রতন, কুষ্টিয়া দিশার নির্বাহী পরিচালক রবিউল ইসলাম।
শুভেচ্ছা বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সিরাজুল ইসলাম। স্বাগত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার নেজারত ডেপুটি কালেক্টর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সদস্য সচিব এ্যাডহক কমিটি, লালন একাডেমি সবুজ হাসান।বক্তারা বলেন ‘সাঁইজির যে দর্শন ও তার গভীরতা, সাঁইজিকে লালন করার যে মনোবাসনা শুধু বাংলা ভাষাভাষী নয়, সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে আজ তা বিস্তার লাভ করেছে। প্রথম পর্বের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে লালন মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে লালন সঙ্গীত। উক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের খ্যাতনামা শিল্পী ও লালন একাডেমীর শিল্পিরা গান পরিবেশন করেন।
লালন স্মরণোৎসবকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লালন ভক্তরা উপস্থিত হয়েছেন লালন আখড়া বাড়িতে। সেই সাথে বিদেশি লালন ভক্ত ও পর্যটকরাও এসে প্রাণবন্ত করে তুলেছেন লালন স্মরণোৎসব। উল্লেখ্য, বাংলা ১২৯৭ সালের ১ কার্তিক প্রয়াণ হয় বাউল সম্রাট লালন শাহের। এরপর থেকেই কালিগঙ্গা নদীর তীরে পালিত হয়ে আসছে লালন স্মরণোৎসব।