নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে বকেয়া মেস ভাড়া।
মোঃ জহিরুল ইসলাম,নোবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
করোনা মহামারীতে যেখানে পুরো মানব জাতি হতভম্ব এবং করোনা মোকাবেলা করার জন্য সর্বোচ্ছ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে, সেই ক্লান্তি লগ্নে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তার কারন হয়ে দারিয়েছে বকেয়া মেস ভাড়া পরিশোধ করা নিয়ে।
করোনা ভাইরাস covid 19 এর প্রভাবে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।যার ফলে সকল শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাস, হল এবং মেস ছেড়ে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছে। পরবর্তীতে আবার কবে ক্যাম্পাস খোলা হবে তারও কোন সঠিক দিকনির্দেশনা নেই সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর কাছ থেকে। এর ই মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছে,দেশে করোনা পরিস্থিতির কোন উন্নতি না হলে, প্রয়োজনে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
দেশের এমন দুর্বিষহ অবস্থায় মেস মালিকদের বকেয়া ভাড়া পরিশোধ করা নিয়ে উদ্ধিগ্ন পরিস্থিতিতে রয়েছে নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।তাদের অভিমত হলো আমরা এই দীর্ঘ ছুটিতে কেউ মেসে অবস্থান করছি না,সবাই নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থা করছি,খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিনা পাতি করছি। এরমধ্যে মেস মালিকগন বার বার কল করে ভাড়া পরিশোধ করার জন্য চাপ দিচ্ছে। ভাড়া পরিশোধ করতে না পারলে বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছে।কিন্তু যেখানে আমরা লকডাউন এর কারনে ঘর থেকে বের হতে পারছি না, সে পরিস্থিতিতে কিভাবে আমরা নোয়াখালী যাব?
শিক্ষার্থীরা সকলে তাদের নিজ নিজ ফেসবুক ওয়ালে স্হানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করে, বিভিন্ন ভাবে স্যাস্টাস এবং খোলা চিঠি পোষ্ট করছে।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মেহেরাব হোসেন জানান আমরা আইন বিভাগের ছয়জন শিক্ষার্থী সদর উপজেলার দত্তের হাটে সাত হাজার পাঁচ শত টাকায় ভাড়া নিয়ে একটা মেসে থাকি। মেসের প্রায় সকল সদস্যরা ই কমবেশ টিউশন করে নিজেদের পড়াশোনা এবং অন্যান্য খবর চালাই।তাছাড়া অনেক শিক্ষার্থী আছে, যারা টিউশনের ইনকামের একটা অংশ পরিবারের জন্য বাড়িতে পাঠায়। আমরা মার্চের ১৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর বাড়িতে চলে আসি। এর ই মধ্যে দুই মাসের ভাড়া বকেয়া পড়ে গেছে, বাসার মালিক বার বার ফোন করে ভাড়া পরিশোধ করার জন্য তাগিদ দিচ্ছে। করোনার এমতবস্থা আরো কত দিন চলে তার কোন সঠিক ভাবে বলা মুশকিল । এর ই মধ্যে আমাদের পরিবারের উপার্জনকারী সদস্যদের আয়ের সকল পথ বন্ধ হয়ে গেছে।আমাদেরকে বিভিন্ন ক্রাইসিন পরিস্থিতিতে বেচে থাকতে হচ্ছে। আমরা এখন কিভাবে এত টাকা মেস ভাড়া পরিশোধ করবো?
বিষয়টি জানানো হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর “বাংলাদেশ ট্রিবিউন” কে জানান, এ ব্যাপারে আমরা স্থানীয় প্রশাসন এবং সংসদ সদস্যদের সাথে আলোচনা করেছি। এই সঙ্কটের মধ্যে শিক্ষার্থীদের যেন কোনভাবেই হেনস্তা করা না হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে বাড়িওয়ালার সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কোন বাড়িওয়ালা অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের হেনস্থা করলে তার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সকল শিক্ষার্থীদের দাবি এই বিপদ মহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্হানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করবেন।