মোঃ ইউসুফ শেখ, খুলনা প্রতিনিধি
যদি ইচ্ছা থাকে অটুুট সাফল্য নিশ্চিত, প্রতিপাদ্য বিষয়টি সামনে রেখেই যশোরের মনিরামপুরে ঝাপা বাওড়রের উপর নির্মিত এক ঝাক তরুন উদ্দ্যোগতার ফলস্রুতি বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভুমি ঝাপা বাওড় এর উপর নির্মিত, বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু। সেতুটি ২০১৮ সালের শুরুর দিকে যশোরের মনিরামপুর ঝাপা বাওড় এর উপর নির্মান কাজ শুরু করা হয়। মাত্র দুই মাসে, সেতুটির নির্মান কাজ শেষ করা হয়। দিন রাত ২৪ ঘন্টার কঠোর পরিশ্রমের ফসল, স্বপ্নের এই বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু। কপোতাক্ষ নদের শাখা, এই ঝাপা বাওড় এর উপর নির্মিত সেতুটি, ঝাপা গ্রামের ৯নং ওয়ার্ড এবং মোবারাকপুর গ্রামের ১১ নং ওয়ার্ড কে সংযুক্ত করেছে। এ বিষয়ে আমরা সেতু নির্মানকারীর একজন সদস্য মোঃ নজরুল ইসলামের সাথে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেতুটি নির্মানে মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১০ লক্ষ্য টাকা। সেতুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১ কিলোমিটার, সেতুটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ টি বড় আকারের খালি প্লাষ্টিক ড্রাম। বাওড় এর দুই প্রান্তে ৬ মিটার করে ইট, বালু, সিমেন্ট ও খোয়া দ্বারা মোট ১২ মিটার কংক্রিট ঢালায় করা হয়েছে। ভাসমান প্লাষ্টিক ড্রামগুলো কে এমএস এঙ্গেল দ্বারা বেধে রাখা হয়েছে এবং সেতুর উপরে MS প্লেট ও রেলিং এ MS পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। রিক্সা, ভ্যান, ইজিবাইক, মটর বাইক সহ ছোট ধরনের সকল যানবাহন পারাপার এর মাধ্যম এই সেতু, সেই সাথে প্রতিদিন প্রায় ১ থেকে ২ হাজার মানুষের পারাপার এর মাধ্যম এই সেতু । সেতুটি নির্মানে বেশ বেগ পেতে হয় উদ্দ্যোগতাদের। স্থানীয় পর্যায়ে আশানুরুপ সহযোগীতা না পাওয়া তার অন্যতম কারণ ছিল তবে হাল ছাড়েনি উদ্দ্যোগতাগণ। সেতুটি নির্মানকালে হঠাৎ করেই যশোর জেলা প্রাশাসক থেকে সেতু নির্মান কাজ বন্ধকরার জন্য ১০ দিনের নোটিশে চিঠি পাঠানো হয়। উদ্দ্যোগতাগণ তখনও শক্ত হাতে বৈঠা ধরে রাখেন। পরিশেষে ডিসি অফিসের স্বরণাপন্ন হন উদ্দ্যোগতাগণ। ডিসি অফিস থেকে তাদের এই উদ্দ্যোগ কে স্বাগত জানান এবং অনুমতিদেন নির্মান কাজের। নির্মান কাজ শেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেতুটি উদ্ধোধন করেন যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনের সাংসদ স্বপন ভট্টাচার্য, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (LGRD) মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী।সেতুটির মাইল ফলকে চোখ রালেই যে কেউ দেখতে পারবেন ১৪৯ জনের নামের একটি তালিকা তবে ১টি নাম ভুলক্রমে দুইবার লেখার কারনেই ১৪৮ না হয়ে ১৪৯ হয়েছে,। হা ১৪৮ জনের ব্যক্তিগত অর্থয়ানে নির্মান করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুটি। প্রাথমিক অবস্থায় সকল সদস্য ৭০ হাজার টাকা করে অর্থয়ান করেন। পরবর্তীতে আরো অর্থের যোগান দিতে হয় উদ্দ্যোগতাগণের। বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু নির্মানে সভাপতি মোঃ আব্দুল জলিল সরদার ও সম্পাদক মোঃ আশরাফুজ্জামান এবং উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন হাজী আব্দুস সাত্তার, মোঃ জালাল উদ্দিন গোলদার, মোঃ জালাল উদ্দিন সরদার, মোঃ আলাউদ্দিন প্রমুখ।
ভ্রমণ পিয়াসু দের জন্য বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু নজর কাড়বে সকলের নিঃসন্দেহে, তবে আপনি বিমোহিত হবেন যখন দেখবেন পশ্চিম আকাশে রক্তাক্ত সূর্য ঢলে পড়ছে। সেতুটির মাঝে দাড়িয়ে সূর্যস্তের দৃশ্য সত্যই দৃষ্টিন্দন।