দুদকের মামলায় কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম কারাগারে

প্রকাশিত: ৩:৪১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২১

কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।

কুষ্টিয়ায় জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিং’র অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ স্পেশাল জজ আশরাফুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। দুদকের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামকে কারাগারে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক নীল কমল পাল বাদী হয়ে রবিউল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী মোছা: কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৮(২) ও ২৭ (১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা ও দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলায় প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী হাইকোর্ট থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক রবিউল ইসলাম বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ার আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। একই মামলায় আগামী ১৪ নভেম্বর তাঁর স্ত্রীর জামিন শুনানী রয়েছে। এদিকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক মোছা. কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বৃহস্পতিবার আরো একটি মামলা দায়ের করেছেন। কুষ্টিয়ায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। জানা গেছে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর এই দম্পতির জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩৯ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫২ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখাসহ হস্তান্তর-স্থানান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইনে মামলাটি করা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কামরুন্নাহারের স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৯১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯৯ টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে অনুসন্ধানকালে তার গ্রহণযোগ্য আয়- চাকরির বেতন-ভাতা ও রেমিট্যান্স প্রাপ্তি বাবদ ৫২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪৭ টাকা পাওয়া যায়। আর বাকি ৩৯ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫২ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা বলে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তিনি সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

এছাড়া, কামরুন্নাহার আয়কর রিটার্নে পারিবারিক ও দান মিলিয়ে মোট ব্যয়ের হিসাবে ৬৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৯২ টাকা দেখিয়েছেন, যার মধ্যে স্বামীকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ আছে।

এজাহারে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, স্বামী মো. রবিউল ইসলাম তার স্ত্রীর কামরুন্নাহারের সম্পদ অর্জনের প্রদর্শিত বৈধ উৎস ব্যতীত অন্য কোনো আয় না থাকার পরও নিজের ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থকে বৈধ করতে স্ত্রীর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা উপহার গ্রহণের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখতে সহায়তা করেছেন। এই কারণে স্বামী রবিউলকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।




error: Content is protected !!