নাজমুল হুদা, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল
ইউনিয়নের দাসগ্রামে লোলানপুকুরপাড়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১৭ টি আশ্রয়ণ-২
প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ওই পুকুরপাড়ের দুই পাশে রয়েছে সারিবদ্ধ
তালগাছ। সারি সারি এই তাল গাছের মাঝখানে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরগুলো
নির্মাণ করা হয়েছে। সারিবদ্ধ তালগাছ আর পুকুরের চার পাশে সবুজ মাঠের
নির্মল পরিবেশ ও মুক্ত বাতাস এক ভিন্ন সৌন্দর্য শোভা ছড়াচ্ছে আশ্রয়ণ-২
প্রকল্পের ঘরগুলো। উপজেলার দাসগ্রামের বৃক্ষ প্রেমিক বিপিন চন্দ্র বর্মন নিজ
উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গা থেকে তালবীজ সংগ্রহ করে পুকুরপাড়ের দুই পাশে
রোপণ করেছিলো। এসব তালগাছ বজ্রপাত রোধে যেমন অবদান রাখছে অপরদিকে
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরগুলোর শোভাও বাড়াচ্ছে। বিপিন চন্দ্র বর্মন বলেন, এখন
আমার বয়স প্রায় একশ বছর। মুক্তিযুদ্ধের আগের বছর বিভিন্ন জায়গা থেকে
তালেরআটি সংগ্রহ করে লোলানপুকুরপাড়ে লাগিয়েছিলাম। সেসময় পুকুরপাড়
আমার দখলে ছিলো। ছোট থেকেই আমার গাছগাছালি লাগানো নেশা ছিলো। ওই
সময় পুকুরপাড়ে তালগাছ লাগানোর ইচ্ছা হলো। তাই বিভিন্ন জায়গা থেকে
তালেরআটি এনে ৩৫০ টি গাছ লাগিয়ে ছিলাম। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরে
বসবাসকারী হাসিনা বেওয়া বলেন, শেখ হাসিনার দেওয়া ঘরে আমরা সুখেই
আছি। এখানে তালগাছ থাকার কারণে গরম কম লাগে। মরা ডাল-পাতা দিয়ে রান্না
করা হয়। ইউপি সদস্য শংকর কুমার সরকার বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বজ্রপাত
রোধে তালগাছ খুব উপকারী। তাই বিপিন চন্দ্র বর্মনের মতো আমাদেরও বেশি
বেশি তাল গাছ লাগাতে হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আদনান বাবু বলেন,
উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে বজ্রপাত ঠেকাতে রাস্তা দু’পাশে অনেক
তালবীজ রোপণ করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় ও বজ্রপাত ঠেকাতে তালগাছের জুড়ি
নেই। বিপিন চন্দ্র বর্মনের মতো সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে তালবীজ রোপণ
করলে তালগাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ বজ্রপাত রোধে ভুমিকা রাখবে। উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা শিফা নুসরাত বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ওই পুকুরপাড়ে ১৭
টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পুকুরপাড়ে যাওয়ার জন্য একটি নতুন রাস্তা
নির্মাণ করে দেওয়া হয়। সেখানে আমি অনেকবার গিয়েছি। সত্যই সারি সারি
তালগাছ আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরগুলোর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে।