ত্রিশালে আরএমপি প্রকল্পে ১০ শ্রমিকের চাকুরীর জন্য ৪ লক্ষাধিক টাকা ঘুষ নিয়েছেন কদ্দুছ চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ৬:৫৪ অপরাহ্ণ, জুন ৯, ২০২০

ত্রিশাল সংবাদদাতা :
‘আমরা শ্রমিকের চাকুরীর জন্য ৩/৪ মাস পূর্বে এনজিও থেকে ঋন নিয়ে ও সুদে টাকা ধার করে কদ্দুস চেয়ারম্যানকে দিয়েছি। দুই মাস ধরে রাস্তায় কাজ করে যাচ্ছি কিন্তু কোন বেতন পাচ্ছিনা। একদিকে ঘরে খাবার নেই অপরদিকে টাকার সুদ ও সমিতির কিস্তির চাপ এখন আর সইতে পাচ্ছিনা। এ করোনা বিপর্যয়ের সময় কত মানুষকে দেয়া হচ্ছে সরকারী সাহায্য, আমরা তাও পাচ্ছিনা’।
এভাবেই আবেগজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের সাথে বর্ণনা দিচ্ছিলেন ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নে রুরাল ম্যান্টেনেন্স প্রোগ্রাম (আর.এম.পি) এর আওতায় নিয়োগ দেয়া ১০ জন অসহায় মহিলা শ্রমিক। কথা ছিল প্রত্যেক শ্রমিককে মাসে বেতন দেয়া হবে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। ৪ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের দরিদ্র ও অসহায় শ্রমিকদের কাছ থেকে নেয়া ঘুষের টাকা ফেরতের দাবীও জানিয়েছেন ভ‚ক্তভোগীরা।
জানা গেছে এলজিইডি মন্ত্রনালয়ের অধীনে রুরাল ম্যান্টেনেন্স প্রোগ্রাম (আর.এম.পি) পরিচালিত হচ্ছে।
আরএমপি প্রকল্পের শ্রমিক খাগাটি গ্রামের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী হাফিজা খাতুন জানান, আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন কদ্দুস চেয়ারম্যান।
বাদামিয়া গ্রামের ফারুকের স্ত্রী মিনা আক্তার জানান, গরীব বলেই তো রাস্তার কাজ করতে আসছি। চেয়ারম্যান কদ্দুস ৪ মাস আগে আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে এখনো বেতন দিচ্ছেনা। অনেক কষ্টে টাকা যোগাড় করে দিয়েছি। ঘরে খাবার নেই এখন যে কিভাবে চলব জানিনা।
খাগাটি গ্রামের তাফাজ্জুল ইসলামের স্ত্রী দরিদ্র শ্রমিক ফরিদা খাতুন জানান, আমি ৪০ হাজার টাকা সুদে এনে চেয়ারম্যানকে দিয়েছি।
মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরি খারহর গ্রামের লাল মিয়ার স্ত্রী নার্গিস আক্তার ৪০ হাজার, খাগাটি গ্রামের ফজলুল হকের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন ৪০ হাজার, বাদামিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী খালেদা আক্তার ৫০ হাজার টাকা, জয়দা গ্রামের জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নাজমা আক্তার ৪০ হাজার টাকাসহ মোট ১০ জন শ্রমিক চাকুরীর জন্য কদ্দুস চেয়ারম্যানকে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ১০ নং মঠবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুস মন্ডল বলেন, আমি কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেইনি এবং কাউকে নিয়োগ দেইনি। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস নিয়োগ দিয়েছে তাদের কাছে জেনে নিন।
আরএমপি প্রকল্পের ত্রিশালের তদারকি কর্মকর্তা হরমুজ আলী আকন্দ কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি, তবে তিনি এ বিষয়ে নিউজ না করে তার অফিসে চা খাওয়ার দাওয়াত দেন।
ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।




error: Content is protected !!