এম.জহিরুল ইসলাম,ময়মনসিংহ (নান্দাইল) প্রতিনিধি:
‘ মাইনসের বাড়ি বাড়ি কাম করি, যদি দুইলা চাউল বা কিছতা পাই এইডি দিয়া ই চলি। সারা দিন মাইনসের বাড়ি থাকি সমস্যা নাই কিন্তু যহন রাইত অয় তহন ই কারাপ লাগে যে,রাইতে কই তাকবাম? মাইনসের বাড়ি বাড়ি থাকতে শরম লাগে।
মরার আগে যদি একডা ঘর পাইতাম হেই ঘরডাতে আমি মরতাম”
কথা গুলো বলেছিলেন,ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউপির বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের স্ত্রী সাহেদা আক্তার।কথা বলার সময় তার চোখে মুখে ছিলো অসহায়ত্ব আর কষ্টের ছাপ।স্বামী আলতাফ হোসেন ৮ বছর আগে একটা মেয়ে সন্তান রেখে হঠাৎ মারা যান। মারা যাওয়ার পর থেকে ই শাহেদার জীবন যোদ্ধ শুরু হয়।মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে কোন রকম সংসার চালানো সাহেদার দিন এভাবে ভালো কাটলেও হঠাৎ করে তার সতী ছেলে মেয়েদের চক্রান্তের কাছে হেরে সব সম্পত্তি হারাতে হয়। নিজের থাকার যে ভিটা টি ছিলো সেখান থেকে ঘর ভেঙ্গে সেটিকে ও দখলে নিয়ে নেন ছোট সতী ছেলে। যার ফলে তিনি মানুষের বাড়িতে ই রাত্রি যাপন শুরু করেন।ঘর ভেঙ্গে নেওয়ার সময় তিনি প্রতিবাদ করেন যে আমি কোথায় থাকবো?
উত্তর ছিলো, এই বাড়িতে আপনার কোন জায়গা নেই। গণ্যমান্য অনেক ব্যক্তির কাছে দৌড়ঝাঁপ করেন একটা ঘরের জন্যে। কিন্তু কারো মনে দয়া হয় নি এই অসহায় সাহেদার জন্যে।সরকারি একটি ঘরের আশায় অনেক দৌড়াদৌড়ি করে এখন তিনি ক্লান্ত হয়ে হাত পেতেছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে।হয়তো তাদের প্রচেষ্টায় গৃহহীন সাহেদা পেতে পারেন তার আশ্রয়স্থল।
সাহেদার সেই গৃহের জন্যে স্বেচ্ছসেবীরা হাত পেতেছেন সমাজের বিত্তবান আর মানবিক মানুষের কাছে।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা তার বাড়ি পরিদর্শন করতে গিয়ে সতী ছেলেদের কে ভিটা কেড়ে নেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন যে, যদি কোন ঘরের ব্যবস্থা হয় তাহলে আমরা উনার ভিটার ব্যবস্থা করে দিবো।